প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

পড়তে লাগবে: 5 মিনিট

পৃথিবীর সবচাইতে জাঁকজমকপূর্ণ ১০ টি গাড়ি প্রদর্শনী

গাড়ি প্রিয় মানুষের ক্ষেত্রে যেন পুরো পৃথিবীই একটি দেশ। সংস্কৃতি এবং ভূসীমানার বাঁধা পেরিয়ে তারা এক হয়ে যায় বিভিন্ন মটর শো বা গাড়ি প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে। প্রতি বছর পৃথিবীতে শতশত গাড়ি প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়ে থাকে এবং দিনে দিনে এর সংখ্যা বাড়ছে। গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর জন্যও এই গাড়ি প্রদর্শনীগুলো লাভজনক স্থান, যেখানে তারা তাদের উৎপাদিত গাড়িগুলো মানুষের সামনে উপস্থাপন করে। প্রতিবছর যেসব গাড়ি প্রদর্শনী পৃথিবীব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে তাদের মধ্যে সবচাইতে বড় এবং জাঁকজমকপূর্ণ ১০ টি গাড়ি প্রদর্শনী নিয়েই আমাদের আজকের ব্লগ।

১. ফ্রাঙ্কফুর্ট মটর শো:

ফ্রাঙ্কফুর্ট মোটর শোতে ড্রোন কার

প্রদর্শনীতে প্রাইভেট এবং কমার্শিয়াল গাড়ির সংখ্যার দিক দিয়ে এইটি পৃথিবীর সবচাইতে বড় মটর গাড়ি প্রদর্শনী। এটি আগে শুধুমাত্র ইন্টারন্যাশনাল মোটর শো নামে পরিচিত হলেও ইদানিং এটি ফ্রাঙ্কফুর্ট মটর-শো নামে পরিচিত। প্রতি বছর এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হলেও, প্রতি বিজোড় বছরগুলোতে ফ্রাঙ্কফুর্টে প্যাসেঞ্জার কার এবং জোড় বছরগুলোতে হ্যানোভারে কমার্শিয়াল কার প্রদর্শনী করে থাকে। সাধারণত সেপ্টেম্বর মাসে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়ে থাকে।

২. টোকিও মটর শো:

টোকিও মোটর শো

মাজদা, টয়োটা, হোন্ডার মত গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো জাপানে অবস্থিত, ফলে গাড়ির নিত্যনতুন ডিজাইন, ইঞ্জিন, মডেল বিশ্ববাজারের সামনে তুলে ধরার জন্য গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর কাছে জাপান এখন স্বর্গভূমি। টোকিও মটর শো’তে গতানুগতিক বা ঐতিহ্যবাহী গাড়ির চাইতে কন্সেপ্ট কারই বেশি প্রদর্শন করে থাকে।প্রতি দুই বছরে একবার এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়ে থাকে।

৩. প্যারিস মনডিয়াল ডে ল’অটোমোবাইল:

প্যারিসের অন্যতম মোটর শো

এই গাড়ি প্রদর্শনীটি পূর্বে শুধুমাত্র প্যারিস অটো শো নামে পরিচিত ছিল যা প্যারিস এক্সপো হল সেন্টারে আয়োজন করা হয়ে থাকে। প্রতি দুই বছরে একবার এই গাড়ি প্রদর্শনী উতজাপন করা হয়। সাধারণত অক্টবর মাসে গাড়ি নিয়ে এই বিশাল মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এই গাড়ি প্রদর্শনীর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এলবার্ট ডি ডিওন ১৮৯৮ সালে এই গাড়ি প্রদর্শনী শুরু করেন এবং এখনো একই আকর্ষণীয়তা বজায় রেখে এটি আয়োজন করা হয়ে থাকে। এই মটর শো’তে আগত দর্শনার্থীরা গাড়ি দেখেই ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দিতে পারে।

৪. ইন্টারন্যাশনাল জেনেভা মটর শো:

ইন্টারন্যাশনাল জেনেভা গাড়ি প্রদর্শনী

ইন্টারন্যাশনাল জেনেভা মটর শো পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় গাড়ি প্রদর্শনী যা পূর্বে জেনেভা মটর শো নামেই সুপরিচিত ছিল। নাম থেকেই ধারণা করা যায় যে, এই প্রদর্শনী সুইজারল্যান্ডের জেনাভেতে আয়োজন করা হয়ে থাকে। সাধারণত বছরের মার্চ মাসে এই প্রদর্শনী শুরু হয়। ১৯০৫ সালে সর্ব প্রথম জেনেভা মটর শো আয়োজিত হয়েছিল। এই গাড়ি প্রদর্শনীতে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক বিতর্কেরও আয়োজন করা হয়ে থাকে!

৫. নর্থ আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল অটো শো:

নর্থ আমেরিকান মোটর শো

এই গাড়ি প্রদর্শনীটি সারা বিশ্বে ডেট্রয়েট অট শো নামেই বহুল পরিচিত। এই গাড়ি প্রদর্শনীটি নর্থ আমেরিকার সবচাইতে জাঁকজমকপূর্ণ গাড়ি প্রদর্শনী হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। প্রতি বছর মধ্যে জানুয়ারিতে আয়োজিত, সপ্তাহব্যাপি এই গাড়ি প্রদর্শনীর প্রথম তিন দিন মিডিয়া, গাড়ি কোম্পানি এবং চ্যারিটির জন্য এবং বাকি দিন গুলো সাধারণ মানুষের জন্য অবমুক্ত করে দেয়া হয়। শত বছরের পুরনো এই গাড়ি প্রদর্শনীতে অনেক কন্সেপ্ট কার এবং ট্রেডিশনাল কার দর্শকদের সামনে উপস্থাপিত হয়ে থাকে।

৬. শিকাগো অটো শো:

শিকাগো গাড়ি প্রদর্শনী

নাম শুনেই বুঝা যাচ্ছে যে, এই গাড়ি প্রদর্শনীটি প্রতি বছর শিকাগোতে অনুস্থিত হয়ে থাকে। সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাসেই এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়ে থাকে। নর্থ আমেরিকার মধ্যে শিকাগো মটর শো’তে সবচাইতে বেশি সংখ্যক গাড়ির প্রদর্শনী হএয় থাকে। এই গাড়ি প্রদর্শনীর সবচাইতে উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে, প্রতি বছর এই গাড়ি প্রদর্শনীতে লক্ষ লক্ষ দর্শক সমাগম হয়। এছাড়াও প্রায় এক মিলিয়ন স্কয়ার ফিট জায়গার উপরে হাজারো গাড়ি নিয়ে এই প্রদর্শনীটি অনুষ্ঠিত হয়।এত বড় জায়গা নিয়ে প্রদর্শনী আয়োজন করার ফলে দরশকরা চাইলে তাদের পছন্দের গাড়িটি নিয়ে টেস্ট ড্রাইভ ও করতে পারেন!

৭. বেইজিং ইন্টারন্যাশনাল অটোমটিভ এক্সিবিশন:

বেইজিং গাড়ি প্রদর্শনীতে কাস্টমাইজ কার

নিজেদের তৈরি গাড়ি প্রদর্শনের জন্য পৃথিবীর বিখ্যাত সব গাড়ি কোম্পানির কাছে বেইজিং ইন্টারন্যাশনাল অটোমটিভ এক্সিবিশন একটি অন্যতম জায়গা। অডি, জাগুয়ার, বিএমডব্লিউর মত বড় বড় গাড়ি কোম্পানি গুলো দিনে দিনে বেইজিং ইন্টারন্যাশনাল অটোমটিভ এক্সিবিশনে প্রতিনিয়ত অংশগ্রহণে আগ্রহী হচ্ছে। কারন জাপানের পাশাপাশি চিনেও আস্তে আস্তে গাড়ি তৈরির কোম্পানি গড়ে উঠছে। ১৯৯০ সালের পর থেকে এই প্রদর্শনীটি প্রতি বিজোড় বছরের আয়োজিত হয়ে আসছে।

৮. পেবল বিচ কনকোরস ডি’এলিগেন্স:

এন্যুয়াল মনটারি কার উইক ফেস্টিভ্যালের একটি জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন হচ্ছে এই পেবল বিচ কনকোরস ডি’এলিগেন্স। এটি বিশ্বের বিখ্যাত গাড়ি প্রদর্শনীর একটি। প্রতিবছর ক্যালিফোর্নিয়াতে এই গাড়ি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়ে থাকে। এই প্রদর্শনীর একটি উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হল, পৃথিবীর বিখ্যাত সব সুপারস্টার, সেলিব্রেটি এবং ধনী ব্যক্তিরা এই প্রদর্শনীতে অংশ নিতে আসেন।

৯.উডওয়ার্ড ড্রম ক্রুজ গাড়ি প্রদর্শনী:

উড-ওয়ার্ড ড্রিমস ক্রুজ

গাড়ির প্রতি আগ্রহী এবং গাড়ি যাদের ধ্যান জ্ঞান তাদের কাছে উডওয়ার্ড ড্রিম ক্রুজ যেন স্বর্গভূমি। এই গাড়ি প্রদর্শনী প্রতি বছর আগস্টের তৃতীয় শনিবারে আয়োজিত হয়ে থাকে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে গাড়ি প্রিয় মানুষরা তাদের গাড়ি, ইঞ্জিন, কন্সেপ্ট দেখাতে এই প্রদর্শনীতে ভিড় জমায়। পাশাপাশি নামীদামী সব গাড়ি কোম্পানিগুলো এতে যোগ দেয়। এই গাড়ি প্রদর্শনীর যাত্রা ১৯৪৮ সালে যখন কিনা কেরিজ ড্রাইভাররা এই জায়গায় গাড়ির রেস খেলত। পরবর্তীতে যা পৃথিবীর অন্যতম সেরা গাড়ি প্রদর্শনীগুলোর একটিতে রূপান্তর হয়ে উঠেছে।

১০. সাংহাই ইন্টারন্যাশনাল অটোমোবাইল ইডাস্ট্রি এক্সিবিশন:

সাংহাই ইন্টারন্যাশনাল মোটর এক্সিবিশন

এই গাড়ি প্রদর্শনীটি সাধারণত অটো সাংহাই নামেই বেশি পরিচিত। যেহেতু চিন দিনকে দিন গাড়ি উৎপাদনে আগ্রহী হচ্ছে এবং সফলতার পথে হাঁটতে শুরু করেছে, তাই চিনের গাড়ি প্রস্তুতকারক ইন্ডাস্ট্রিও দিনে দিনে বড় হচ্ছে। পাশাপাশি চিনের বৃহৎ জনগোষ্ঠী এই গাড়ি ইন্ডাস্ট্রিকে ক্রেতা হিসেবে সাহায্য করছে, যেন নতুন উঠে আসা গাড়ি কোম্পানিগুলো টিকে থাকতে পারে। অটো সাংহাই সর্বপ্রথম ১৯৮৫ সালে অনুষ্ঠিত হয় এবং এর পর থেকে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

প্রতিবছর এইসব গাড়ি প্রদর্শনীতে নতুন নতুন প্রযুক্তির শত শত রকমের গাড়ি প্রদর্শিত হয়ে থাকে। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে যেমন গাড়ির উন্নতি এবং ভিন্নতা এসেছে পাশাপাশি প্রযুক্তিকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ এবং গাড়ির নিরাপত্তার নানান উপায়। তেমনই একটি প্রযুক্তি হচ্ছে জিপিএস প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে গাড়ি দেখাশোনা এবং নিরাপত্তা এবং সুরক্ষায় তৈরি হয়েছে ভেইকেল ট্র্যাকিং সিস্টেম। যা গাড়ির সকল খবরাখবর অটোম্যাটিক গাড়ির মালিককে জানিয়ে দিয়ে থাকে। আর বাংলাদেশে একেবারে দেশীয় ল্যাবে দেশীয় প্রযুক্তি নির্ভর ভেইকেল ট্র্যাকিং সিস্টেম দিচ্ছে অন্যরকম প্রহরী। প্রহরী গাড়ির নিরাপত্তায় এবং আপনার সেবায় দিন রাত ২৪ ঘণ্টা কাজ করে থাকে।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top