প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

প্রাচীন থেকে আধুনিক ১০টি বিস্ময়কর স্থাপনা
পড়তে লাগবে: 8 মিনিট

প্রাচীন থেকে আধুনিক ১০টি বিস্ময়কর স্থাপনা!

মানুষ মাত্রই অজানাকে জানার প্রবল আকাঙ্ক্ষা। সেই আকাঙ্ক্ষা থেকেই মানুষ অজানাকে জেনে এসেছে, অনেক আশ্চার্য এবং অত্যাশ্চার্য বিষয় দেখে বিস্মিত, হতবাক এবং নতুন করে ভাবতে শিখেছে। আমাদের এই পৃথিবী সৃষ্টিকর্তার বানানো আরেক রহস্যের নাম। এই অজানা রহস্যময় বিষয়গুলো নিয়ে মানুষের চিন্তার শেষ নেই। তেমনি কিছু বিস্ময়কর স্থাপনা সম্পর্কে কিছু তথ্য থাকছে এই আর্টিকেলে।

গ্রেট পিরামিড, তাজমহল, জিউসের মূর্তি, আলেকজান্দ্রিয়ার বাতিঘর,অলিম্পিয়ার দেবতা, আর্টেমিসের মন্দির,চীনের মহাপ্রাচীরসহ এমন অসংখ্য রহস্য এবং আশ্চার্যজনক বিষয় রয়েছে পৃথিবীতে যা হাজার হাজার বছর ধরে মানুষের মনোজগতকে করে রেখেছে চিন্তিত, উদ্বেগ এবং বিষণ্ণ আবার কখনো করেছে পুলকিত। সেই সব অত্যাশ্চার্য্য বিষয়গুলো নিয়েই আমাদের আজকের আলোচনা। চলুন জেনে নেই বর্তমান সময়ের সেরা ১০ টি বিস্ময়কর স্থাপনা সম্পর্কে বিস্তারিত।

১. তাজমহল

পঞ্চম মুঘল সম্রাট শাহ্জাহান কর্তৃক ১৬৩২ থেকে ১৬৪৮ সাল আবার অনেক ইতিহাসবেত্তার মতে সম্পূর্ণ কাজ সমাপ্ত হতে ১৬৫৩ সাল পর্যন্ত সময়কাল প্রয়োজন হয়। তাজমহল হচ্ছে সম্রাট শাহ্জাহান কর্তৃক তার স্ত্রী মমতাজের স্মৃতি স্মরণে তার সমাধিস্থলে সুবিশাল অট্টালিকা। এটাকে শুধু অট্টালিকা বললে ভুল হবে, এটি এমন এক প্রাসাদ যা বর্তমানে পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের একটি।

তাজমহল

এই প্রাসাদের নির্মাণশৈলীতে পারস্য, তুরস্ক ভারতীয় এবং ইসলামী স্থাপত্যশিল্পের সংমিশ্রণ ঘটানো হয়েছে। যদিও সাদা মার্বেলের গম্বুজ আকৃতির রাজকীয় সমাধিটিই বেশি সমাদৃত, তাজমহল আসলে সামগ্রিকভাবে একটি জটিল অখণ্ড স্থাপত্য। এটি ১৯৮৩ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়। বিস্ময়কর এই তাজমহলকে বলা হয় ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের সর্বজনীন প্রশংসিত শ্রেষ্ঠ শিল্পকর্ম।’ যে শিল্পকর্মের প্রকৃত সম্ভাব্যতা বর্তমান সময়ের আধুনিক যন্ত্রপাতি দ্বারাও অসম্ভব।

২. চীনের মহাপ্রাচীর

খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম শতক থেকে খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতক পর্যন্ত সময়ে চীনের উত্তর সীমান্ত রক্ষা করার জন্য দৈর্ঘ্যে প্রায় ২১,১৯৬.১৮ কিলোমিটার এবং উচ্চতায় ৫ থেকে ৮ মিটার। প্রাচীরটি চওড়ায় প্রায় ৯.৭৫ মিটার এই প্রাচীর পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল দেশ চীনে এই মহাপ্রাচীর তৈরি করা হয়। চীনের উত্তর সীমান্তকে মঙ্গলীয়দের হামলা থেকে রক্ষা করার জন্য এই মহাপ্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু করেন চীনের প্রথম সম্রাট কিন শি হুয়াঙ।

চীনের মহাপ্রাচীর

খ্রিস্টপূর্ব ২০৮ সালের দিকে চীনে প্রাচীর নির্মাণ শুরু হলেও খ্রিস্টপূর্বাব্দ ২২০ থেকে ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে চীনের প্রথম সম্রাট কিন শি হুয়াঙের অধীনে নির্মিত প্রাচীরটিই সবচেয়ে বিখ্যাত। বেইজিংয়ের উত্তরে অবস্থিত প্রাচীরটিই বর্তমানে সবচেয়ে বেশি অক্ষত রয়েছে এবং এর কিছু অংশ পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। চীনের মহাপ্রাচীরের কিছু অংশ সংরক্ষণ ও পুনর্নির্মাণ করা হলেও বেশির ভাগ অংশ কালের গর্ভে চলে গেছে। তবু এই বিস্ময়কর স্থাপনা দেখতে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ পর্যটক ভিড় করে চীনের উত্তরাঞ্চলের এই মহাপ্রাচীরে।

৩. আইফেল টাওয়ার

আইফেল টাওয়ার, প্যারিসের সেইন নদীর তীরবর্তী এলাকায় অবস্থিত পৃথিবীর অন্যতম সেরা আশ্চার্যজনক নিদর্শন। গোস্তাব আইফেল ১৮৮৯ সালে এটি নির্মাণ করেন যার উচ্চতা ১০৫০ ফুট। টাওয়ারটি নির্মাণ করতে মাত্র ৩০০ জন শ্রমিকের লেগেছে ০২ বছর ০২ মাস ০২ দিন। আইফেল টাওয়ার ১৯৪০ সালের আগপর্যন্ত গোটা বিশ্বে ৩০০ মিটার উচ্চতা সম্পন্ন হওয়ার গৌরবে ছিলো বিশ্বের সবচেয়ে উচ্চতর টাওয়ার । সূর্যাস্তের পর প্রতি ঘন্টায় ০৫ মিনিট করে ২০,০০০ বাল্বের আলোক ছটার বর্ণিল শোভাযাত্রায় আইফেল টাওয়ার এক অপরুপ সৌন্দর্য ধারন করে যা পর্যটকদের মুগ্ধ করে তুলে প্রতিবার।

আইফেল টাওয়ার

আইফেল টাওয়ারকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন থেকে হুমকিও এসেছে অনেকবার তবুও এই বিস্ময়কর স্থাপনা  টিকিয়ে রাখার জন্য রয়েছে বহুস্তরের নিরাপত্তা বেস্টনি। এতো নিরাপত্তার মাঝেও পর্যটকদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু বাধ্যতামূলক বেস্টনি অতিক্রম করে এর বিস্ময়কর সৃষ্টির অপরূপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে।

৪. বুর্জ খলিফা

২০০৪ সালে দুবাইয়ে নির্মাণ কাজ শুরু হওয়া বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু এবং অত্যাধুনিক ভবন হচ্ছে বুর্জে খলিফা যার নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে ২০০৯ সালে এবং উদ্বোধন করা হয়েছে ২০১০ সালে। এর উচ্চতা ৮২৮ মিটার। “বুর্জ খলিফা এমন এক সুউচ্চ প্রাসাদ যার নিচতলা থেকে উপর তলার তাপমাত্রার পার্থক্য ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বুর্জ খলিফা

টাওয়ারটি তৈরি করতে খরচ হয় প্রায় ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ ভবনের লিফটের অধিকাংশ লিফটের ঘন্টায় গড় গতিবেগ ৪০ কি.মি। ভবনটি করতে প্রতিদিন প্রায় ১২,০০০ শ্রমিক নির্মাণ কাজে অংশগ্রহণ করেছে। ভবনটি বিভিন্ন উৎসবে রঙিন সাজে সজ্জিত হয় যা পর্যটকদের আকর্ষণ করার অন্যতম উপলক্ষ্য।

৫. আয়া সোফিয়া

খ্রিস্টপূর্ব ৩৬০ সালের দিকে বাইজেন্টাইন সম্রাট কন্সটান্টিয়াস, বাইজেন্টাইন ব্যাসিলিকা হিসেবে আয়া সোফিয়া নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তৎকালীন সম্রাট কন্সট্যান্টাইনের নামানুসারে কন্সটান্টিনোপল শহরে এই ধর্মীয় পবিত্র জ্ঞান চর্চার চার্চটি স্থাপন করার উদ্যোগ নেয়া হয়। যা বর্তমানে তুরষ্কের ইস্তাবুল শহর নামে পরিচিত এবং পবিত্র ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে মুসলিমদের দখলে রয়েছে।
আয়া সোফিয়ার স্থাপত্যশৈলী জনমনে হাজার বছর ধরে বিস্ময়ের সৃষ্টি করে আসছে। এর স্থাপত্যকর্ম, সুউচ্চ মিনার, গম্বুজ, স্বর্ণের টাইলস, মহামূল্যবান পাথর দ্যুতি ছড়ায় যাতে বিস্ময়াভিভূত হতে বাধ্য দর্শানার্থীরা। দিনের বেলায় এসব দ্রুতি প্রবেশ করলে ভেতরে থাকা কাচ আর স্বর্ণের টাইলগুলো এমন একটি রূপ ছড়ায় যাতে বিস্ময়াভিভূত হয়ে যায় দর্শনার্থীরা। এই দ্যুতি হাজিয়া সোফিয়ার ‘আধ্যাত্মিক আলো’ বলেও পরিচিত।

আয়া সোফিয়া

ত্রয়োদশ শতকে মুসলিম এবং খ্রিস্টানদের মধ্যে সংগঠিত ক্রুসেডে হাজিয়া সোফিয়া কিছু সময়ের জন্য রোমানদের দখলে চলে যায়। পঞ্চদশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে অটোম্যান সম্রাট ফাতিহ্ সুলতান মেহমেদ কন্সট্যান্টিনোপল দখল করেন। অটোমানরা কন্সট্যান্টিনোপলের নতুন নাম দেয় ইস্তাম্বুল। সেসময় আবারও বিপর্যয়ের মুখে পড়ে বাইজেন্টাইনদের প্রধান প্রার্থনালয় হাজিয়া সোফিয়া। পরবর্তীতে অটোমানরা এই স্থাপত্যের বেশকিছু পরিবর্তন সাধন করে তা মুসলিমদের মসজিদ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে।

৬. স্ট্যাচু অব লিবার্টি

আমেরিকার স্বাধীনতার ১০০ বছর উদযাপনকে স্মরণীয় করে রাখতে ফ্রান্সের জনগণের পক্ষ থেকে আমেরিকার জনগণকে দেয়া উপহার হচ্ছে স্ট্যাচু অব লিবার্টি। এটি উচ্চতায় ১৫১ ফুট, বেদিসহ উচ্চতা ৩০৫ ফুট, সুবিশাল এ ভাস্কর্যের নাকের দৈর্ঘ্য ৬ ফুট ৬ ইঞ্চি এবং এর দুই কানের মধ্যবর্তী দূরত্ব ১০ ফুট। দুই লাখ কেজি ওজনের এই মুর্তিটির পুরোটাই তামা দিয়ে তৈরি।

স্ট্যাচু অব লিবার্টি

যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড ১৮৮৬ সালের ২৮ অক্টোবর স্ট্যাচু অব লিবার্টি উদ্বোধন করেন। যুক্তরাষ্ট্র সরকার ১৯২৪ সালে একে জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে ঘোষণা করেন। স্ট্যাচু অব লিবার্টির মুকুটে আছে সাতটি কাঁটা, যা সূর্য, সাত মহাদেশ বা সাত সমুদ্রকে নির্দেশ করে। এর পায়ের কাছে পড়ে থাকা ভাঙা শিকল যুক্তরাষ্ট্রের দাসপ্রথা রহিতকরণের প্রতীক।

৭. সিডনি অপেরা হাউস

১৯৫৯ সালে সিডনি অপেরা হাউসের নির্মাণ কাজ শুরু করে ১৯৬৩ সালের ২৬ জানুয়ারি অস্ট্রেলিয়া দিবসে উদ্বোধন করার কথা থাকলেও কাজ সমাপ্ত শেষ হতে হতে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত সময় লেগে যায়। ফলে ০৭ মিলিয়ন ডলার নির্মাণ ব্যয় ধরা হলেও সর্বমোট ব্যয় হয় ১০২ মিলিয়ন ডলার।

সিডনি অপেরা হাউস

প্রশান্ত মহাসাগরের পাড়ে প্রায় সাড়ে চার একর জায়গার উপর নৌকার পাল আকৃতির স্থাপনাটি সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর দিকপাল হয়ে। স্থাপনাটির দৈর্ঘ্য ৬০০ ফুট ও প্রস্থ ৩৯৪ ফুট। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে স্থাপনাটির সর্বোচ্চ স্থানটির উচ্চতা ২১৩ ফুট, যা প্রায় ২২ তলা ভবনের সমান উঁচু। এই হাউসটি বহুমুখী শিল্পকলা প্রদর্শনের মঞ্চ বলা যেতে পারে। এর মধ্যে আছে একাধিক মিলনায়তন ও অনুষ্ঠানের স্থান।

এসবের মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশে আছে কনসার্ট হল। এর ধারণক্ষমতা প্রায় ২ হাজার ৭০০ জন। এছাড়াও এতে রয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫০৭ আসনের অপেরা থিয়েটার, ৫৪৪ আসনের ড্রামা থিয়েটার, ৩৯৮ আসনের প্লে হাউস ও ৪০০ লোক একসঙ্গে কাজ করার মতো একটি স্টুডিও। খাবার জায়গা ও কেনাকাটার জন্য বেশ কিছু দোকানও আছে এই অপেরা হাউসে।

৮. মিশরের পিরামিড

মিশরের পিরামিড পৃথিবীর প্রাচীন সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম একটি বিস্ময়কর স্থাপনা। প্রাচীন মিশর শাসন করতেন ফারাও (প্রাচীন মিশরীয় শাসক বা রাজা) তাদেরকে কবর বা সমাধি দেয়ার জন্যই পিরামিড নির্মান করা হতো। ফারাওদের সমাধিস্থ করা হত পিরামিডের একেবারে কেন্দ্রে এবং পিরামিডের জটিল স্থাপত্যশৈলী দ্বারা এসকল সমাধিকে নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হতো।

মিশরের পিরামিড

মিশরীয়রা মনে করত ফারাওরা মৃত্যুর পর মৃতদের রাজা হিসেবে নতুন দ্বায়িত্ব পালন করেন। পিরামিড হল ফারাওদের পুর্নজন্মের প্রবেশ দ্বার। ফারাওদের মৃত্যুর পর যতদিন তাদের দেহ সংরক্ষণ করা যাবে ততদিন তারা স্বর্গে বাস করবে। সেজন্যই মৃত ফারাওদের দেহ মমি করে পিরামিডের ভেতরে সংরক্ষণ করা হত। সেই মমির সাথে দেয়া হতো অজস্র মণি, মুক্তা, হিরা জহরতসহ মহামূল্যবান সম্পদ।

এই সম্পদগুলোকে রক্ষা করার জন্য পিরামিডের ভিতর বেশ কঠিন গোলক ধাঁধার ফাঁদ পেতে রাখা হতো যেন অন্যকেউ এসব সম্পদ আত্নসাৎ করতে না পারে। মিশরে ছোটবড় ৭৫টি পিরামিড রয়েছে। পিরামিডের স্থাপত্যশৈলী এতোটাই জটিল ও দুঃসাধ্য যে আধুনিক বিশ্ব সেই প্রাচীন আমলের এই স্থাপত্য কীভাবে তৈরি করা হয়েছে সে ব্যাপারে সঠিক কোন ধারণাই চিন্তা করতে পারছে না। পিরামিডের নির্মাণ রহস্য এখনো পুরো পৃথিবীর মানুষের কাছে বিস্ময়।

৯. বারমুডা ট্রায়াঙ্গল

পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো অমিমাংসিত রহস্যগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আটলান্টিক মহাসগরের উত্তর-পশ্চিমাংশে ত্রিভুজাকৃতির একটি বিশেষ অঞ্চল। এই অঞ্চলের এক কোণে বারমুডা দ্বীপ আর অন্য দুই প্রান্তে মায়ামি বিচ ও পুয়ের্তে রিকোর সান জুয়ান এবং বাকি পাশে ফ্লোরিডা অবস্থিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে ১৯৪৫ সালের ০৫ ডিসেম্বর পাঁচটি টিভিএম অ্যাভেঞ্জার উড়োজাহাজ এবং একটি উদ্ধারকারী উড়োজাহাজ রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যায়।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল

সেই থেকে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল রহস্য কথাটি পৃথিবীব্যাপী প্রচলন শুরু হয়। এরপরও বেশ কিছু জাহাজ ও উড়োজাহাজ সেখানে নিখোঁজ হয়েছে। এই জাহাজ, উড়োজাহাজ রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়ার রহস্য এখনো অমিমাংসিত। সেই অঞ্চলে কম্পাস কাঁটা চুম্বকীয় উত্তর মেরু নির্দেশ করে যা ভৌগোলিক উত্তর মেরু থেকে প্রায় ১১০০ মাইল দূরে। ক্যারিবীয় অঞ্চলে এই পার্থক্য কম্পাস কাঁটায় প্রায় ২০ ডিগ্রি। ভৌগলিক এই অবস্থানের কারণে সেখানে চুম্বকীয় আবেশ কিংবা পানির ঘূর্ণনের বলের কারণে সেই স্থান অতিক্রম কালে নিখোঁজ হওয়া কোন জাহাজেরই অস্ত্বিত্ব খোঁজে পাওয়া যায় না। যা এক মহা বিস্ময়।

অনেকেই মনে করেন, এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গল শয়তানের ঘাঁটি, আবার কেউ কেউ ভাবেন ভিনগ্রহের প্রাণীদের প্রবেশদ্বার। সর্বপ্রথম এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গল আবিষ্কার করেন আমেরিকার নাবিক কলম্বাস। তার বর্ণনামতে, তার জাহাজের নাবিকেরা বারমুডা ট্রায়াঙ্গল পাড়ি দেবার সময় দেখেছিল আলোর নাচানাচি আর আকাশে অনেক ধোঁয়া। এছাড়া কলম্বাস আরো লিখেছেন যে, এই জায়গায় এসে তার কম্পাসও ভুল নির্দেশনা দিচ্ছিলো। আজ পর্যন্ত অসংখ্য জাহাজ এবং উড়োজাহাজ মিলিয়ে গেছে এই ট্রায়াঙ্গলে যার কোনো চিহ্ন আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয় এ পর্যন্ত ৫০টি বাণিজ্যিক জাহাজ ও ২০ টি বিমান হারিয়ে গেছে এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে। যাদের কোন অস্তিত্ব আজও অমিমাংসিত।

১০. পেত্রা নগরী

জর্ডানের প্রাচীন আরব নগরী পেত্রা বিশ্বের নতুন সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে অন্যতম। বর্তমান জর্দানের দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর ওয়াদি মুসার ঠিক পূর্বে হুর পাহাড়ের পাদদেশে এর অবস্থান। ৪০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত এটি ছিল নাবাতীয় রাজ্যের রাজধানী।পেত্রা নগরী মূলত একটি অত্যন্ত সুরক্ষিত দুর্গ ছিল। এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, সম্পূর্ণ এই নগরীটিই মূলত পাথরের তৈরি।

পেত্রা নগরী

নবাটায়েন সাম্রাজ্যের রাজা চতুর্থ আরেটাসের রাজধানী ছিল এই পেত্রা। আরব মরুভূমির ধারে অবস্থিত এই পেত্রা স্থানটিকে ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো দ্বারা বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। এটি একধরনের নাট্যশালা। জল বহন ও সংরক্ষণ প্রযুক্তিতে পারদর্শী নবাটাইনরা তাদের শহরে বড় বড় সুড়ঙ্গ ও জলধারক কুঠুরি নির্মাণ করেছিল। গ্রীক-রোমান শৈলির অনুকরণে তৈরী হয় এই নাট্যশালা। একটি নাট্যশালায় ৪,০০০ (চার হাজার) দর্শকের বসার ব্যবস্থা ছিল। এখানে পাথর খোদাই করা অবিশ্বাস্য মূর্তি, একটি ৪,০০০ (চার হাজার) আসনের অ্যামফিথিয়েটার এবং এল-দেইর আশ্রমের উপরে অবস্থিত ৪২ (বেয়াল্লিশ) মিটার উঁচু হেলেনীয় মন্দিরদ্বার রয়েছে। যেগুলি আজও মধ্য-পূর্ব এশিয়ার সংস্কৃতির উৎকৃষ্ট নিদর্শন করে।

পেত্রা এক সময় সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী নগরী ছিল। পরবর্তীতে রোমান শাসনের সময় রোমানরা সমুদ্র কেন্দ্রিক বাণিজ্য শুরু করলে পেত্রাদের আধিপত্য কমে যায় একইসাথে অর্থনৈতিক ভাবে পেত্রারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শতকে শহরটির কিছুটা উন্নতি সাধন হলেও, পরবর্তীতে পেত্রার প্রতিদ্বন্দ্বী শহর পামিরা পেত্রাদের অধিকাংশ বাণিজ্য দখল করে ফেললে পেত্রার গুরুত্ব একেবারেই কমে যায়। রোমান শাসনের সময় সমুদ্রকেন্দ্রিক বাণিজ্য পুরোদমে শুরু হলে পেত্রা দ্রুত ধ্বংস হতে শুরু করে। এভাবেই কালের গর্ভে প্রবেশ করে নিখোঁজ হয়ে যায় সংস্কৃতি, সম্পদ এবং ক্ষমতার একসময়ের সমৃদ্ধ নগর পেত্রা।

শখের গাড়ির সকল তথ্য অ্যাপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করতে এবং গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী ব্যবহার করতে পারেন। এটি একটি ভেহিক্যাল ট্র্যাকার সার্ভিস (VTS) ডিভাইস যা সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করেছে পাই ল্যাবস বাংলাদেশ লিমিটেড। প্রহরী – ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং সিস্টেমে রয়েছে অ্যাপের মাধ্যমে ইঞ্জিন লক/আনলক করার সুবিধা, গাড়ির লাইভ ট্র্যাকিং আপডেট দেখা, এবং ট্রাভেল হিস্টোরি চেক করা সহ আরও অনেক সুবিধা বিস্তারিত জানতে দেখুন প্রহরী প্যাকেজ সমূহ।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top