প্রহরী

decoration accessories for new car
পড়তে লাগবে: 5 মিনিট

নতুন গাড়ি সাজানোর ১২টি এক্সেসরিজ!

অনেকদিন কষ্টের টাকা জমিয়ে কিংবা সাহস করে ব্যাংক লোন নিয়ে শখের গাড়িটি কী কিনেই ফেলেছেন? এবার তাহলে মনের মতো করে শখের গাড়িটি সাজানোর পালা। ভাবছেন, এতো ঘটা করে গাড়ি সাজাতে হবে কেন! গাড়ি তো আর বাড়ি নয়! কিন্তু এখনকার সময়ে একটা গাড়ি, বাড়ি থেকেও কম কিসের? এই যানজটের দুনিয়ায় গাড়িতে কতটা সময় কাটানো হয় নিজেই ভেবে দেখুন। চলমান পথের এই ভ্রাম্যমাণ নীড়কে মনের মতো করে রুচিশীল উপায়ে সাজানোই যায়, তাই না? আজকে জানবো নতুন গাড়ি সাজানোর ১২টি এক্সেসরিজ এর খুঁটিনাটি নিয়েই।

নতুন গাড়ি সাজানোর এক্সেসরিজ কেনার আগে কী কী বিষয় মাথায় রাখা জরুরি?

  • প্রথমেই মনে রাখতে হবে, গাড়ির ভেতরে জায়গা বেশ কম। এই সীমিত জায়গার কথা মাথায় রেখেই এমন সব জিনিস কিনতে হবে, যা ভেতরের যায়গা কমাবে না, বরং গাড়ির সৌন্দর্য বাড়ানোর পাশাপাশি কাজেও লাগবে।
  • সিট কভার পছন্দ করার সময় ময়লার ব্যাপারটা মাথায় রাখতে হবে। এমন রঙ ও কাপড় বাছাই করতে হবে, যেটায় দ্রুত ময়লা আটকাবে না, আটকালেও চোখে লাগবে না।
  • শোপিস বা অন্য কোন অনুষঙ্গ কেনার সময় খেয়াল করতে হবে যে, সেটায় ধুলোবালি আটকাবে কিনা, কিংবা আটকালেও সহজে পরিষ্কার করা যাবে কিনা।
  • গাড়ির পেছন দিকে ছোট কুশন, বালিশ বা সফট টয় রাখলে, নিয়মিত সেগুলোর ধুলোবালি ঝাড়তে হবে। প্রয়োজনে ধুতেও হবে। নয়তো সৌন্দর্য বৃদ্ধির বদলে জমাট বাঁধা ধুলোবালিতে হাঁচি-কাশি কিংবা নিশ্বাসের সমস্যা পর্যন্ত হতে পারে।
  • অনেকে গাড়ির জানালায় কালো কাঁচ পছন্দ করেন। তবে পছন্দ করলেই তো হবে না, কালো কাঁচ লাগানোর উপর বাংলাদেশে আছে কড়া নিষেধাজ্ঞা। মাথায় রাখতে হবে এই ব্যাপারটাও।

নতুন গাড়ি সাজানোর যত জিনিসপাতিঃ

১. ফ্লোর ম্যাটঃ

ফ্লোর ম্যাট গাড়ির ভেতর ময়লা,কাদা, পানি সরাসরি পড়তে দেয় না। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, গাড়ির যত্নে ফ্লোর ম্যাটের গুরুত্ব কত বেশি। প্রয়োজনের এই জিনিসটাই ফ্যাশনেবল দেখে কিনলেই কিন্তু প্রয়োজন পূরণের সাথে সাজিয়েও ফেলতে পারেন গাড়ির ফ্লোরটা। কার্পেট ফ্লোর ম্যাট, রাবার ফ্লোর ম্যাট, থ্রি-ডি ফ্লোর ম্যাট, প্রিমিয়াম ফ্যাব্রিক ফ্লোর ম্যাটসহ নানান ধরণের ফ্লোর ম্যাট পাওয়া যায় বাজারে।

car floor mats

 

২. সিট কভারঃ

গাড়ি ব্যবহার করলে সিট কভারের ব্যবহার তো অপরিহার্য। এই অপরিহার্য অনুষঙ্গটাই যদি হয় নজর কেড়ে নেয়ার মতো আকর্ষণীয়? ভিন্ন রুচি ও পছন্দের মানুষের চাহিদার সাথে মানানসই বাজেট, কাপড়, রঙ ও মানের সিট কভার বাজারে পাওয়া যায় রেডি মেড ও গজ উভয় ভাবেই।

car seat cover

 

৩. স্টিয়ারিং কভারঃ

ড্রাইভিংকে আরামদায়ক করতে স্টিয়ারিং কভারের তুলনা নেই। চামড়ার কিংবা সিনথেটিকের, দেশি-বিদেশি নানারকম স্টিয়ারিং কভারও যে কেউ কিনতে পারেন নিজের পছন্দ, আরাম ও বাজেটের উপর নির্ভর করে ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইন ও মানের।

car steering wheel cover

 

৪. মোবাইল স্ট্যান্ড/হোল্ডারঃ

গাড়ি চালানোর সময় কল বা মেসেজ আসলে পকেট বা ব্যাগ থেকে বের করে মোবাইল দেখা, কথা বলা বড়ই মুশকিল। এই সমস্যার সমাধান হতে পারে ড্যাশবোর্ডে কিংবা উইন্ডোতে সেট করা সুন্দর একটি মোবাইল স্ট্যান্ড বা হোল্ডার। মোবাইল হোল্ডার সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে যখন প্রয়োজন হয় গাড়ি চালাতে চালাতে জিপিএস বা গুগল ম্যাপ দেখার। এছাড়াও সহজে কল রিসিভ কড়া, কল কেটে দেয়া, কিংবা ড্রাইভ করতে করতে জরুরি কথা সারা, এইসবই সহজ হয়ে যায় গাড়িতে সুন্দর একটি মোবাইল স্ট্যান্ড হোল্ডার থাকলে। যদিও গাড়ি চালানো অবস্থায় মোবাইলে কথা বলা যথাসম্ভব পরিহার করা উচিত।

car phone mount

 

৫. কার চার্জারঃ

গাড়িতে উঠে দেখলেন মোবাইলের চার্জ শেষের দিকে, অথচ বাসায় গিয়ে মোবাইল চার্জ করে আসবেন সেই উপায়ও নেই। এইধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যার সমাধানও চাইলে রাখতে পারেন গাড়িতেই, কার চার্জারের রূপে। ইউএসবি পোর্ট আছে এমন যে কোন গাড়িতেই ব্যবহার করা যাবে এটি।

car usb charger

 

৬. কার পার্ফিউমঃ

গাড়ির ভেতরের পরিবেশকে সুগন্ধযুক্ত ও সতেজ রাখার জন্য গাড়িতে পার্ফিউমের ব্যবহার অনেকটাই প্রয়োজনীয়। পার্ফিউমের স্প্রে বোতল ছাড়াও ড্যাশবোর্ডে, এসি ভেন্টে আটকে থাকে ও সুগন্ধ ছড়ায় এমন ছোট বোতল ইদানিং বেশি ব্যবহার হচ্ছে। এগুলো বিভিন্ন রঙ, ফুল, ফল, পশুপাখিসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় আকারের পাওয়া যায়, যা সুগন্ধ ছড়ানোর পাশাপাশি শোপিসের মতো শোভাবর্ধনের কাজও করে।

car air freshener

 

৭. নেক পিলোঃ

দুরের লম্বা জার্নিতে বসে থাকতে থাকতে ঘাড়ে, কাধে ব্যাথা অনেকেরই হয়। তাদের জন্য একটি আরামদায়ক সঙ্গী হচ্ছে এই নেক পিলো। ঘোড়ার খুরের মতো আকৃতির একধরনের বালিশ, যার মাঝের ফাকায় মাথা ঢুকিয়ে দিয়ে বিশ্রাম দেয়া যায় মাথা ও ঘাড়কে। লম্বা জার্নিতে নেক পিলো ঘাড়ে জড়িয়ে ঘুমালে ঘাড় অপ্রস্তুত অবস্থায় উল্টাপাল্টা বেঁকে ব্যাথা পাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে না। বিভিন্ন দাম ও মানের রংবেরঙের নেক পিলো পাওয়া যায় বাজারে।

car neck pillow

 

৮. ব্যাকপেইন রিলিফ কুশনঃ

অনেক্ষন ধরে গাড়ি চালালে পিঠে ও কোমরে ব্যাথা হতে পারে। আর যাদের আগে থেকেই আছে এমন ব্যাথার সমস্যা, তাদের জন্যও লম্বা সময় ড্রাইভ করা হয় বেশ কষ্টকর। এরকম সমস্যায় আরাম পেতে গাড়িতে রাখতে পারেন ব্যাকপেইন রিলিফ কুশন। এটি দেখতে জালিযুক্ত ও পিঠের আকারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাঁকানো, রাবারের সাহায্যে আঁটকে রাখা যায় গাড়ির সিটের সাথে।

car seat cushions for back pain

 

৯. টিস্যু বক্স কভারঃ

গাড়িতে টিস্যু বক্সের দরকার লাগেই। এক্ষেত্রে বাজার থেকে কেনা গতানুগতিক কাগজের টিস্যু বক্সটিকে যদি ফ্যাশনেবল লুক দেয়া যায়, তাহলে বদলে যায় আসলে গাড়ির ভেতরের চেহারাটাই। চামড়া, কাপড়, কাঠসহ নানান ধরণের, নানান দামের টিস্যু বক্স কভার কিনতে পাওয়া যায়। সেখান থেকেই কিনে নিতে পারেন নিজের রুচির সাথে মানানসই একটি ফ্যাশনেবল টিস্যু বক্স কভার।

tissue box cover for car

 

১০. কুশন ও সফট টয়ঃ

বিশেষ করে ছোট প্রাইভেট কারের পেছনের ব্যাক উইন্ডোর সামনের ছোট্ট খালি অংশটায় অনেকে ছোট বালিশ, ফ্যাশনেবল কুশন কিংবা সফট টয় রাখতে পছন্দ করেন। এগুলো গাড়ির সৌন্দর্য বাড়ানোর পাশাপাশি কখনো দরকারের সময় কাজে লাগতে পারে মাথা বা পিঠের পেছনে রেখে আরাম করতে কিংবা ছোট বাচ্চাকে ঘুম পাড়াতেও। এগুলো কেনার সময় মাথায় রাখতে হবে গাড়ির আকার ও পেছনে জায়গার পরিমাণ কেমন।

soft toys in the back window of a car

 

১১. মিরর হ্যাঙ্গিংঃ

গাড়ির সামনের আয়নায় একেকজন একেকধরনের অনুষঙ্গ দিয়ে সাজাতে পছন্দ করেন। কার হ্যাঙ্গিং একসেসরি হিসেবেই পাওয়া যায় বাজারে নানান কিছু। অনেকে আবার আলাদা করে কোন একসেসরি দিয়ে না সাজিয়ে নিজের কোন পছন্দের জিনিসও ঝুলিয়ে রাখতে ভালোবাসে। সুন্দর চাবির রিং, ছোট পুতুল, শোপিস, প্রিয়জনের ছবি, ধর্মীয় নাম, উক্তি কিংবা তসবিহ দিয়েও সাজানো যায় গাড়ির সামনের এই অংশটা।

car mirror hanging accessories

 

১২. সিটব্যাক স্টোরেজঃ

সাধারনত গাড়ির সামনের দুই সিটের পেছনেই একটি করে স্টোরেজের ব্যবস্থা থাকে। তবে মাত্র দুইটি পকেট অনেকের কাছে কম মনে হতে পারে। কিংবা জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখা কষ্টকর মনে হতে পারে। এইক্ষেত্রে কিনে নিতে পারেন বেশি পকেটসহ সিটব্যাক স্টোরেজ। যেখানে আলাদা আলাদা জিনিস গুছিয়ে রাখতে পারেন আলাদাভাবে, খুজে পেতেও হবে সুবিধা।

car seat back storage bag

 

নিজের গাড়ি মনের মতো করে সাজিয়ে রাখতে পারলে যেমন বেশ লাগে, দেয় উন্নত রুচির পরিচয়ও। গাড়িকে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপনের জন্য যেসব অনুষঙ্গ নিয়ে আজকে আলোচনা করলাম এগুলো সহ আরো অনেক কিছু পাবেন দেশের বাজারেই। ঢাকার বাংলামোটর, মগবাজার, মহাখালীর কার পার্টস মার্কেটসহ বেশ কয়েকটি জায়গাতেই জমজমাট গাড়ির সাথে জড়িত বিভিন্ন জিনিসের বাজার। আর সাথে অনলাইন তো আছেই। আর হ্যাঁ নতুন গাড়ি সাজালেই হবে না, সঠিক সময় সার্ভিসিং করা অত্যন্ত জরুরী। এই বিষয়ে আমাদের একটি গাইডলাইন আছে এই লিংক ভিজিট করে পড়তে পারেন ব্লগ পোস্টটি। শখের গাড়ি সাজাতে শো-পিস কিংবা এক্সেসরিজ শপ লিস্ট জানতে ভিজিট করুন এই ব্লগ পোস্টটি

শখের গাড়ির সকল তথ্য অ্যাপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করতে এবং গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী ব্যবহার করতে পারেন। এটি একটি ভেহিক্যাল ট্র্যাকার সার্ভিস (VTS) ডিভাইস যা সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করেছে পাই ল্যাবস বাংলাদেশ লিমিটেড। প্রহরী – ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং সিস্টেমে রয়েছে অ্যাপের মাধ্যমে ইঞ্জিন লক/আনলক করার সুবিধা, গাড়ির লাইভ ট্র্যাকিং আপডেট দেখা, এবং ট্রাভেল হিস্টোরি চেক করা সহ আরও অনেক সুবিধা বিস্তারিত জানতে দেখুন প্রহরী প্যাকেজ সমূহ।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top