প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

পড়তে লাগবে: 5 মিনিট

একজন সুনাগরিকের গাড়ি ড্রাইভিং গুণাবলী

নিরাপদ সড়ক এবং সড়কে নিরাপদ গাড়ি ড্রাইভিং এর ব্যপারটি হালকাভাবে নেয়ার মতো কোন বিষয় না। বিষয়টি যেমন একজন চালকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তেমনিভাবে যাত্রী এবং সড়কে চলাচলকারী সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার বটে। একজন সুনাগরিক হিসেবে আমাদের সকলেরই উচিৎ মাঝে মাঝে ট্রাফিক আইন এবং নিয়ম নীতিমালার দিকে চোখ বুলিয়ে নেয়া।

আপনি যদি মনে করেন, সড়কে নিরাপদ চলাচলের জন্য ট্রাফিক আইন এবং নিয়মনীতিমালা শুধুমাত্র শিশুদের শেখানো উচিৎ এবং তাদেরকেই বারবার মনে করিয়ে দেয়া দরকার; তাহলে আপনার ধারনায় সামান্য ভুল আছে। তারাই রাস্তাঘাটে কম দুর্ঘটনার শিকার হন, যারা নিয়মিত ট্রাফিক আইন এবং নিরাপদে চলাচল করার জন্য প্রয়োজনীয় টিপস মেনে চলেন।

অনেকেই আছেন, যারা অনেকদিন ধরে গাড়ি ড্রাইভ করেন বিধায় মনে করেন তারা সব ট্রাফিক আইন এবং ড্রাইভিং নিয়ম জেনে বসে আছেন। এবং ফলশ্রুতিতে তারা মাঝে মাঝে এইসব ড্রাইভিং সেফটির কথাটি ভুলেও যান। কিন্তু আমাদের মনে রাখা উচিৎ, রাস্তায় বেশিরভাগ দুর্ঘটনার পেছনে অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস।

একজন সুনাগরিক হিসেবে আপনার উচিৎ এমন ভাবে চলাফেরা করা যা অন্যদের জন্য উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। সবাই যেন বলতে পারে, আপনি খুব সুন্দরভাবে নিয়ম মেনে রাস্তায় গাড়ি ড্রাইভ করে থাকেন। মনে রাখবেন আপনি যখন আপনার সন্তান কিংবা পরিবারের কাউকে পাশে বসিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করেন তখন তারা আপনাকে দেখেই শিখতে থাকে কীভাবে রাস্তায় সুনাগরিকের মতো গাড়ি চালাতে হয়।

অতএব, আপনি যদি আজ অফিসে বা কোথাও পৌঁছাতে দেরি হয়ে যাচ্ছে বিধায় ট্রাফিক আইন অমান্য করেন, আপনাকে অনুসরণ করা মানুষটিও আপনার মতো আইন অমান্য করা শিখে যাচ্ছে। তাই আপনার উচিৎ সবসময় ট্রাফিক আইন মান্য করা।

সিটবেল্ট বেঁধে গাড়ি চালান

গাড়ি ড্রাইভ করার সময় অবশ্যই সিটবেল্ট বেঁধে তারপর গাড়ি ড্রাইভ করবেন। আর গাড়িতে যদি ৪-৮ বছর বয়সী কোন বাচ্চা থাকে তাহলে অবশ্যই বুস্টার সিট ব্যবহার করে তাদের সিটবেল্ট বাঁধার ব্যপারটি নিশ্চিত করবেন। ১২ বছর বয়সের নিচে কোন শিশুকে গাড়ির সামনের সিটে বসতে দেয়া উচিৎ নয়।

গাড়ি ড্রাইভিং ও মাল্টিটাস্কিং একসাথে করবেন না

আপনি কি একই সাথে গাড়ি ড্রাইভ, গান শোনা, স্যান্ডুইচে কামড় দেয়া আর ফোনে কথাবলা চালিয়ে যান? যদি এই অভ্যাস থেকে থাকে তাহলে আপনার উচিৎ অতি দ্রুতই এই অভ্যাস ত্যাগ করা। গাড়ি ড্রাইভ করার সময় মাল্টি টাস্কিং করলে আপনি যতটা না সুপারহিউম্যান হয়ে ওঠেন তার চাইতেও বেশি বিপদকে ডেকে আনেন। কারণ গাড়ি ড্রাইভিং এর সময় একাধিক কাজ একত্রে করলে তা আপনাকে মানসিকভাবে ড্রাইভ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে। এর ফলে শুধু যে আপনি নিজে বিপদের সম্মুখীন হবেন তা কিন্তু নয়, গাড়িতে থাকা আপনার পরিবারও বিপদের সম্মুখীন করে দিচ্ছেন।

মদ্যপ বা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালাবেন না

প্রতি বছর পৃথিবীতে যত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে তার একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে মদ্যপান বা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি ড্রাইভ করা। বিশেষ করে যারা তরুণ তারা বুঝতেও পারেনা যে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি ড্রাইভ করে তারা কীভাবে নিজের জীবনে মৃত্যু ডেকে আনছেন। নেশাজাত দ্রব্য একজন মানুষের মুডকে পরিবর্তন করে ফেলেন। এলকোহল মানুষকে উগ্র করে তোলে। ফলে একজন মদ্যপ যখন গাড়ি ড্রাইভ করেন তখন তিনি অনেক ট্রাফিক আইন না মেনেই নিজের মতো গাড়ি চালান। আর বিপদের মুখোমুখি হয়ে পড়েন।

ট্রাফিক সিগনাল অমান্য করবেন না

একজ সুনাগরিক হিসেবে আমাদের সকলেরই উচিৎ নিজ নিজ দেশের আইন কানুন মেনে গাড়ি চালানো। ট্রাফিক আইন বা সিগন্যাল একটা দেশের খুবই গুরুত্বপূর্ণ আইন। কোন ধরণের তাড়াহুড়া বা আবেগের বশেও ট্রাফিক সিগনাল ভঙ্গ করা উচিৎ নয়। আপনি যদি ভেবে থাকেন সিগন্যাল না মেনে একটু আগে আগে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন তাহলে সেটা একটা ভুল ধারণা। কারন ট্রাইফ সিগন্যাল ভাঙলে রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হয়ে আপনার গন্তব্যে পৌঁছাতে আরো বেশি দেরি হয়ে যেতে পারে।

ফিটনেস বিহীন গাড়িকে না বলুন

মনে রাখবেন আপনার গাড়ি আপনার বাহন। চলাচল করার জন্য মানুষ হিসেবে আমাদেরকে সুস্থ সবল থাকতে হয়। তেমনিভাবে একটা গাড়ির ফিটনেসও খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। গাড়ি নিয়মিত সার্ভিসিং করাবেন এবং এর মেইন্টেইনেস করবেন। গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হবার আগে অবশ্যই গাড়ির টায়ার এবং জ্বালানি চেক করে নিতে হবে। প্রহরী ভেইকেল ট্রাকিং সার্ভিসের মাধ্যমে মোবাইলে গাড়ির ফুয়েল স্ট্যাটাস দেখা যায়। এমনকি সারাদিনের ফুয়েলের হিসাবও রাখা যায় প্রহরীর মোবাইল অ্যাপে।

পরিবার পরিজনকে ট্রাফিক নিয়ম শিখান

আপনি একাই যদি ট্রাফিক আইন মেনে চলেন তাহলে কিন্তু নাগরিক হিসেবে আপনার সকল দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় নি। একজন সুনাগরিকের সমাজ এবং দেশের প্রতিও দায়বদ্ধতা থাকে। আর সেই দায়বদ্ধতা থেকেই উচিৎ পরিবার পরিজন বা বন্ধুবান্ধবকে ট্রাইক আইনে মেনে চলার জন্য উদ্বুদ্ধ করা। কেউ যদি ট্রাইক আইন না জানে তাকে ট্রাফিক আইন শিখিয়ে দেয়াও আপনার সামাজিক দায়িত্ব। আমাদের দেশের সড়ক দুর্ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এইসব দুর্ঘটনায় অনেক শিশুকিশোর হতাহত হয়ে থাকে। তাই তাদের এই হতাহতের পরিমাণ কমিয়ে আনার জন্য তাদেরকে ট্রাফিক আইন সম্পর্কিত জ্ঞান প্রদান করা দরকার ।

ট্রাফিক সাইন এবং সিগন্যাল রপ্ত করুন

রাস্তায় গাড়ি ড্রাইভ করতে গেলে রাস্তার অনেক জায়গায় অনেক রকম সিগন্যাল এবং সাইন দেখা যায়। যেসব সাইন এবং সিগনালগুলো চালকের জন্য নির্দেশক হিসেবে কাজ করে থাকে। তাই কোথায় কীভাবে গাড়ি চালাতে হবে তা বুঝার জন্য, এইসব সিগন্যাল এবং সাইনগুলো সঠিকভাবে জানতে হবে এবং সেই অনুপাতে গাড়ি চালনা রপ্ত করতে হবে। এতে করে অনেক দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।

গাড়ির জানালা দিয়ে মাথা বের করবেন না

আপনি চালক হন বা যাত্রী। কোন অবস্থাতেই গাড়ির জানালা দিয়ে মাথা বের করে আশেপাশের কোন কিছু দেখার চেষ্টা করবেন না। বা হাত বাইরে রাখবেন না। যখন রাস্তায় অনেক গাড়ির ভিড় থাকে, তখন যদি এমন করে জানালার বাইরে মাথা কিংবা হাত রাখেন তাহলে পাশের গাড়ির সাথে ধাক্কা লেগে হতাহত হতে পারেন। আপনি যদি চালক হন, তাহলে আপনার পাশে বা পেছনে বসা ব্যক্তিকেও এই ব্যাপারে সতর্ক করে গাড়ি চালাবেন।

একজন সুনাগরিক যখন গাড়ি ড্রাইভ করেন, তখন সর্বোপরি এই নিয়ম নীতিগুলো মেনে গাড়ি চালান। কারণ একজন সুনাগরিক যেমন নিজের সুরক্ষার কথা ভাবেন, তেমনি দেশ এবং সামাজের মানুষের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার কথাও ভেবে থাকেন। আর এইসব নিয়মকানুন মেনে চললেই দেশের এবং সমাজের সকলের জন্যই দুর্ঘটনার সম্ভাবনা কমিয়ে ফেলে। গাড়িকে যদি নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন তাহলে আরো ভাল। একজন স্মার্ট নাগরিক হিসেবে আপনি চাইলেই গাড়িকে নিজের নজরদারিতে রাখতে পারেন দিনরাত ২৪ ঘন্টা। এরজন্য দরকার একটি প্রহরী ভেইকেল ট্র্যাকিং সার্ভিস।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top