প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

পড়তে লাগবে: 3 মিনিট

সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে যে বিষয়গুলো অবশ্যই খেয়াল করবেন (পর্ব-১)

দুর্ঘটনা ছোট্ট একটি শব্দ, কিন্তু এর বিভীষিকা অনেক বেশি। একেকটি এক্সিডেন্ট কেড়ে নেয় হাজারো জীবন, বেঁচে থাকার স্বপ্ন। দুর্ঘটনায় পরে ধ্বংস হয়ে যায় অনেক অমূল্য জীবন, হাজারো সম্ভাবনা। বলতে গেলে গাড়ি দুর্ঘটনা এখন নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থা থেকে বাঁচতে হলে গাড়ি চালানোর সময় কিছু বিষয় মেনে এবং কিছু ক্ষেত্রে সতর্ক হয়ে চলতে হবে। মূলত আপনার একটুখানি সতর্কতা এবং সেফ ড্রাইভিংই পারে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। আসুন কিছু বিষয় দেখে নিই, যা আপনাকে নিরাপদ ড্রাইভিংয়ের নিশ্চয়তা দিবে।

গাড়ির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা  

নিয়মিত গাড়ির দেখভাল করলে এবং যত্ন নিলে যেকোন ধরনের টেকনিক্যাল ভুল হওয়ার চান্স কমে যাবে। গাড়ি চালানোর আগে গাড়ির বিভিন্ন পার্টস ঠিক আছে কিনা, তা পরীক্ষা করে নেয়া উচিত। কারের হ্যান্ড ব্রেক চেক করে দেখুন, রেডিয়েটরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি আছে কিনা, গাড়ীর চাকায় হাওয়া আছে কিনা, হর্ন ঠিকমত বাজে কিনা ইত্যাদি পরীক্ষা করে নিন। গাড়ির টায়ার ইনফ্লাটেড রাখতে চেষ্টা করুন, এতে  গাড়ির  ক্রাশ  খাবার চান্স  ২৫%  কমে  যাবে। এছাড়াও এক্সিলেটর প্যাডেল, ব্রেক প্যাডেল, স্টিয়ারিং হুইল, ওয়াইপার সুইচ ঠিক আছে কিনা তাও চেক করে দেখা দরকার। এসব দিকে খেয়াল রাখলে আপনার গাড়ির এক্সিডেন্ট  হওয়ার  চান্স অনেকটাই কমে যাবে।

উইনশিল্ড এবং মিরর পরিষ্কার রাখা

সবসময় গাড়ির উইন্ডশিল্ড এবং মিরর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। এতে আপনি ভালোভাবে সামনের গাড়ি বা বস্তু  দেখতে পাবেন, যা দুর্ঘটনা থেকে  বাঁচাবে। নিয়মিত  উইন্ডশিল্ডের  উইপার চেঞ্জ  করুন। কারণ আপনি  যেকোন  সময়  খারাপ  আবহাওয়ায়  পড়তে  পারেন। তখন উইপারস কাজ  না  করলে  বিপদে  পড়বেন। এছাড়াও গাড়ি টার্ন করার সময় ইনডিকেটর ব্যবহার করুন। এর ফলে অন্য গাড়ির ড্রাইভার বুঝতে পারবে আপনি কী করতে চাচ্ছেন। এছাড়াও ড্রাইভিং মিরর ঠিক করে নেয়া দরকার, যাতে পিছনের গাড়ি এবং রাস্তা ঠিক মত দেখতে পাওয়া যায়।

গাড়ির গতি কমিয়ে দেওয়া

সবসময়ই গাড়ির গতি কমিয়ে চললে অনেকটা নিরাপদে থাকা যায়। ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে অন্য গাড়ির সাথে প্রতিযোগিতা করে ড্রাইভিং করা উচিত নয়। এর ফলে এক্সিডেন্টের রিস্ক অনেক বেশি বেড়ে যায়। আর কারের স্পিড  কমিয়ে  দিলে  এক্সিডেন্ট  ঘটার  মুহূর্তে  বেশি  সময় হাতে  পাওয়া  যায়, ফলে  তা  থেকে  বেঁচে যেতেও পারেন। কিন্তু গাড়ি খুব দ্রুত গতিতে  চললে, তা এড়ানো সম্ভবপর হয় না। আপনার গাড়ির নির্দিষ্ট গতিসীমা সেট করে রাখুন। আর যদি তা লঙ্ঘন হয়, তবে প্রহরীর স্পিড ভায়োলেশন ফিচারের মাধ্যমে তা জানতে পারবেন

নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা

ড্রাইভিং করার সময় অন্য  গাড়ি  থেকে দূরত্ব  বজায়  রাখলে ভাল হয়। যতই আস্তে চালান না কেন, সামনের  ভেইকেল থেকে  কমপক্ষে ৩ সেকেন্ডের দূরত্ব রাখা প্রয়োজন। এর  থেকে  কম  ডিসটেন্স রাখলে বিপদ ঘটার সম্ভাবনা আছে। কারণ যখন  সামনের  গাড়ি  ব্রেক  করবে, তখন হয়তো আপনিও সময়মতো ব্রেক করতে ব্যর্থ হতে পারেন। সবসময় মনোযোগের সহিত দুই  হাত  দিয়ে গাড়ি চালানো দরকার। দুই হাত স্টিয়ারিংয়ের উপর থাকলে গাড়ির উপর আপনার  কন্ট্রোল অনেক  বেশি  থাকবে। আপনার হাত  ১০ o’ ক্লক  এবং  ১২ o’ ক্লক  অবস্থানে রাখুন। মূলত এই পজিশনটা সবচেয়ে বেশি ফ্লেক্সিবল। এছাড়াও নির্দিষ্ট লেন মেনে গাড়ি চালানো উচিত। এতে ট্রাফিক জ্যাম সৃষ্টি হয় না এবং  দুর্ঘটনার হারও কমে যায়।

ট্র্যাফিক সিগন্যাল মেনে চলা

ট্রাফিক সিগন্যাল মেনে গাড়ি চালালে আর একটু সতর্ক থাকলেই যে কোন বড় দুর্ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া যায়। তাই সবসময় ট্র্যাফিক সিগন্যাল মেনে চলতে চেষ্টা করুন। এবং ঠিকমতো গাড়ির সিগন্যাল ব্যবহার করুন, এমনকি কেউ না থাকলেও। হাইওয়েতে লেন চেঞ্জ করার সময়, একটু আগে থেকেই সিগন্যাল দিতে থাকুন। এছাড়াও ইন্টারসেকশনের কাছে লেন পরিবর্তন করতে গেলে যানজট কিংবা এক্সিডেন্ট ঘটে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। আর তাই ইন্টারসেকশনের কাছাকাছি কিংবা মাঝে লেন পরিবর্তন করার চেষ্টা করাটাও কিন্তু বিপদজনক এবং অনুচিত।

ড্রাইভিংয়ের সময় সিট বেল্ট বাঁধা

দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে গাড়ি চালানোর সময় অবশ্যই সীট বেল্ট পড়া দরকার। সিট বেল্ট বাঁধা থাকলে যে কোন এক্সিডেন্টে বড় ধরণের আঘাত থেকে বেঁচে যেতে পারবেন। এছাড়াও ড্রাইভিংয়ের সময় আপনার সামনের দিকে দৃষ্টি প্রসারিত করুন। অযথা গাড়ির পিছনে  তাকানোর দরকার নেই। সেক্ষেত্রে বরং  চোখ  সাইড ভিউ মিররে, রিয়ার  ভিউ  মিররে এবং  সামনে  রাখুন। মূলত  যেখানে  আপনি  ১০-১৫  সেকেন্ড  পর  হাজির  হবেন।

সতর্কতার সাথে গাড়ি পার্ক করা

অনেকসময় পার্কিং  লটেও  অনেক  ছোটখাটো  দুর্ঘটনা  ঘটে যায়। বিশেষ  করে  গাড়ি  রাখার  সময়  এবং  গাড়ি  নিয়ে  বের  হওয়ার  সময়। সেজন্য পার্ক করার সময় সাবধানে মনোযোগের সাথে চারপাশে লক্ষ্য রেখে, ধীরে ধীরে  ড্রাইভ  করে  গাড়ি  পার্ক  করুন।  যদি হঠাৎ  করে  গাড়ি  থামাতে হয়, সেক্ষেত্রেও  প্রস্তুত  থাকুন। যেকোন সময় অন্য কোনও গাড়ি অথবা মানুষজন  সামনে চলে আসলে এক্সিডেন্ট হতে পারে। সুতরাং সেদিকে যথেষ্ট সতর্ক দৃষ্টি রাখতে ট্রাই করুন।

সবসময় সচেতন হয়ে সাবধানে চললে, দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। আপনি আপনার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলার জন্য। একেকটি এক্সিডেন্টে যারা স্বজন হারায়,  তাদের সেই কষ্টের কারণ যেন আমরা কেউই না হই! আর তাইতো আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা থাকুক সচেতন হয়ে সতর্ক পদক্ষেপ নিয়ে চলতে এবং দুর্ঘটনা রোধে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top