প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

গাড়ির-যত্ন-এব-রক্ষণাবেক্ষণে-১০-টি-কার্যকরী-টিপস
পড়তে লাগবে: 5 মিনিট

গাড়ির যত্ন এবং রক্ষণাবেক্ষণে ১০ টি কার্যকরী টিপস

রফিক সাহেব প্রতিদিনের মত আজকে সকালে অফিসের যাওয়ার আগে বাচ্চাকে স্কুলে পৌঁছে দিতে চাইলেন। বাসা থেকে নিজের গাড়ি করে প্রায় ২০ গজ যেতে না যেতেই হঠাৎ গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেল। কি সমস্যা হয়েছে বুঝতে পারছিলেন না! একপর্যায়ে গাড়ির ফুয়েল চেক করার পর বুঝতে বাকি রইল না যে গত রাতে বাসায় ফেরার সময় ফুয়েল নেওয়া হয়নি। কারন ফুয়েল মিটারে যে সংকেত পেয়েছিলেন তা ভুল দেখাচ্ছিল। এদিকে বাচ্চার স্কুল ও নিজের অফিসের সময়ও হয়ে এসেছে। হঠাৎ এরকম বিড়ম্বনার সম্মুখীন হলে সবারই খারাপ লাগবে। আমরা সকলেই চাই সখের গাড়িটি যেন ভালো থাকে। মানুষ যেমন নিজের শরীর ঠিক রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় ঠিক একই ভাবে গাড়ির যত্ন নেওয়া উচিত। তাহলে গাড়ির পারফরমেন্স ভালো থাকবে এবং গাড়িটি দীর্ঘস্থায়ী হবে। আজকের আলোচনায় “গাড়ির যত্ন কিভাবে নিবেন” এই বিষয়ে কিছু তথ্য উল্লেখ করার চেষ্টা করবো। জেনে নেওয়া যাক গাড়ী রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রয়োজনীয় ১০ টি টিপসঃ

১. গাড়িতে ধুলাবলি জমতে না দেয়া

“গাড়ির যত্ন” বলতে গেলে প্রথম ও প্রধান কাজ হচ্ছে নিয়মিত গাড়ির ভিতরে ও বাইরে ধুলাবালি জমতে না দেয়া। গাড়ির অভ্যন্তরে ধুলাবালির জন্য অনেক সময় দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয় যা এক অস্বস্তিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। গাড়ি চালানোর সময় গ্লাস বন্ধ রাখা উচিৎ এতে গাড়ির ইন্টেরিয়র ফ্রেশ এবং ভালো থাকবে। অনেক সময় গাড়িতে মরিচা দেখা যায় দীর্ঘদিন ওয়াশ না করার ফলে তাই মাসে অন্তত একবার গাড়ির বাহিরে-ভিতরে ভালো করে পরিষ্কার করা প্রয়োজন।

১.গাড়িতে-ধুলাবলি-জমতে-না-দেয়া

 

২. গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণে ব্রেকিং সিস্টেম পর্যবেক্ষণ করা

গাড়ির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে ব্রেক। দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে ব্রেক প্যাডগুলো আগের থেকে কার্যকারিতা কমে যায় ফলে আকস্মিক বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। নিয়মিত গাড়ির ব্রেক পর্যবেক্ষণ অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ থেকে পরিত্রাণ দিবে। তাই মাসে অন্তত ২ বার ব্রেক পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন।

২.গাড়ি-রক্ষণাবেক্ষণে-ব্রেকিং-সিস্টেম-পর্যবেক্ষণ করা

৩. ফুয়েল মনিটরিং

ফিলিং স্টেশন থেকে অনেক দূরে ফুয়েল শেষ হলে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। দিন শেষে গাড়ি গ্যারেজে রাখার সময় এবং সকালে গাড়ি নিয়ে বের হওয়ার সময় ফুয়েল চেক করার অভ্যাস তৈরি করা প্রয়োজন। প্রহরী ডিভাইসের মাধ্যমে খুব সহজেই আপনার গাড়ির ফুয়েল রিপোর্ট চেক করতে পারবেন।

৩.ফুয়েল-মনিটরিং

৪. গাড়ির ইঞ্জিনের যত্ন নেওয়া

ইঞ্জিন চালু হওয়ার পর ভেতরের যন্ত্রাংশগুলোর ঘূর্ণনে তাপ উৎপাদন হয়ে ইঞ্জিন ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এই ক্ষয় থেকে ইঞ্জিন রক্ষা করার জন্য পিচ্ছিল তেল ব্যবহৃত হয়, তাকেই “ইঞ্জিন অয়েল” বলে। তরল এই পদার্থ ইঞ্জিনের অভ্যন্তরে থাকলে যন্ত্রাংশগুলোর ঘূর্ণনে তাপ উৎপাদন ব্যাহত হয়। আর তাই প্রতি ৩০০০ মাইল চালানোর পর ইঞ্জিন অয়েলে পরিবর্তন করা। আপনি নিজেই ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করতে পারেন অথবা কোন সার্ভিস সেন্টারে নিয়ে পরিবর্তন করতে পারেন। ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করার পাশাপাশি এর ফিল্টার, স্পার্ক প্লাগ বদলানোর কাজটাও করতে হবে নিয়মিত। হাওয়া দিয়ে ইঞ্জিনের ওপরের ধুলো পরিষ্কার করে নিন। পানি দিয়েও পরিষ্কার করতে পারবেন। তবে লক্ষ্য রাখবেন ব্যাটারির সংযোগে যেন পানি না লাগে।

৪.গাড়ির-ইঞ্জিনের-যত্ন-নেওয়া

৫. ব্যাটারি চেক করা

গাড়িতে অবস্থিত আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো এর ব্যাটারি। গাড়ি চালু করার জন্য যে শক্তির দরকার তার পুরোটা এই ব্যাটারির মাধ্যমে পেয়ে থাকে। ব্যাটারিতে তাই কোনো অবস্থাতেই ধুলাবালি বা বর্জ্য ঢুকতে দেয়া যাবেনা। নিয়মিত চেক করতে হবে ব্যাটারিতে অবস্থিত পানির লেভেল ও ব্যাটারি প্রতিস্থাপন ঠিক আছে কিনা।

৫.ব্যাটারি-চেক-করা

৬. গাড়ির কুলিং সিস্টেম চেকআপ করা

গাড়ির কুলিং সিস্টেমের মাধ্যমে স্বাভাবিক তাপ মাত্রা বজায় থাকে। গাড়িতে বেশি তাপমাত্রা থাকলে তা এর মাধ্যমে কমিয়ে আনা হয় অন্যথায় বিপত্তি হতে পারে। তাই নিয়মিত গাড়ির কুলিং সিস্টেম চেকআপ করা অনেক জরুরি।

৬.গাড়ির-কুলিং-সিস্টেম-চেকআপ-করা

৭. এয়ার কন্ডিশন ঠিক আছে কিনা তা চেক করা

এয়ার কন্ডিশন গাড়ির ভিতরের পরিবেশ আরামদায়ক করে থাকে। ফলে গাড়ি চলাচলের সময় ক্লান্তি বোধ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। এছাড়াও গাড়িতে অবস্থিত যাত্রীদের গরম ও ক্লান্তি থেকে এটি পরিত্রাণ দিয়ে থাকে। তাই গাড়ির এয়ার কন্ডিশন সিস্টেম মাঝে মাঝে চেকআপ করা অতি জরুরী। অনেকসময় ড্রাইভার প্রয়োজনের তুলনায় অধিক মাত্রায় গাড়ির এয়ার কন্ডিশন সিস্টেম চালু রাখে যার ফলে অনেক সময় গাড়ির ফুয়েল কনজুইমিং বেশি হয়। এমন অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে “প্রহরী এসি অন-অফ নোটিফিকেশন” যা এ্যাপের মাধ্যমে গাড়ির মালিক দেখতে পারবে। প্রহরীর এমন কার্যকরী ফিচার গুলো সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন এখানে

৭.এয়ার-কন্ডিশন-ঠিক-আছে-কিনা-তা-চেক-করা

৮. গাড়ির টায়ারের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা

অধিকাংশ সময় দূরের জার্নি গুলোর ক্ষেত্রে গাড়ির টায়ার নষ্ট হবার মত ঘটনা হরহামেশাই দেখা যায়। এজন্য অতিরিক্ত একটি টায়ার সাথে রাখা ভালো। গাড়ির টায়ারে সঠিক মাত্রায় বাতাসের চাপ আছে কিনা তা মিটার দিয়ে চেক করা। গাড়ি প্রতিনিয়ত রাস্তার ধুলা বালি নুড়িপাথরের উপর দিয়ে চলে এতে করে টায়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। টায়ার পাংচার থেকে শুরু করে ব্রেক ফেইল এমন অনেক অনেক দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারে। তাই নিয়মিত টায়ারের গায়ের ক্ষত পরীক্ষা করা এবং খুব দ্রুতই ক্ষতিগ্রস্ত টায়ার টি পালটে নতুন টায়ার সংযোজন করা প্রয়োজন।

৮.গাড়ির-টায়ারের-প্রতি-বিশেষ-খেয়াল-রাখা

৯. গাড়ির লুকিং গ্লাস ও হেড লাইট পর্যবেক্ষণ

৯.গাড়ির-লুকিং-গ্লাস-ও-হেড-লাইট-পর্যবেক্ষণ

গাড়ি চালানোর সময় সব চেয়ে গুরুত্ত্বপূর্ণ আর একটি বিষয় হচ্ছে লুকিং গ্লাস। হাইওয়েতে পিছন দিক থেকে কোনো গাড়ি আসছে কিনা তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ এর মাধ্যমে করা হয়। বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকায় গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে এটির গুরুত্ব অনেক। এজন্য পাহাড়ি এলাকায় গাড়িতে লুকিং গ্লাস গুলোতে সমতল লেন্স ব্যবহার করা হয়। রাতের বেলায় গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে হেড লাইটের ব্যবহার করা হয়, যা সামনের রাস্তার অবস্থান পর্যবেক্ষণ ও নিরাপদ ড্রাইভিং এর জন্য এটির গুরুত্ব অনেক। এছাড়াও গাড়ির লুকিং গ্লাসে ব্লাইন্ড স্পট মিরর ব্যবহার করলে বাইরের আউট অফ ভিউ জায়গা গুলো দেখা যাবে ফলে এক্সিডেন্ট থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব হবে। তাই নিয়মিত হেড লাইট পর্যবেক্ষণ অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

৯.২.গাড়ির-লুকিং-গ্লাস-ও-হেড-লাইট-পর্যবেক্ষণ

১০। গিয়ার অয়েল পরিবর্তন করা

১০.গিয়ার-অয়েল-পরিবর্তন-করা

গিয়ার শিফটিংয়ের জন্য গিয়ার বক্সে একধরনের তরল পদার্থ ব্যবহৃত হয়। গিয়ার শিফটিংয়ে যদি গাড়িতে ত্রুটি দেখা দেয় অথবা গিয়ার দেওয়ার পরে যদি দেরিতে গাড়ির ইঞ্জিন কাজ করে, তাহলে দ্রুত গিয়ার অয়েল পরিবর্তন করতে হবে।

দীর্ঘদিন গাড়ির ব্যবহার গাড়ির রক্ষনাবেক্ষন ও ব্যবহারের উপর অনেকংশে নির্ভর করে। গাড়ির যত্নের পাশাপাশি মাঝে মাঝে গাড়ি সার্ভিসিং করা উচিত। এতে করে গাড়ির ব্যবহার আমাদের জন্য সুখকর হবে। গাড়ি পর্যবেক্ষন ও দেখভাল এখন অনেক গুরুত্ত্বপূর্ণ বিষয়। সারাদিনের কর্ম ব্যস্ত সময়ে অনেক সময় আমরা গাড়ির যাবতীয় পর্যবেক্ষন করতে পারিনা। প্রহরীর মাধ্যমে এখন খুব সহজেই যে কোনো স্থানে সে কোনো সময়ে গাড়ির পর্যবেক্ষন ও গতি বিধি লক্ষ্য রাখা যায়। প্রহরী কার্যকলাপ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।

শখের গাড়ির সকল তথ্য অ্যাপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করতে এবং গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী ব্যবহার করতে পারেন। এটি একটি ভেহিক্যাল ট্র্যাকার সার্ভিস (VTS) ডিভাইস যা সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করেছে পাই ল্যাবস বাংলাদেশ লিমিটেড। প্রহরী – ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং সিস্টেমে রয়েছে অ্যাপের মাধ্যমে ইঞ্জিন লক/আনলক করার সুবিধা, গাড়ির লাইভ ট্র্যাকিং আপডেট দেখা, এবং ট্রাভেল হিস্টোরি চেক করা সহ আরও অনেক সুবিধা বিস্তারিত জানতে দেখুন প্রহরী প্যাকেজ সমূহ।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top