কথায় আছে, “মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়!” কথাটি ধ্রুব সত্য, কী বিশ্বাস হচ্ছে না? আসুন তাহলে এমন একজন মানুষের স্বপ্নকে শক্তিতে পরিণত করে বিশ্বজয়ী হওয়ার গল্পটা শুনি। এই গল্পের নায়ক রূপকথার কোন চরিত্র নয়, বরং রক্ত মাংসের গড়া এক সাধারণ মানব সন্তান। যিনি তার কর্মের মাধ্যমে হয়েছিলেন বিশ্বসেরা! আর এই মানুষটি আর কেউ না অটোমোবাইল সাম্রাজ্যের বরপুত্র “সইচিরো হোন্ডা!” হোন্ডা কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা এবং মোটর সাইকেলের তৈরিকারক হিসেবে পুরো পৃথিবীর মানুষ যাকে এক নামে চিনে। আজ যখন রাস্তায় যেকোন ব্র্যান্ডের মোটর সাইকেল দেখলেই যে কেউ হোন্ডা বলে অবহিত করে, আসলে সেই হোন্ডা নামটি কিংবা বাইকটি যে মানুষটির মাধ্যমে পুরো বিশ্ববাসী চিনেছেন, তিনি মূলত এই লড়াকু মেধাবী মানুষটাই। আজকের আয়োজনে সইচিরো হোন্ডার উত্থান-পতনের রোমাঞ্চকর বর্ণিল জীবনের গল্পটি শুনবো।
সইচিরো হোন্ডার প্রাথমিক জীবন
সূর্যোদয়ের দেশ জাপানের ফুজি পাহাড়ের নিচে ছোট্ট একটি গ্রামে ১৯০৬ সালের ১৭ই নভেম্বর সইচিরো হোন্ডা জম্মগ্রহন করেন। তার বাবা পেশায় ছিলেন কামার আর মা ছিলেন তাতি। শৈশবে ছোট্ট সইচিরো তার বাবার সাইকেল মেরামতের কাজে সহায়তা করতেন। মূলত তিনি ছোটবেলা থেকেই যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করতেন। দুরন্ত হোন্ডার স্কুলের গৎবাঁধা নিয়ম-কানুন তেমন একটা ভাল লাগতো না। সেই সময়ে একটা নিয়ম ছিল, স্কুলে কেউ খারাপ রেজাল্ট করলে তাদের রিপোর্ট কার্ড অভিভাবকদের কাছে পাঠানো হতো। যাতে স্টুডেন্টদের অভিভাবক তা দেখেন এবং পারিবারিক সিল মেরে স্কুলে ফেরত পাঠান। হোন্ডা এই রিপোর্ট কার্ডের প্যারা থেকে রক্ষা পেতে এক অভিনব বুদ্ধি বের করে ফেলেন। সে নিজের এবং তার মতো মেধাহীনের তকমা লাগা লাস্ট বেঞ্চের স্টুডেন্টের শাস্তির হাত থেকে বাঁচাতে নিজেই অভিভাবক বনে গেলেন। নিজেদের সাইকেলের গ্যারেজের সরঞ্জাম থেকেই পারিবারিক সিল বানানোর বন্দোবস্ত করে ফেললেন। তবে সাময়িক ভাবে পানিশমেন্টের হাত থেকে সে রক্ষা পেলেও, পরবর্তীতে বাবার হাতে ধরা পড়ে তাকে ভালই উত্তম-মধ্যম খেতে হয়েছিল।
কাজের উদ্দেশ্য টোকিওর পানে যাত্রা
১৯২২ সালে মাত্র পনের বছর বয়সে তিনি বাড়ি থেকে কাজের উদ্দেশ্যে রাজধানী টোকিওর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। টোকিওর ‘আর্টো শুকাই’ নামক একটি গাড়ি মেরামতের দোকানে সহকারী হিসেবে কর্ম জীবন শুরু করেন। পাশাপাশি গ্যারেজের মালিকের আরেকটি রেসিং কার ডিজাইনের দোকানের কাজেও সহায়তা করতে থাকেন। পরবর্তীতে ১৯২৩ সালের ভূমিকম্পে আগুন ধরে আর্টো শুকাইয়ের বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হয়। সেই দুর্ঘটনার সময় সইচিরো সাহসিকতার সাথে তিনটি রেসিং কার রক্ষা করতে সক্ষম হোন। এতে দোকানের মালিক তার উপর ভীষণ খুশি হোন। সেজন্য তাকে সরাসরি রেসিং কার ডিজাইনের কাজের সুযোগ করে দেন।
এরই ফলশ্রুতিতে ১৯২৪ সালের দিকে ‘জাপান রেসিং কার প্রতিযোগিতা’য় ১ম স্থান অধিকারী টিমের মেকানিক হিসেবে হোন্ডা তার অবস্থান নিশ্চিত করেন। দিন দিন হোন্ডা নিজের কর্ম পরিকল্পনা, মেধা, যোগ্যতা আর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেকে গড়ে নিতে থাকেন। একসময় তার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ‘আর্টো শুকাই’ টোকিওর একটি জনপ্রিয় সার্ভিস সেন্টারে পরিণত হয়। এই সার্ভিস সেন্টারটির বিভিন্ন জায়গায় অনেক গুলো শাখা খোলা হয়। পরবর্তীতে হোন্ডা একটি শাখার প্রধান হিসেবে কাজ শুরু করেন। মূলত সেই সময় হোন্ডার বয়স ছিল মাত্র একুশ বছর এবং এই সময়ের মাঝে সে পিস্টন বানানো শিখে যান।
দক্ষতার অনিবার চর্চা
সইচিরো হোন্ডা ছিলেন জ্ঞান অন্বেষণকারী এবং আগ্রহী মনোভাবাপন্ন। তাই, পিস্টন রিং বানানোর পাশাপাশি তিনি ব্যবসায়িক জ্ঞান এবং বিভিন্ন কাজে দক্ষতা অর্জনের চেষ্টা করেন। মূলত তিনি এই চাকরির মাধ্যমেই একজন ইনভেন্টর বনে যান। একসময় নিজের সব জমানো টাকা এবং স্ত্রীর গহনা বন্ধক রেখে, গাড়ির পিস্টন বানানো শুরু করেন। তবে তখন তার বানানো পিস্টনগুলো তেমন একটা ভালো হচ্ছিল না। আর তাইতো নিজের কারিগরি জ্ঞান বাড়ানোর জন্য, এই বয়সেই সাহস করে তিনি একটি টেকনিক্যাল স্কুলে ভর্তি হয়ে যান। তারপর তিনি একটি রেসিং গাড়ি বানানোর কাজে মনোনিবেশ করেন। তিনি মূলত ফোর্ডের ইঞ্জিন ব্যবহার করে কারটি বানাতে চেষ্টা করেন। তবে এই ক্ষেত্রে তাকে অনেকটাই নিরাশ হতে হয়, কারণ ফলাফল তেমন একটা আশানুরূপ হয়নি। রেসের মাঠে গাড়ির গতি ১০০ মাইল পর্যন্ত যেতে না যেতেই তা ভেঙ্গে যায়। অবশ্য তিনি তাতে দমে যাননি, এই কারের স্পিড মেশিনটি ঠিক করার পেছনে তিনি তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখেন।
অমানিশার বাঁধার দেয়াল এবং ব্যর্থতার বোঁঝা
অনেক বিখ্যাত মানুষের মতোই সইচিরো হোন্ডার জীবনে সফলতা খুব দ্রুতই ধরা দেয়নি। বার বার তার জীবনে বাধা-বিঘ্ন এসেছে, কিন্তু তিনি হতাশ হয়ে থেমে থাকেন নি। বরং লড়াকু মনোভাবের এই মানুষটা হতাশাকে পাশ কাটিয়ে, নিজের দুর্ভাগ্যের সাথে একাই লড়েছেন। একসময় কার রেসিংয়ের প্রতি দুর্বার আকর্ষণ তাকে ভীষণ বিপদের মুখোমুখি করে দিয়েছিল। ১৯৩৬ সালের দিকে তিনি এক কার রেসিংয়ের ময়দানে গুরুতর ভাবে আহত হোন। এই দুর্ঘটনায় তার এক হাত ভেঙ্গে যায় এবং তিনি শারীরিক ভাবে ভীষণ আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে বাধ্য হোন। কথায় আছে না ‘বিপদ যখন আসে তখন দলবল নিয়েই আসে!’ তেমনি হোন্ডার জীবনেও সেই সময় চারদিক অন্ধকার করে, খারাপ খবর আসতে থাকে। হাসপাতালের বেডে বসেই তিনি শুনতে পান, টয়োটা কোম্পানিতে পরীক্ষার জন্য পাঠানো তার ত্রিশ হাজার পিস্টনের মধ্যে থেকে মাত্র তিনটি কোয়ালিটি কন্ট্রোলে পাশ করেছে। এছাড়াও তখনই তার কাছে টেকনিক্যাল স্কুল থেকে অব্যাহতির নোটিশ আসে!
সাহসিকতার সাথে দুর্ভাগ্যের বিরুদ্ধে লড়াকু এক সৈনিক
এই পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছেন যারা দুর্ভাগ্যকে মেনে নিয়ে বসে থাকেননি। বরং অসীম মনোবল আর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের ভাগ্যকে বদলানোর জন্য একাই লড়ে গিয়েছেন। সইচিরো হোন্ডা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ১৯৩৭ সালে নিজেই ‘টোকাই সিকি’ নামে একটি কোম্পানি খুলেন। মূলত তখন তিনি পিস্টন বানানো দিয়েই তার কাজ শুরু করেন। এবার তার বানানো ইউনিক পিস্টনগুলোর কোয়ালিটি অনেক বেশি ভালো হয়। যা তিনি আবারো টয়োটা কোম্পানির কাছে সরবরাহ করতে থাকেন। কিছুদিন পরেই বাজে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা! সেইসময় হোন্ডা শুধুমাত্র টয়োটা কোম্পানিতেই প্রায় ৪০% পিস্টন সরবরাহ করতে থাকেন। তবে সফলতার পথেও কণ্টক বিছানো থাকে, হোন্ডার সাফল্যের পথে আবারো বাঁধা আসে। ১৯৪৫ সালের বিশ্বযুদ্ধের শেষ সময়টাতে আমেরিকার বোমা বর্ষণে, তার প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। যার ফলশ্রুতিতে তিনি মাত্র সাড়ে চার লাখ ইয়েনের বিনিময়ে তার প্রিয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি, টয়োটা কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হোন!
নতুন উদ্যমে অদম্য সইচিরোর পথচলা
যুদ্ধ বিধ্বস্ত এক দেশের নাগরিক সইচিরো হোন্ডা ছিলেন অদম্য এক যোদ্ধা। তাইতো দুর্ভাগ্য কিংবা দরিদ্রতা কোন কিছুই তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। যদিও এই সময় পরিবারের জন্য তিন বেলা খাবার নিশ্চিত করতেই তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছিল! কিন্তু দু’চোখ ভরা স্বপ্ন আর এক বুক আশা তাকে সামনের পথে এগিয়ে যেতে সাহস যোগায়। তার নিজের উদ্ভাবনী শক্তির মাধ্যমেই স্কুটার বানানোর চেষ্টাটা শুরু করে দেন। এই ছোট্ট গ্যারেজে বসেই তিনি স্কুটার বানাতে সফল হোন এবং তা আশেপাশের সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ১৯৪৬ সালে নিজের উদ্ভাবিত পণ্যের বাজার নিশ্চিত করার উদ্দেশ্য, তিনি এই গ্যারেজেই প্রতিষ্ঠা করেন “হোন্ডা টেকনোলজি রিসার্স ইন্সটিটিউট।”
১৭০ স্কয়ার ফিটের ছোট্ট একটি গ্যারেজে, মাত্র ১২ জন কর্মী নিয়ে বাইসাইকেল (Motorized Bicycle) তৈরি এবং বিক্রির কাজ শুরু করেন। সেই সময় সইচিরো টু স্ট্রোক ৫০-সিসি ওয়্যার সারপ্লাস রেডিও জেনারেটরের ইঞ্জিন ব্যবহার করতেন। তবে ইঞ্জিন শেষ হয়ে গেলে, তিনি নিজেই এই ইঞ্জিনের প্রতিলিপি তৈরি করতে থাকেন। পরবর্তীতে তিনি এগুলো অ্যাটাচ করে বিক্রি করাও শুরু করে দেন। মূলত হোন্ডা-এ টাইপের বিক্রির মাধ্যমেই তার প্রতিষ্ঠান লাভবান হতে থাকে। তখনকার অর্জিত মুনাফার মাধ্যমে ১৯৪৮ সালে তার এই প্রতিষ্ঠানটি রূপান্তরিত হয় “হোন্ডা মোটর লিমিটেড কোম্পানিতে!” তিনি তার কোম্পানির প্রথম মোটরসাইকেল তৈরিতে ব্যবহার করেন সাধারণ বাইসাইকেলের ইঞ্জিন। পানির বোতল দিয়ে বানানো তেলের ট্যাঙ্কে জাপানের সহজলভ্য ফির অয়েল নামক বিশেষ তেল ব্যবহার করেন। তৎকালীন জাপানে হোন্ডার উদ্ভাবনী শক্তি আর পরিশ্রমে বানানো ‘Choo-Choo’ নামক ১৫০০টি বাইক খুব দ্রুতই বিক্রি হয়ে যায়!
মোটরসাইকেল ড্রিমের পদযাত্রা
পরবর্তীতে ১৯৪৯ সালে হোন্ডা প্রথম পুরোপুরি নতুন ধরনের মোটরসাইকেল তৈরি করেন। ডি-টাইপের এই টু-স্ট্রোক ইঞ্জিনের মোটরসাইকেল ‘ড্রিম’ নাম দিয়ে মার্কেটে ছাড়া হয়েছিল। ১৯৫৮ সালে তিনি ফোর স্ট্রোক বাইক উৎপাদন শুরু করেন এবং ‘Super Cub’ মডেলের একটি বাইক আমেরিকার বাজারে আনেন। এরপর হোন্ডা কোম্পানি বিশ্বের প্রায় দুইশ’টি বাইক উৎপাদনকারী কোম্পানি এবং জাপানের পঞ্চাশ’টি কোম্পানির সাথে প্রতিযোগিতার করার মাধ্যমে, প্রথম সারিতে চলে আসে। যার ফলশ্রুতিতে ১৯৬৪ সালের মধ্যেই হোন্ডা সবচেয়ে বড় মোটরসাইকেল ম্যানুফ্যাকচারারে পরিণত হয়!
পরবর্তীতে সইচিরো তার হোন্ডা কোম্পানির সাফল্য-যাত্রায় ইঞ্জিনিয়ার কিনশিরও কাউয়াশিমা এবং টাকিও ফুজিসাওয়াকে তার সহযাত্রী হিসেবে পান। এই দুইজন তার কোম্পানির বিজনেস এবং মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখেন। ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত তাদের এই পার্টনারশিপ অটুট ছিল। একটার পর একটা সাফল্য হোন্ডা কোম্পানিকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পানে নিয়ে যায়। বিশ্বজুড়ে তাদের ছড়িয়ে পড়া খ্যাতির দরুন সব বড় বড় কোম্পানি হোন্ডার সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। পরবর্তী সময়গুলোতে এই হোন্ডা কোম্পানিটি মোটর সাইকেলের পাশাপাশি গাড়ি, মেরিন মেশিনারি, জেট বিমান ইত্যাদি তৈরিতে সিদ্ধহস্ত হয়ে নিজেদের শ্রেষ্ঠতার প্রমাণ দেয়!
সইচিরো হোন্ডার জীবনাবসান
সইচিরো হোন্ডার একটি বিখ্যাত উক্তি হলো “যে কোন সাফল্যের ১-শতাংশ কাজ, বাকি ৯৯-শতাংশ ব্যর্থতা!” মূলত তিনি জীবনের উত্থান-পতনে ব্যর্থতার বোঁঝাকে পরোয়া না করে, তার মেধা, কাজ এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে আগামীর পথে হেঁটেছেন। ১৯৯১ সালের ৫ই আগস্ট কিডনিজনিত জটিলতার কারণে জীবন যোদ্ধা সইচিরো হোন্ডা পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন!
কিংবদন্তী ‘সইচিরোর হোন্ডা’র হোন্ডা কোম্পানির মূলমন্ত্র হলো ‘স্বপ্নের শক্তি’! আর তাইতো স্বপ্নের শক্তির জোরে যে কোম্পানির শুরুটা হয়েছিল মোটরসাইকেল তৈরি দিয়ে, আর তা একসময় জেট বিমান নির্মাণের কাজেও সফলতা অর্জন করে ফেলে। সইচিরো হোন্ডার অদম্য মনোবলে গড়া স্বপ্নীল শক্তির সাফল্যময় অগ্রযাত্রা আজো বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে এগিয়ে চলছে! মূলত অটোমোবাইল তৈরির ইতিহাসে এই হোন্ডা কোম্পানি যতদিন টিকে থাকবে, ততদিন এই মানুষটিও তার কর্ম এবং প্রজ্ঞার মাধ্যমে সবার মনে চির জাগরূক হয়ে থাকবেন। প্রহরীর পক্ষ থেকে জীবন সংগ্রামী ‘সইচিরো হোন্ডা’র মতো স্বপ্নবান সংগ্রামী রূপকারদের প্রতি রইলো অসীম শ্রদ্ধা আর অনিঃশেষ ভালোবাসা!