প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

পড়তে লাগবে: 4 মিনিট

ঈদযাত্রার প্রস্তুতি: গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে খেয়াল করেছেন তো? (প্রথম-পর্ব)

পরিবারের সবাই একত্রিত হয়ে ঈদ উদযাপন করার আনন্দই আলাদা। ঈদ উদযাপন করতে সবারই সচরাচর গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হয়। তখন হয়তো অনেকেই নিজে কিংবা ব্যক্তিগত ড্রাইভারকে দিয়ে গাড়ি চালান। তো সেক্ষেত্রে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে ঈদ যাত্রার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া উচিত। আর সেসময় যাত্রা শুরুর আগে থেকেই কয়েকটি গুরত্বপূর্ণ বিষয়ে খেয়াল করা আবশ্যক। আসুন দেখে নেয়া যাক কি কি বিষয়ে খেয়াল করা দরকার।

গাড়ি ধুয়ে পরিষ্কার করে রাখুন

আপনার গাড়ির যত্ন আপনি নিজেই নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে নিজ হাতে গাড়ি ধুয়ে পরিষ্কার করে রাখতে পারেন। গাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে তাতে চড়তেও আরাম লাগবে। আর দূরপাল্লার ভ্রমণে সবসময় প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো আগেই হাতের কাছে রাখুন। যাত্রাপথে দরকার হতে পারে এমন গুরুত্বপূর্ণ জিনিস, আগে থেকেই একটি ব্যাগে ভরে গাড়িতে রাখুন।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রেডি রাখুন

কার ড্রাইভ করার সময় অবশ্যই ড্রাইভিং লাইসেন্স সাথে রাখুন। গাড়ি চালানোর সময়  যেসব কাগজ পত্র লাগে তা সবসময় সাথে রাখাটা উচিৎ। আর তা না হলে আইনি জটিলতায় পড়বেন। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে ড্রাইভিং লাইসেন্স অবশ্যই থাকা উচিত। আর যদি তা না থেকে থাকে, তবে তা দ্রুত বিআরটিএতে আবেদন করে তৈরি করে নিন।

গাড়িতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফুয়েল নিয়ে নিন

দূরপাল্লার ভ্রমণে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যে, আপনার গাড়িতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফুয়েল আছে কিনা। এটা খেয়াল না করলে মাঝপথে গাড়ি থেমে গেলে সমস্যায় পড়তে পারেন। সুতরাং যাত্রা শুরুর আগেই জেনে নিন গাড়িতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফুয়েল আছে কি না। এক্ষেত্রে গাড়িতে ভেইকেল ট্র্যাকার ইউজ করলে সহজেই তা জেনে নিতে পারবেন। এর ফলে আপনার গাড়িতে কতটুকু ফুয়েল খরচ হয়েছে কিংবা কতটুকু অবশিষ্ট আছে সবকিছুই মুঠোফোনের মাধ্যমে জেনে যাবেন।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    গাড়ির ফিটনেসে ঠিক আছে কিনা পরীক্ষা করে নিন   

    আপনার গাড়ির ফিটনেস সংক্রান্ত কোন সমস্যা থাকলে তা দ্রুত ঠিক করে ফেলুন। ভাঙ্গা বা অস্বচ্ছ মিরর, নষ্ট হেডলাইট, ত্রুটিপূর্ণ উইপার, ব্রেক বা ইঞ্জিনের সমস্যা ইত্যাদি থাকলে তা ঠিক করে ফেলুন। গাড়ির ফিটনেস জনিত সমস্যা থাকলে তা ঠিক না করা পর্যন্ত, রোডে বের করা উচিত নয়। এতে মাঝ রাস্তায় গাড়ি বিকল হয়ে পড়তে পারে কিংবা দুর্ঘটনার মুখোমুখিও হতে পারে। সুতরাং বিপদে পড়তে না চাইলে আগে থেকেই এই বিষয়ে নজর দিন।

    গাড়ির টায়ারের অবস্থা চেক করুন

    দুরের যাত্রায় গাড়ির অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি টায়ারের দিকেও নজর দিন। টায়ার নষ্ট  হয়ে গেলে  বা  পুরাতন  হয়ে  গেলে  দ্রুত তা চেঞ্জ করে ফেলুন। গাড়ির  টায়ারের  ট্রেড  ৪/৩২  ইঞ্চি  হয়ে গেলেই তা রিপ্লেস করে ফেলা উচিৎ। আর টায়ারের ট্রেড যদি ২/৩২ ইঞ্চি হয়েই যায়, তবে তা ব্যবহার করা অনেক বেশি বিপদজনক। এর ফলে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অনেক গুণ বেড়ে যায়। সেজন্য সময় থাকতেই গাড়ির টায়ারের বর্তমান অবস্থা ভালভাবে চেক করে দেখুন।

    ড্রাইভারের শারীরিক সুস্থতার ব্যাপারে খোঁজ খবর রাখুন   

    আপনার গাড়ির চালক আপনার পরিবারেই একজন সদস্য। সেজন্য তার দেখভাল করাও আপনার দায়িত্ব। যেকোন দূরপাল্লার ভ্রমণের আগে জেনে নিন তিনি শারীরিক ভাবে সুস্থ আছেন কিনা। কারণ এক্ষেত্রে তার আপনার সবারই নিরাপত্তার বিষয়টা জড়িত। অসুস্থ অবস্থায় কখনোই ড্রাইভিং করা উচিত নয়। এতে বরং দুর্ঘটনার আশঙ্কা অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই ড্রাইভার অসুস্থ থাকলে তার সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।

    সড়কের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ খবর রাখুন  

    আপনি হয়তো অনেক দিন পর গ্রামের বাড়ি যাবেন। সেক্ষেত্রে যে সড়ক দিয়ে যাবেন, সেই পথের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে নিন। কিংবা দরকার পড়লে বিকল্প কোন রাস্থায়ও যেতে হতে পারে। সুতরাং সেদিকেও খোঁজ-খবর রাখতে পারেন। অনেক সময় রাস্থা সংস্কার, সেতু এবং কালভার্ট নির্মাণের কাজ চলে। যার ফলে সাময়িকভাবে যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটে। তাই পারলে আগে থেকেই এইসব ব্যাপারে খোঁজ খবর নিতে চেষ্টা করুন। তাহলে আর যাত্রাপথে অসুবিধা কিংবা ভোগান্তির মুখেও পড়বেন না।

    গাড়িতে ফার্স্ট এইড বক্স রাখুন

    যেকোন সময় বিপদে পড়তে পারেন আর তাইতো সদা সতর্ক থাকা উচিত। সেক্ষেত্রে গাড়িতে সবসময় একটি প্রাথমিক চিকিৎসার বাক্স রাখুন। বিভিন্ন ফার্মেসিতে ফার্স্ট এইড বক্স পাবেন। আর না হলে অনলাইনে জেনে নিজেই একটি বানিয়ে নিতে পারেন। একটি বাক্সে ব্যান্ডেজ, এন্টিসেপটিক ক্রিম, জ্বর, মাথা ব্যথার ট্যাবলেট, এন্টাসিড ট্যাবলেট কিংবা পেটের পীড়ার ওষুধ ইত্যাদি রাখতে পারেন। এছাড়াও হার্টের, কিডনির কিংবা শ্বাসকষ্টের পেশেন্টের প্রয়োজনীয় সব ওষুধ সাথে নিতে কখনোই ভুলবেন না। এসব প্রয়োজনীয় ওষুধ কিংবা দরকারি জিনিসগুলো সাথে রাখলে দেখবেন তা বিপদের সময় কাজে লেগেছে।

    মোবাইল ফোনের চার্জার এবং পাওয়ার ব্যাংক হাতের কাছেই রাখুন      

    বর্তমান সময়ে স্মার্টফোনের বহুবিধ ব্যবহার আছে। কথা বলা থেকে শুরু করে, ছবি তোলা, গান শোনা, নেট ব্রাউজ, গুগল ম্যাপের ব্যবহার ইত্যাদি তো আছেই। এছাড়া গাড়ির ক্ষেত্রেও স্মার্টফোনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার আছে। অনেকসময় দেখা যায় দ্রুতই মুঠোফোনের ব্যাটারির চার্জ শেষ হয়ে যায়। আর তাইতো যাত্রা শুরুর আগে মোবাইলের চার্জার, পাওয়ার ব্যাংক ইত্যাদি গুছিয়ে রাখুন। এছাড়াও যাদের চোখের সমস্যা আছে, তারা সাথে বাড়তি চশমা রাখতে পারেন। এসব ছোটখাটো ব্যাপার আগে থেকে খেয়াল করলে, তা প্রয়োজনের সময় কাজে দিবে।

    অনেকসময় ছোট ছোট সতর্কতামূলক পদক্ষেপে অনেক বড় সমস্যা এড়ানো যায়। সেক্ষেত্রে একটু মনোযোগী আর সচেতন হওয়া দরকার। আপনার ঈদ যাত্রা নিরাপদ এবং নির্বিঘ্ন করতে আজ থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করুন।

      গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

      Share your vote!


      এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
      • Fascinated
      • Happy
      • Sad
      • Angry
      • Bored
      • Afraid

      মন্তব্যসমূহ

      Scroll to Top