প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

পড়তে লাগবে: 5 মিনিট

গাড়ির ৭ টি পার্টস রিসাইকেল করে তৈরি করুন নান্দনিক সামগ্রী

গাড়িতে ব্যবহৃত পুরানো পার্টস রিসাইকেল করে গৃহস্থালি অথবা বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র উৎপাদন করতে পারেন।  কিছু পার্টস রিসাইকেল করে তো মেয়েরা নিজেদের জন্য গহনাও বানাতে পারেন । শুনতে অদ্ভুত হলেও সত্যি যে বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে, গাড়ির পুরানো পার্টস রিসাইকেল করে নতুন কিছু উৎপাদন করা যাচ্ছে। এভাবে কিন্তু  মানুষের  কর্মসংস্থানের জায়গায়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলে বেশ কিছু টিউটোরিয়াল ভিডিও দেখেও জানতে পারবেন কীভাবে ভাঙ্গা বা পুরাতন জিনিস থেকে নতুন আর কার্যকারী জিনিস বানানো সম্ভব। শৌখিন মানুষেরা তো ভিডিও দেখে ঘর সাজানোর জিনিসপত্রও বানিয়ে ফেলতে পারেন ।

অয়েল এবং অয়েল ফিলটারস

মাঝে মাঝে তেল পাল্টানোর সময় আমরা দেখতে পাই দোকানে পুরানো তেল এক জায়গায় সংগ্রহ করে রাখা হয়। পুরনো তেল ময়লা হতে পারে আর তেল যেখানে সেখানে ফেলে দিলে পানি ও মাটি দূষিত হতে পারে। এসব তেল কিন্তু খুব ভাল ভাবে পরিষ্কার করে আবার গাড়িতে কাজে লাগানো যায়। একই ভাবে তেলের ফিল্টার গুলোও পুনরায় ব্যবহার করা যায়। একটি ফিল্টারে আনুমানিক এক পাউন্ডের মত স্টীল থাকে । যদি কোন পুনরায় উৎপাদনের জায়গায় পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাওয়া ফিলটারগুলোকে নিয়ে যান তাহলে ফিল্টার থেকে তেল সরিয়ে নিয়ে নতুন করে কোন ধাতুর জিনিস তৈরি করতে পারেন । যেমন-ধাতুর তৈরি কোন বাসন বা ঘর সাজানোর কোন  শো-পিস।  তবে এই ফিল্টারগুলো কোথাও পুনরায় উৎপাদনে দেওয়ার আগে অবশ্যই ভাল প্লাস্টিকের সীল করা ব্যাগে নিয়ে যাবেন এতে পরিবেশ দূষণ হবার ভয় থাকবেনা।

ধাতুর তৈরি বিভিন্ন ধরনের পণ্য

ভাঙ্গা উইন্ডশিল্ড

অনেকে উইন্ডশিল্ড ভেঙ্গে গেলে  ঘরের কোনে রেখে দেন। কিন্তু এগুলো এভাবে ফেলে না রেখে পুনরায় ব্যবহার করতে পারেন।  ভাঙ্গা উইন্ডশিল্ডের সামনে ও পেছনে এক ধরনের গ্লাস প্রটেক্টর দিয়ে সিল করা থাকে। প্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে এই প্রটেক্টর দিয়ে খুব সহজেই গাড়ি থেকে গ্লাস খুলে ফেলা যায়। যেসব প্রতিষ্ঠান এসব গ্লাস পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করে তোলার কাজ করে তাদের সুবিধার্থে করা হয় এই সিল।  কিছু প্রতিষ্ঠান আবার চেষ্টা করে এ ধরনের গ্লাসের উপর থেকে ময়লা বা ভাঙ্গা চোরা ঠিক করে ফেলার। মোটরগাড়ির সামনের গ্লাস দিয়ে অনেক কিছুই বানাতে পারেন বা কোন রিসাইকেল প্রতিষ্ঠান দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন  । যেমন –মেঝের টাইলস, মেয়েদের বিভিন্ন  জুয়েলারি , গ্লাসের বোতল, কাউন্টারস, ওয়ার্কটপস, কংক্রিট ব্লক, ফাইবার গ্লাসের ভেতরের অংশ ইত্যাদি । এমনকি মূল গ্লাসটি যে প্লাস্টিক প্রটেক্টর দিয়ে মোড়ানো  থাকে তা দিয়েও কার্পেটের গ্লু এবং অন্যান্য তৈজসপত্র বানিয়ে নিতে পারেন।

উইন্ড শিল্ড থেকে তৈরি কাঁচের বোতল

টায়ার রিসাইকেল

গাড়ির টায়ারগুলো হয় অপরিশোধিত, সেটা আমরা সবাই জানি। টায়ারগুলো যদি পুনরায় ব্যবহারযোগ্য বানানোর কাজে কারখানায় না নিয়ে সেখানে সেখানে ফেলে রাখেন তাহলে এতে বাসা বাঁধবে নানা ধরনের পোকামাকড় ।  টায়ার পোড়ালে অযথা ধোয়ার সৃষ্টি হবে এবং পরিবেশ দূষিত হবে চরমভাবে। যদি টায়ার মোটামোটি ভাল থাকা অবস্থায় খুলে ফেলেন তাহলে হয়তো অন্য গাড়িতে ব্যবহার করা যাবে বা নতুন কোন টায়ারের সাথে যুক্ত করে নিতে পারবেন। যারা এসব পুরানো জিনিস কেনে তারা পুরানো টায়ার খুব মূল্যবান বস্তু হিসেবে লুফে নেয়।  যদিও ফেলে দেওয়া টায়ার সরাসরি  কোন গাড়ির কাজে লাগেনা তবু টায়ার পুড়িয়ে জ্বালানী,  বাচ্চাদের সাতার শেখার টিউব, বড় রাস্তায় পিচ ইত্যাদি কাজ করা যায়। তাই টায়ারগুলো শুধু শুধু যেখানে সেখানে ফেলে না রেখে নতুন কিছু বানানোর জন্য একত্রিত করে কোন রিসাইকেল কারখানায় দিয়ে দিতে পারেন।

বাচ্চারা সাতার শেখার জন্য ব্যবহার করতে পারে পুরানো টায়ার

ইঞ্জিন এবং ইঞ্জিনের পার্টস

ইঞ্জিন এবং ইঞ্জিনের পার্টসগুলো অনেক দীর্ঘস্থায়ী হয় তাই এগুলো খুলে ফেলার পর আবার নতুন করে শিল্পজাত  করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন । ইঞ্জিন ভেঙ্গে, পরিষ্কার করে পুনরায় কর্মোপযোগী করে তোলে অনেক প্রতিষ্ঠান এবং এসব ইঞ্জিন পুনরায় কোন যানবাহনে ব্যবহারও করা যায়। প্রযুক্তি ও আধুনিক উপকরন ব্যবহার করে অনেক মেকানিক এসব ভাঙ্গা ও নষ্ট ইঞ্জিন নতুন করে  বানায় যার স্থায়িত্ব আগের থেকে কয়েকগুন বেড়ে যায় এবং এগুলো পরিবেশবান্ধবও হয়। এসব ইঞ্জিন দামে সস্তা হয় এবং ব্যবহারে পরিবেশের ক্ষতিও কম হয়। কিছু গাড়ির মডেলের সাথে কিছু পার্টস থাকে যেগুলো অন্য গাড়িতে কাজ করেনা তবে স্পার্ক প্লাগস, ট্রান্সমিশন, রেডিয়েটর, কনভার্টার ইত্যাদি এগুলো পুনরায় নির্মাতাদের কাছে খুবই মূল্যবান এবং এগুলো নষ্ট হয়ে গেলে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করে তোলা  সম্ভব। কাজেই ব্যবহৃত ইঞ্জিন ফেলে না রেখে কোন পুনর্নির্মাণ কারখানায় দিয়ে দিন।

ভাঙ্গা বা নষ্ট হয়ে যাওয়া ধাতব

ধাতুর তৈরি যেকোন কিছুই রিসাইকেল করা সম্ভব। একটি অকেজো বা বন্ধ গাড়ি যখন পুনরায় ব্যবহার করার জন্য কারখানায় আনা হয় তখন তাতে ধাতব অনেক কিছুই পাওয়া যায় ।   দরজা , জানালার প্রান্তগুলো হয় অ্যালুমিনিয়ামের  সাইড মিরর, হেডলাইটের বেযেল, ফেন্ডার এবং স্টিলের চাকা সবকিছুতেই মেটাল/ ধাতু পাওয়া যায়। গাড়ির প্রত্যেকটা ধাতুর তৈরি পার্টস আগুনে গলিয়ে ফেলা হয় এবং নতুন কিছু তৈরি করা হয় । কিছু কারখানায় পুরানো জিনিস কেনে তারা ধাতুর ওজন মেপে নেয় ও  স্বল্প মূল্যে  কিনে নেয়। তাদের কাছে এসব পার্টস বিক্রি করে দিতে পারেন বা তাদের দিয়ে নতুন কিছু তৈরি করিয়ে নিতে পারেন।

মেটালের তৈরি শো- পিস

প্লাস্টিকের অংশ

অনেকেই হয়তো জানেন না যে গাড়ির অনেক গুরুত্বপূর্ণ পার্টস থাকে যেগুলো প্লাস্টিকের তৈরি হয়। ড্যাশবোর্ড থেকে শুরু করে গ্যাস ট্যাংক অনেক কিছুই পুনরায় ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক উপকরণ  দিয়ে বানানো হয়। লাইট, বাম্পার এবং গাড়ির ভেতরের অনেক জিনিস গাড়ি থেকে সম্পূর্ণ খুলে ফেলা যায় এবং গলিয়ে পুনরায় নতুন কিছু বানানো যায়। আর যদি এই পার্টসের অবস্থা ভাল থাকে তাহলে এগুলো যেকোন রিপেয়ার দোকানে বিক্রি অথবা  পাল্টে নিতে পারেন।

ব্যাটারি ও অন্যান্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ

খোলা জায়গায় গাড়ির ব্যাটারি ও অন্যান্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ ফেলে রাখবেন না । ব্যাটারির ভেতরকার কেমিক্যাল পরিবেশ ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও দূষিত করে। অনেক দেশে পুরানো ব্যাটারি আবার ব্যবহারযোগ্য করার জন্য দোকান থেকেই আবার কারখানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিছু দেশে মজার আইন হচ্ছে, পুরানো ব্যাটারি নিয়ে গেলে উপহারস্বরূপ নতুন ব্যাটারি দেওয়া হয়। যেসব গাড়ির ব্যাটারির অবস্থা ভাল থাকে, যেগুলো রিসাইকেলের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। ব্যাটারি হ্যামারমিলে ভেঙ্গে ছোট টুকরা করা হয়। এই টুকরাগুলো একটি কন্টেইনারে রাখা হয় যেখানে ভারী উপাদান লিডের মধ্যে ডুবিয়ে রাখা হয়। আর উপরে প্লাস্টিক দেওয়া থাকে যাতে সহজে ব্যাটারি বের করা যায়। পরে প্লাস্টিক গলিয়ে সুন্দর ব্যাটারির বক্স বানানো হয়। সীসাগুলো গলে নিচের দিকে নামে। ব্যাটারির প্লেট হিসেবে কাজ করে তাই উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান পুরানো ব্যাটারির এসিড দিয়ে সোডিয়াম সালফেটে রূপান্তর করে যা পরে ডিটারজেন্ট, গ্লাস এবং বিভিন্ন টেক্সটাইলে ব্যবহার করা হয়।

পুরানো প্লাস্টিক থেকে তৈরি ব্যাটারি রাখার বক্স

গাড়ির এমন মজার ও প্রয়োজনীয় তথ্যের জন্য পড়ুন প্রহরীর ওয়েবসাইট পেজের টিপস এন্ড ট্রিক্স সেকশনে অথবা প্রহরীর ফেসবুক পেজে । জেনে নিন কীভাবে গাড়ির পার্টসের যত্ন নিতে হয়। গাড়ির সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য  গাড়িতে ইন্সটল করুন প্রহরী ভেহিকেল ট্র্যাকিং সার্ভিস । নিজে নিরাপদে থাকুন , গাড়িকে রাখুন নিরাপদে।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top