প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

পড়তে লাগবে: 4 মিনিট

সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে যেসব কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন (পর্ব-২)

একেকটি সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নেয় হাজারো স্বপ্ন। ভয়াল এক্সিডেন্টের করাল থাবায় ধ্বংস হয়ে যায় অনেক পরিবার। সাময়িক ভুলে যখন অনেক সম্ভাবনাময় জীবন ঝরে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। তখন সেই অপূরণীয় ক্ষতি কিন্তু কোন কিছুর বিনিময়েই শোধরানো যায় না। অমূল্য জীবন একবার চলে গেলে আর কিছুই করার সুযোগ থাকে না। তাই সময় থাকতে নিয়ম-কানুন মেনে নিরাপদ ড্রাইভিং করতে সচেষ্ট হোন। দুর্ঘটনা এড়াতে কিছু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে চললে, আশা করা যায় তা আপনাকে নিরাপদ ড্রাইভিংয়ের নিশ্চয়তা দিবে।

গাড়ির সমস্যাগুলো সমাধান করুন

ড্রাইভিং করার সময় গাড়ির যেসব সমস্যা আপনি ফেস করেন, তা দ্রুত সমাধান করতে ট্রাই করুন। গাড়ির উইন্ডো প্যান, সুইচ প্যানেল ইত্যাদি নিয়মিত পরিষ্কার করতে চেষ্টা করুন। এছাড়াও গাড়িতে যদি ব্রেকিং সিস্টেমের সমস্যা থাকে কিংবা এক্সহাস্ট পাইপ থেকে কালো ধোঁয়া বের হয়, তাহলে তা দ্রুত ঠিক করে ফেলুন। সবার নিরাপত্তার জন্যই গাড়ির যেকোন ধরনের টেকনিক্যাল সমস্যা থাকলে, তা ভাল কোন সার্ভিসিং সেন্টারে গিয়ে ঠিক করিয়ে ফেলা উচিত।

চারপাশে সতর্ক দৃষ্টি রাখুন

আপনার আশেপাশের সবকিছু এবং রাস্থা-ঘাটের দিকে ভালভাবে নজরে রেখে চলতে চেষ্টা করুন। পথচারী, রাস্থার অবস্থা এবং অন্যান্য গাড়ি বিবেচনায় নিয়ে দেখে শুনে ড্রাইভিং করলে অনেকটাই নিরাপদে থাকবেন। এছাড়াও আরেকটি বিষয় খেয়াল করুন সেটা হচ্ছে কখনোই টানা ড্রাইভিং করবেন না। একটানা গাড়ি চালিয়ে আপনি হয়তো অনেক বেশি ক্লান্ত হয়ে যাবেন। এবং পরবর্তী ট্রিপে যাওয়ার মতো এনার্জি নাও থাকতে পারে, তাই অযথা রিস্ক নেওয়াটাই উচিত হবে না। আপনার একটুখানি সাবধানতা এবং সতর্ক পদক্ষেপ যেকোন সময় দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচিয়ে দিবে। তাই সময় থাকতে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করে চলতে চেষ্টা করুন।

অমনোযোগী হবেন না

আপনি যখন একটি গাড়ি চালান, তখন মূলত উপস্থিত সব যাত্রীর জীবনের ভারও আপনার কাঁধেই বর্তায়। সেখানে আপনার নিজের এবং অন্য সবার নিরাপত্তার জন্য মনোযোগী হয়ে ড্রাইভিং করা উচিত। আপনার সামান্য অমনোযোগিতার কারণেও বিপদ চলে আসতে পারে। তাই গাড়িতে বসে খাওয়া-দাওয়া, ধূমপান করা, মোবাইলে কথা বলা সহ যেকোনো ধরনের কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। সবসময় পুরোটা মনোযোগ গাড়ি চালানোয় দেয়ার চেষ্টা করুন। এছাড়াও গাড়ি চালানোর সময় সাথে বাচ্চা-কাচ্চা থাকলে অধিক সতর্ক হয়ে চলুন। কারণ শিশুরা আপনার মনোযোগে বিঘ্ন ঘটাতে পারে।

খারাপ আবহাওয়ায় অধিক সতর্ক থাকুন

খারাপ আবহাওয়ায় গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকতে পারলে ভাল হয়। অতিরিক্ত ঝড়, বৃষ্টি, কুয়াশা ইত্যাদির সময় গাড়ি চালানো রিস্কের ব্যাপার। এই অবস্থায় ড্রাইভিংয়ের সময় হেডলাইটগুলো অন করে রাখতে হবে, যাতে অন্যরা সহজেই আপনাকে দেখতে পায়। সবসময় গাড়ির উইন্ড শিল্ড পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখতে চেষ্টা করুন। খেয়াল করে দেখুন, গাড়ির  উইপারগুলো  কার্যকর আছে কি না। আর ভেঙে  যাওয়া এবং ক্র্যাক হওয়া উইপারগুলো যথা দ্রুত সম্ভব চেঞ্জ করে ফেলতে ট্রাই করুন।

রাত্রিকালীন ড্রাইভিং থেকে বিরত থাকুন

অধিকাংশ দুর্ঘটনা রাতে ঘটে, কারণ রাতে চোখে কম দেখা যায়। আবার অনেক ড্রাইভার টানা গাড়ি চালিয়ে ক্লান্ত থাকেন। ফলে গাড়ি চালানোর মতো পর্যাপ্ত এনার্জি থাকে না, কিংবা ক্লান্তিতে ঘুম আসে। তাই আপনি যখন খুব বেশি ক্লান্ত এবং ঘুমে আক্রান্ত, তখন ড্রাইভিং করা থেকে বিরত থাকুন।  আবার ক্ষেত্র বিশেষে রাতের বেলা কোন কোন মাতাল ড্রাইভাররাও বিপদজনক ভাবে ড্রাইভিং করে বিপদ ডেকে আনে। তাই জরুরী প্রয়োজন ছাড়া রাতে যথাসম্ভব গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকতে পারলেই ভাল হয়।

নেশা জাতীয় কিছু গ্রহণ করবেন না

মাদকদ্রব্য সেবন করে গাড়ি চালানো দণ্ডনীয় অপরাধ। অ্যালকোহল গ্রহণ করলে বিবেচনা বোধ কমে যায় এবং বোঝার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও মাদক দৃষ্টি অস্পষ্ট করে দেয়। তাই, গাড়ি চালানোর সময় কখনোই মাদক নিবেন না। এমনকি একটা বিয়ারও গাড়ি চালানোর সামর্থ্য অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে। সুতরাং এক্ষেত্রে যথেষ্ট সাবধান থাকা দরকার। এছাড়াও মাদকাসক্ত কাউকে কখনোই গাড়ি চালানোর দায়িত্ব দেওয়াটা উচিত নয়।

অসুস্থ অবস্থায় গাড়ি চালাবেন না

অসুস্থ অবস্থায় কখনোই গাড়ি চালাবেন না। সেসময় সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করে আগে সুস্থ হয়ে নিন। অন্যদের নিরাপদে রাখার দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে, আপনার নিজের ভাল থাকার অনেক দরকার আছে। অসুস্থ অবস্থায় রিস্ক নিয়ে ড্রাইভ করলে, এক্সিডেন্টের ঝুঁকি অনেক বেশি বেড়ে যায়। অনেক সময় কিছু কিছু মেডিসিনের ইফেক্টে বেশি ঘুম পায়। সেজন্য সেই টাইপের কোন ওষুধ গ্রহণ করলে, গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকা উচিত।

জরুরী অবস্থায় মাথা ঠাণ্ডা রাখুন

গাড়ি চালানোর সময় অনেক ঘটনাই ঘটতে পারে। যেকোন মুহূর্তেই বিভিন্ন টাইপের বিপদের সম্মুখীন হতে পারেন। সেসময় অস্থির না হয়ে, বরং মাথা ঠাণ্ডা রাখতে চেষ্টা করুন। আপনার প্রবল মনোবল আর সাহসী মনোভাব আপনাকে যেকোন বিপদ মোকাবেলা করার পর্যাপ্ত সাহস এবং শক্তি জোগাবে। আর সবসময় সচেতন থাকুন এবং জরুরী অবস্থায় কোথা থেকে সাহায্য পাবেন তা জেনে রাখুন। এবং প্রয়োজনীয় নাম্বার সমূহ সংগ্রহে রাখতে চেষ্টা করুন এবং জরুরী পরিস্থিতিতে ৯৯৯ নাম্বারে কল করে হেল্প নিন।

আসুন স্বজনহারা কোন মানুষের নীরব কষ্টের কারণ যেন আমরা কেউ না হই। আর তাইতো যার যার নিজ অবস্থান থেকে সচেতন হয়ে, অধিক সাবধানতা অবলম্বন করে চলার চেষ্টাটা অন্তত করি। সেক্ষেত্রে সেফ ড্রাইভিং করে নিজের এবং অন্যের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট ভূমিকা পালন করি। প্রহরীর পক্ষ থেকে শুভাশিস রইল, আপনাদের সবার পথচলা হোক নিরাপদ এবং নির্বিঘ্ন

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top