প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

পড়তে লাগবে: 3 মিনিট

শিশুদের নিরাপত্তায় হোক নিরাপদ ড্রাইভিং!

‘আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ’, আর তাইতো আমাদের সবার উচিত তাদের নিরাপত্তার দিকটা লক্ষ্য রাখা। ২০১৭ সালে সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রায় ৫৩৯ জন শিশু নিহত হয়েছে! বিষয়টা কতটা দুঃখজনক, ভেবে দেখেছেন? এইসব ভয়াবহ দুর্ঘটনা রোধকল্পে সবার সচেতন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।  যাতে আর কোন শিশুর জীবন যেন অঙ্কুরেই বিনাশ হয়ে না যায়! আশেপাশে শিশুরা থাকলে কিভাবে গাড়ি  চালাতে  হবে, তা ভালভাবে জানতে হবে। মূলত বাচ্চাদের চলাফেরা আগে থেকে অনুমান করা একটু কঠিনই বটে। তারা অনেক বেশি দুরন্ত এবং সবকিছু সেভাবে খেয়াল করে চলে না।  সুতরাং  তাদের  নিরাপত্তার জন্য অধিক সাবধানতা অবলম্বন করে ড্রাইভ করতে হবে। আসুন শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেমন হবে আমাদের নিরাপদ ড্রাইভিং তা একটু দেখে নিই।

গাড়ি বের করার সময় সতর্ক থাকুন

আবাসিক এলাকায় শিশুরা স্কুল ছুটির পর গলির মুখে বা রাস্তায়  খেলাধুলা করে। অনেক সময় সাইকেল  চালায় বা দৌড়াদৌড়ি  করে। সেজন্য  সেক্ষেত্রে  নজর  রেখে চলতে  হবে। গ্যারেজ থেকে গাড়ি বের করার সময় কিংবা পার্ক করার সময় সাবধান থাকুন।  যেহেতু  বাচ্চারা  তাদের বাসার  সামনেই খেলাধুলা  করে  থাকে, সেহেতু তারা আপনার গাড়ি নাও খেয়াল করতে পারে। তাই, গাড়ি বের করার সময় যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করে চলতে চেষ্টা করুন। এছাড়াও গাড়ি  পিছনে নেয়ার সময় সতর্ক থাকুন। কারণ  হয়তো গাড়ির পিছনে শিশুরা খেলতে পারে,  আর কিছু ক্ষেত্রে ছোট বাচ্চা  মিরর  দিয়ে নাও দেখা যেতে  পারে। তাই গাড়ি চালানোর  আগে সামনে-পিছনে ভালোভাবে  দেখে  নেয়া  উচিত।  যদি গাড়িতে ব্যাক ক্যামেরা থাকে, তবে তা অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে।

গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে রাখুন

অনেক ক্ষেত্রে স্কুলগামী শিশুরা  ঝুঁকি নিয়ে দুই গাড়ির মাঝখান দিয়ে রাস্তা  পার হয়!  তখন যতক্ষণ পর্যন্ত না  তারা  রাস্তা  পার  হচ্ছে,  ততক্ষণ  আস্তে  আস্তে ড্রাইভ  করুন কিংবা গাড়ি থামিয়ে দিন। বিপদে পড়লে একটি শিশু হয়তো সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে পারে। কিন্তু আপনি তো বিচক্ষণতারসাথেই যেকোন পরিস্থিতিরই মোকাবেলা করতে পারবেন। সুতরাং কারো জীবন বাঁচানোর জন্য যেন আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টাটাই অব্যাহত থাকে।

আশেপাশে বাচ্চারা আছে কিনা তা খেয়াল করুন

আপনার গাড়ির আশেপাশে বাচ্চা-কাচ্চা থাকলে অধিক সাবধানতা অবলম্বন করে চলতে হবে। মূলত যেসময় শিশুরা রাস্তায় বেশি চলাচল করে, বিশেষ  করে  স্কুল ছুটি হওয়ার  সময়গুলোতে  খেয়াল করে  গাড়ি  চালানো  উচিত। এছাড়াও  ছুটির  দিনে বিনোদন  পার্ক, জাদুঘর কিংবা শপিং মলগুলোর কাছাকাছি সাবধানে গাড়ি চালানো উচিত। মূলত বিনোদন পার্কগুলোর সামনে রাস্তায় জ্যামে আটকে থাকা গাড়ি একটা আরেকটার সাথে প্রায় ঘেঁষে দাড়ায়। আবার বাস ট্রাকগুলো অনেক উঁচু হওয়ায়, সামনের পার হওয়া কোন শিশুকে ড্রাইভার নাও দেখতে পারেন। যার ফলে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে দিলে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। তাই, জ্যামের পর গাড়ি  স্টার্ট দেওয়ার সময় একটু ভালভাবে খেয়াল করে দেখুন, যে সামনে কেউ আছে কিনা।

স্কুলগুলোর সামনে সতর্ক থাকুন

স্কুলগুলোর সামনে  এক্সট্রা  সতর্ক  হয়ে  চলুন। স্কুল  জোনগুলোতে স্পিড লিমিট মেনে চলুন। স্কুলগুলোর  রোডগুলোতে  সাধারণত  স্পিড  লিমিট  সংক্রান্ত সতর্কতা  থাকে। কারণ  বাচ্চারা   রাস্তায়  না  থাকলেও,  যেকোন  সময়  দৌড়  দিয়ে  রাস্তায়  চলে  আসতে পারে। স্কুল  জোন  পার  হতে গিয়ে এক মুহূর্তের জন্যও ফোকাস  হারাবেন না। কারণ স্কুলের বাইরে শিক্ষার্থীরা হুটহাট করে বের হতে পারে। বিশেষ করে আশেপাশের রেস্তোরাগুলোতেও তারা খেতে যেতে পারে। যদি  কোন  স্কুল  বাস  দাঁড় করানো  দেখেন,  তবে  খুব  সাবধানে  তার  কাছ  দিয়ে  যাবেন।  এমনকি বাস ছেড়ে দেয়ার  পরও  সাবধানে  যাবেন,  কারণ  তখনও হয়তো হঠাৎ করে কোন বাচ্চা এসে বাসের উদ্দেশ্য দৌড় দিতে পারে।

পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে ড্রাইভ করুন

মূলত যেসব  রাস্তায়  সাইড  ওয়ার্ক বা চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত স্পেস নেই।  সেসব রাস্তায়  গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে একটু বেশি মনোযোগী হতে হবে। ২০১৭ সালের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রায় ৪২ শতাংশই পথচারী। অনেকসময় শিশুরা এলোমেলো  ভাবে  রাস্তার  ধার  দিয়ে  হাটতে  পরে, তাই  সাবধান  হয়ে চলা  জরুরি। ড্রাইভ  করার  সময়  যখন গাড়ির কাছাকাছি কোন বাচ্চাকে দেখবেন, তখন অবশ্যই  চোখ-কান  খোলা  রেখে চলবেন। এমনকি  রেডিও  স্টেশনের  চ্যানেল চেঞ্জ করার সময়টুকুও  ডেঞ্জারাস  কোন  ঘটনার  কারণ  হতে  পারে।  সেজন্য  এই সময়  ড্রাইভিংয়ে পূর্ণ মনোযোগ ধরে রাখা দরকার।

সবসময় সতর্কতা অবলম্বন করে নিরাপদ ভাবে ড্রাইভিং করার চেষ্টা করতে হবে।  বিশেষ করে আবাসিক এলাকা কিংবা স্কুলগুলোর সামনে অথবা যেসব জায়গায় বাচ্চারা থাকতে পারে, সেইসব জায়গায় খুব সাবধানে গাড়ি চালাতে হবে। আপনি আপনার জায়গা থেকে সচেতন থাকুন এবং অন্যদেরকেও সচেতন করুন। নিরাপদ ড্রাইভিংয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত করুন সবার নিরাপত্তা। শিশুদের নিরাপদ রাখার জন্য তাদের রাস্তায় চলাচলের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে সঠিক ধারনা দিন। ‘প্রহরী’র পক্ষ থেকে শুভকামনা রইলো প্রতিটি শিশুর শৈশব হোক নিরাপদ এবং আনন্দময়! 

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top