গাড়ি সতর্কভাবে চালানো উচিত, কারণ এর সাথে অনেক মানুষের জীবন জড়িয়ে থাকে। চালকের একটু অসতর্কতা কেড়ে নিতে পারে হাজারো জীবন। আর তাই তো রাস্তায় সাবধানে গাড়ি চালানো দরকার। কিছু টিপস মেনে চললে Safe Driving অনেকাংশেই সহজ হয়ে যায়। আসুন দেখে নেয়া যাক নিরাপদে ড্রাইভিং করার কিছু টিপস।
মনোযোগ দিয়ে গাড়ি চালানো
গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল চালানো, খাবার খাওয়া, ধূমপান করা ইত্যাদি এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এগুলো রাস্তা থেকে পূর্ণ মনোযোগ সরিয়ে নেয়। আর যেটা কোন দুর্ঘটনার কারন হতে পারে। গাড়ি চালানোর সময় সাথে বাচ্চা থাকলে সতর্ক হওয়া উচিা। কারণ বাচ্চারা মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। গাড়ি চালানোর সময় ঘুম ঘুম ভাব বিশেষ করে রাতের বেলা খুবই বিপদজনক। এক্ষেত্রে রাত্রে একটা ভালো ঘুম খুব উপকারী। যেসব ওষুধ খেলে ঘুম বেশি হয়, সেসব ওষুধের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ঠিক আছে কিনা পরীক্ষা করে নেয়া
গাড়ি চালানোর আগে গাড়ীর বিভিন্ন পার্টস ঠিক আছে কিনা পরীক্ষা করে নেয়া। যেমনঃ গাড়ির হ্যান্ড ব্রেক ঠিক মতো কাজ করছে কিনা, রেডিয়েটরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি আছে কিনা, হর্ন ঠিকমত বাজে কিনা, গাড়ীর চাকায় হাওয়া আছে কিনা ইত্যাদি পরীক্ষা করে নেওয়া। এছাড়াও এক্সিলেটর প্যাডেল, ব্রেক প্যাডেল, স্টিয়ারিং হুইল, ওয়াইপার সুইচ ঠিক আছে কিনা তা চেক করে দেখতে হবে।
সিট বেল্ট বাঁধা ও উইন্ড স্ক্রিন পরিস্কার করা
গাড়ি চালানোর সময় সিট বেল্ট বাঁধা খুব জরুরী। সিট বেল্ট বাঁধা থাকলে যে কোনো দুর্ঘটনায় যাত্রীর হাড়গোড়, মাথা বড় ধরনের আঘাত থেকে বেঁচে যেতে পারে। এছাড়াও কারের সামনের উইন্ড স্ক্রিন গ্লাস পরিস্কার করে নিতে হবে। যাতে সামনের রাস্তা পরিস্কার ভাবে দেখা যায়।
ড্রাইভ করার সময় শান্ত থাকা
গাড়ি চালানোর সময় শান্ত থাকা জরুরী। অন্য ড্রাইভারদের কোনভাবে উত্তেজিত করা থেকে বিরত থাকা উচিত। যদি অন্য কোন ড্রাইভার ইচ্ছামূলক ভাবে অগ্রহণযোগ্য আচরণ করে তাও এড়িয়ে চলা দরকার। এবং বিপরীত দিক থেকে আসা কারকে সংকেত দেওয়ার জন্য ডিপার সুইচ ব্যবহার করা উচিত।
গতিসীমা নির্ধারণ করা
গাড়ি চালানোর সময় গাড়ির গতিসীমা লক্ষ্য রাখা উচিত। যতো বেশি গতিসীমা ততো বেশি দুর্ঘটনা ঘটার সুযোগ থাকে। দ্রুত গাড়ি চালিয়ে হয়তো খুব দ্রুত কোথাও যাওয়া যাবে। কিন্তু সেটা দুর্ঘটনার সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দেবে। তাই কোথাও আগে যেতে চাইলে গাড়ির গতি না বাড়িয়ে বরং আগে রওয়ানা দেয়া উচিত। এছাড়াও আপনি যদি Vehicle Tracker ব্যবহার করে থাকেন। তবে স্পিড ভায়োলেশন এলার্টের মাধ্যমে গাড়ির গতিসীমা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
খারাপ আবহাওয়ায় সতর্ক থাকা
আবহাওয়া খারাপ থাকলে, যেমন বৃষ্টি, ঝড়, কুয়াশা ইত্যাদি থাকলে গাড়ি চালানোর সময় বেশি সতর্ক থাকা উচিত। এই সময় গাড়ির লাইট জ্বালিয়ে রাখা উচিত। যা দুর্ঘটনা ঘটার হাত থেকে বাঁচতে সাহায্য করবে। যদি গাড়ির অবস্থা খারাপ থাকে তাহলে স্বাভাবিক থেকে আস্তে আস্তে গাড়ি চালানো উচিত।
অন্য ড্রাইভারদের ব্যাপারে সতর্ক থাকা
গাড়ি চালানোর সময় এটা মাথায় রাখা উচিত যে, অন্য ড্রাইভাররা আপনার মতো নিয়মতান্ত্রিক নাও হতে পারে। তাই সব সময় চারপাশের অবস্থা সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। ট্রাফিক সিগন্যাল, গাড়ির সঠিক লেন ইত্যাদি মেনে গাড়ি চালানো উচিত। আর একটু সতর্ক থাকলেই যে কোন বড় দুর্ঘটনা এড়িয়ে যেতে পারবেন।
ইনডিকেটর ব্যবহার করা
গাড়ি টার্ন করার সময় ইনডিকেটর ব্যবহার করা উচিত। এতে অন্য গাড়ির ড্রাইভার বুঝতে পারবে আপনি কী করতে চাচ্ছেন। এছাড়াও ড্রাইভিং মিরর ঠিক করে নেয়া যাতে পিছনের গাড়ি এবং রাস্তা ঠিক মত দেখতে পাওয়া যায়।
গাড়ি চালানোর সময় নেশা জাতীয় বস্তু থেকে দূরে থাকা
নেশা জাতীয় জিনিস আপনার বিবেচনা বোধ কমিয়ে দেয় এবং আপনার বোঝার ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। আরও ভয়াবভহ ব্যাপার হল, মাদকদ্রব্য দৃষ্টি অস্পষ্ট করে দেয়, আর তাইতো যে কোনো মাদক দ্রব্য থেকে দূরে থাকা উচিত বিশেষ করে গাড়ি চালানোর সময়। তাছাড়াও মাদকদ্রব্য সেবন করে গাড়ি চালানো দণ্ডনীয় অপরাধ।
ফুয়েলের পরিমাণ পরীক্ষা করা
ভ্রমণের সময় যাতে হঠাৎ করে ফুয়েল শেষ হয়ে গাড়ি বন্ধ না হয়ে যায়, সেজন্য গাড়ি চালানোর আগে পরীক্ষা করে নিন গাড়িতে কতটুকু ফুয়েল আছে। প্রহরী ভেইকেল ট্র্যাকারের ফুয়েল মনিটরিং ফিচারের মাধ্যমে জেনে নিন কতটুকু ফুয়েল খরচ হয়েছে এবং কতটুকু অবশিষ্ট আছে।