প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

ট্রাফিক পুলিশের কাজ কি
পড়তে লাগবে: 3 মিনিট

ট্রাফিক পুলিশ রাজপথের অতন্দ্র প্রহরী

রাস্তায় চলাচলকে সুশৃঙ্গল করতে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব অশেষ । রোদ, বৃষ্টি, ঝড়ে সব সময়ই ট্রাফিক পুলিশ রাস্তায় বেমালুম ডিউটি করে যান। রাস্তায় নির্বিঘ্নে আমাদের পথচলার আয়োজন করতে ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজকে আমরা জানাবো ট্রাফিক পুলিশের কাজ কি? বিশেষ করে তারা কি ধরণের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে থাকে। তার আগে জেনে নেই ট্রাফিক পুলিশ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।

ট্রাফিক পুলিশ কাকে বলে

ট্রাফিক পুলিশ হল পুলিশ সদস্য, অফিসার, ইউনিট এবং এজেন্সি যারা ট্রাফিক আইন প্রয়োগ করে এবং ট্রাফিক পরিচালনা করে। তারা মহাসড়কে টহল দেয় এবং গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় অবস্থান নিয়ে সড়কের নিয়ম লঙ্ঘনকে মোকাবেলা করে। অনেকেই এই সদস্যদের ট্রাফিক এনফোর্সার্স নামেও নিচে থাকে।

পুলিশ এবং ট্রাফিক পুলিশ কী এক

হ্যাঁ, ট্রাফিক পুলিশ এবং পুলিশ এক। তবে কিছুটা পার্থক্য আছে, সেটা হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্টরা নূন্যতম স্নাতক/সমমানের যোগ্যতা নিয়েই ট্রাফিক পুলিশে সার্জেন্ট হিসেবে জয়েন করে থাকেন। এমনকি বাংলাদেশের চলমান প্রেক্ষাপটে ৮০% এরও বেশি সার্জেন্ট আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি ফেরিয়ে। সার্জেন্ট হিসেবে নিয়োগ পাওয়া পুলিশদেরকে কখনোই ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ট্রেনিং দেয়া হয় না।

তাদেরকে নিয়োগের পরপরই ট্রাফিক সেক্টরে পারদর্শী করে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশের সড়ক ও পরিবহন আইনের প্রায়োগিক দিকসমূহের উপর ট্রেনিং প্রদান করা হয়। ট্রাফিক সেক্টর থেকে পদোন্নতি কিংবা বদলি করা হলেও তাদেরকে মূলত এমন সেক্টরে পাঠানো হয় যেখানে যানবাহন সম্পৃক্ত কাজকর্ম দেখা যায়।

যেমন বিআরটিতে জনবল প্রয়োজন হলেও ট্রাফিক থেকে ট্রাফিক পুলিশ পাঠানো হয়। এমনকি র‌্যাব এ পেট্রোল সংক্রান্ত কাজকর্মেও ট্রাফিক পুলিশ থেকেই বদলি করে নিয়োগ করা হয়। সহজকথায়, যারা ট্রাফিক সার্জেন্ট হিসেবে নিয়োগ পায় তাদেরকে ট্রাফিক সম্পৃক্ত কাজকর্মেই সম্পৃক্ত রাখার চেষ্টা করা হয়। তবে কোন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর যদি পদোন্নতি পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার হোন তখন তাকে ক্যাডারভুক্ত (বিসিএস) সমমর্যাদা প্রদান করা হয়। এমন কর্তৃপক্ষ চাইলে তাকে ট্রাফিক বা পেট্রোলেও রাখতে পারেন কিংবা ইনভেষ্টিগেশনেও রাখতে পারেন। তবে ট্রাফিক সেক্টরে রাখার সম্ভাবনাই বেশি থাকে।

ট্রাফিক পুলিশে কাজ করার বাস্তবতা

রোদ, বৃষ্টি, ধুলো-বালি, সাথে মাত্রাতিরিক্তি শব্দের ঝনঝনানি ট্রাফিক পুলিশের প্রতিটি ক্ষণের সঙ্গী। ফলে ট্রাফিক পুলিশরা দিনদিন সাইনোসাইটিস, শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথাসহ ভয়ংকর সব রোগে ভুগছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, ট্রাফিক পুলিশের ৬৬ শতাংশই বধির সমস্যায় ভুগছেন।

এছাড়া টানা ১০ ঘন্টারও বেশি সময় দাঁড়িয়ে ডিউটি করার কারণে তারা ভুগছে হাড় ক্ষয়সহ আরও অনেক জটিল রোগে। তাছাড়া ডিউটিরত অবস্থায় রেস্ট এবং প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দেয়ার মতো যথেস্ট ব্যবস্থা না থাকায় পড়তে হয় বিপাকে। নারী ট্রাফিক পুলিশ সদস্যাদের জন্যে তো সড়কে ডিউটি করা তো রীতিমত কষ্টসাধ্য। সর্বোপরি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ট্রাফিক পুলিশরা ভালো নেই। সড়কে সিগন্যাল বাতি অকার্যকর হওয়াতে হাতের ইশারাতেই চলমান সড়কে গাড়ি থামাতে হয় যা অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এপর্যন্ত অনেক ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ডিউটি পালন করতে গিয়ে মৃত্যুবরণও করেছেন।

ট্রাফিক পুলিশের কাজ কি

  • ট্রাফিক পুলিশের দিনের কর্ম ঘন্টা শুরু হয় মূলত, রোল কলের মাধ্যমে। রোলকলে ট্রাফিক পুলিশদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনাও যানজট নিরসনে মূল্যবান পরামর্শও মতামত গ্রহণ করা হয়।
  • সড়কে যানবাহন এবং যানজট নিয়ন্ত্রণে পালাক্রমে ডিউটি করতে হয়। শিফট বাই শিফট ডিউটি করা হলেও তা গড়ে ৮-১০ ঘন্টা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
  • সিগন্যাল লাইট না থাকলে রাস্তার ত্রিমোড় কিংবা চৌরাস্তায় গাড়ি পালাক্রমে থামিয়ে সড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হয়।
  • রাস্তায় চলাচলকৃত গাড়ির ড্রাইভারদের সঠিক কাজগপত্র আছে কিনা তা নিরীক্ষা করতে হয়।
  • কোন গাড়ির ফিটনেস ত্রুটি সন্দেহ হলে সে গাড়ির ফিটনেস কাগজপত্রসহ অন্যান্য গাড়ি সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়মিত চেকিং করতে হয়।
  • সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ অনুযায়ী কোন গাড়ি আইন অমান্য করলে সে গাড়ির নামে অথবা চালকের নামে মামলা দায়ের করে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়।
  • সড়ক ও পরিবহন আইনের প্রতি মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকার জনসচেতনামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করতে হয়।
  • কোন গাড়ি স্বাভাবিক গতির চেয়ে মাত্রাতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালালে তাকে আটক করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা প্রদান করা হয়।
  • সন্দেহভাজন কোন গাড়ি দৃষ্টিগোচর হলে তা চেকিং করতে হয়।
  • অবৈধ পার্কিং করা গাড়ি জব্দ ও অবৈধ পার্কিং নিষিদ্ধ আইনে মামলা দায়ের করতে হয়।
  • কোন গাড়ি দূর্ঘটনায় পতিত হলে, সেই গাড়ি সংক্রান্ত সকল দায়িত্ব ট্রাফিক পুলিশই পালন করে থাকেন।
  • তাছাড়া, মালিক, শ্রমিকসহ পরিবহণ সংশ্লিষ্ট লোকবলকে ট্রাফিক আইনের যথাযথ প্রয়োগ সম্পর্কে ধারণা প্রদান করাও ট্রাফিক পুলিশের অন্যতম দায়িত্ব।

ট্রাফিক পুলিশের বিড়ম্বনা

অনেকেই নাম প্রকাশ করতে অনীহা প্রকাশ করে বলেন, ছুটি নেই। কাঙ্ক্ষিত পদোন্নতি নেই। সামাজিক মর্যাদাও নেই। দিন-রাত পরিশ্রমের পরও কোনও ধন্যবাদ নেই। দুর্ঘটনাসহ নানা ঝুঁকি তো আছেই।

এরপরও যানজটের জন্য নিত্য গালমন্দ শুনতে হয় সাধারণ মানুষের। যানজট না থাকলে সেই কৃতিত্ব আর ট্রাফিকের থাকে না। অনেকেই অবর্ণনীয় কষ্টের কথা বলতে গিয়ে আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়েন।

সব দায় কী ট্রাফিক পুলিশের একার

ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার সকল বিষয়ই পুলিশের উপর ছেড়ে দেওয়ার উপায় নেই। পৃথিবীর সব দেশেই এর সাথে একাধীক সংস্থা জড়িত থাকে। তবে উন্নত দেশে এই সব সংস্থা অত্যন্ত দক্ষ ও পরস্পরের সাথে সহযোগিতার বন্ধনে আবদ্ধ ও সত্যিকারভাবে স্ব স্ব কর্তব্য পালনে প্রতিশ্রুতিবন্ধ।

কিন্তু বাংলাদেশে এর প্রতিফলন দেখা যায় না। যানজট, সড়ক দুর্ঘটনা, মোটরযান আইনের প্রয়োগ ইত্যাদি নিয়ে এখানে শুধু পুলিশকে দোষারোপের প্রতিযোগিতা চলে। এ দেশে নীতি নির্ধারণ, সমন্বয়সাধন ইত্যাদি ক্ষেত্রে পুলিশকে এড়িয়ে চলার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এমনও দেখা গেছে, দেশে যানজন নিরসনের জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠিত হয়েছে যেখানে রেলওয়ের প্রতিনিধি পর্যন্ত রয়েছে, কিন্তু সেই কমিটিতে ট্রাফিক পুলিশের নাম-গন্ধ পর্যন্ত নেই। এখানে দায় পুলিশের কিন্তু দায়িত্ব অন্যদের।

উপরোক্ত কাজগুলোই মূলত একজন ট্রাফিক পুলিশ প্রতিনিয়ত করে থাকেন। ট্রাফিক পুলিশের মহান ত্যাগের মধ্য দিয়েই আমরা পাই যানজট নিরসনের কল্যাণে সুন্দর ভ্রমণের নিশ্চয়তা।

শখের গাড়ির সকল তথ্য অ্যাপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করতে এবং গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী ব্যবহার করতে পারেন। এটি একটি ভেহিক্যাল ট্র্যাকার সার্ভিস (VTS) ডিভাইস যা সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করেছে পাই ল্যাবস বাংলাদেশ লিমিটেড। প্রহরী – ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং সিস্টেমে রয়েছে অ্যাপের মাধ্যমে ইঞ্জিন লক/আনলক করার সুবিধা, গাড়ির লাইভ ট্র্যাকিং আপডেট দেখা, এবং ট্রাভেল হিস্টোরি চেক করা সহ আরও অনেক সুবিধা বিস্তারিত জানতে দেখুন প্রহরী প্যাকেজ সমূহ।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top