প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

পড়তে লাগবে: 4 মিনিট

লুকিং গ্লাসের বদলে গাড়িতে যুক্ত হচ্ছে ক্যামেরা!!

গাড়ি চালানোর সময় একজন ড্রাইভারকে গাড়ির চতুর্দিকে প্রতি মুহূর্তে খেয়াল রাখতে হয়। একাধারে ডানে বামে এবং পিছনে খেয়াল রাখার জন্য গাড়ির সামনের দরোজার দুইপাশে দুটি করে লুকিং গ্লাস এবং পেছনের প্যাসেঞ্জারের দিকে লক্ষ্য রাখার জন্য গাড়ির ভেতর উইন্ডগ্লাসের মাঝ বরাবর থাকে একটি প্যাসেঞ্জার লুকিং গ্লাস। একজন ড্রাইভার যখন গাড়ি চালান তখন তাকে এই তিনটি লুকিং গ্লাস দিয়ে চারপাশ দেখতে হয়। কেমন হতো বলুন তো যদিও কোন লুকিং গ্লাস এর দিকে না তাকিয়ে দুটি মনিটরের মধ্যেই দেখা যেত গাড়ির দুইপাশে এবং পেছনের সবকিছু?

গাড়ির ভেতর স্ক্রিনে যেখা যাবে পেছনে কী আছে।

কোন গাড়িতে এই ক্যামেরা থাকবে?

অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনিটিই ঘটতে যাচ্ছে আগামীতে। লেক্সাস ইএস ২০১৯ মডেলের শুধুমাত্র জাপানি সংস্করণের গাড়িতে এই ধরণের প্রযুক্তির ব্যবহার সর্বপ্রথম দেখা যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। শুধুমাত্র জাপানের লেক্সাস ইএস ২০১৯ এ এই ক্যামেরা মিরর দেখা যাবে। কারণ দেশটি ২০১৬ সালে গাড়িতে আয়নার বদলে ক্যামেরা ব্যবহার করার বৈধতা পেয়েছে। কিন্তু অন্যান্য দেশগুলোতে এখনো নিয়ম নীতিমালার অভাবে এই সুবিধা পাওয়া যাবে না।

লেক্সাসের দাবি অনুসারে, বাণিজ্যিক ভাবে তৈরি কোন গাড়িতে তারাই সবার প্রথম এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে যাচ্ছে। দুই পাশের দুটি আউটার মিররের জায়গায় দুটি ক্যামেরা লাগানো থাকবে। এই ক্যামেরা দুটো যুক্ত থাকবে গাড়ির মেইন বেজ পিলারের দুটি স্ক্রিনের সাথে। ড্রাইভারের গতিবিধি এবং বাঁক নেয়ার বা ব্রেক করার সাথে সাথে এই ক্যামেরাগুলোর ফোকাসও পরিবর্তিত হয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় ফোকাস করবে এবং সেই অনুসারে স্ক্রিনে ছবি দেখাবে। বৃষ্টি, পানি বা যেকোনো ধরণের ধুলাবালি থেকে মুক্ত থাকার মতো করেই এই ক্যামেরাগুলোর ডিজাইন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে লেক্সাস কর্তৃপক্ষ।

লেক্সাস ইএস ২০১৯ মডেলের গাড়ি

যেহেতু ক্যামেরা পডগুলো চিরাচরিত লুকিং গ্লাসের চাইতে ছোট, এর ফলে এই ক্যামেরার মাধ্যমে লুকিং গ্লাসের চাইতেও অধিক পরিমাণ দৃশ্যমান বস্তুর ছবি ধারন করতে পারবে এবং বাতাসের নয়েজ দূর করতে সক্ষম হবে। যদিও কোন কোন গাড়ি নির্মাতারা এই ক্যামেরার সমালোচনা করে বলেছেন, এই ক্যামেরার ফলে অ্যারোডায়নামিক ড্র্যাগিং কমে যেতে পারে। কিন্তু লেক্সাস তাদের ক্যামেরা মিররের বাজারজাতকরণ বিষয়ে কথা বলার সময় এমন কিছুই উল্লেখ করেনি।

আইনি বাধা 

আরেক বিখ্যাত গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি অডি  গত বছরের সেপ্টেম্বরে তাদের ইলেক্টিক স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেইকেলে প্রায় একই রকম প্রযুক্তি ব্যবহারের একটি উদ্যোগ নিয়েছিল। লেক্সাসের সাথে অডির পার্থক্যটা হচ্ছে, অডি লেক্সাসের মতো বেস পিলারে স্ক্রিন না রেখে ক্যামেরা থেকে পাওয়া ছবির স্ক্রিন স্থাপন করবে ডোর প্যানেলে। প্রাথমিকভাবে অডির এই মডেলের গাড়ি সবার আগে ইউরোপে পাওয়া যাবার কথা। আমেরিকান আইন অনুসারে, গাড়ির লুকিং গ্লাসের জায়গায় ক্যামেরা ব্যবহারের কোন অনুমতিও নেই। যদিও অডি দাবি করেছে আমেরিকাতেও লুকিং গ্লাসের বদলে ক্যামেরা দিয়ে গাড়ি বিক্রির জন্য তারা আমেরিকার নীতিনির্ধারকদের সাথে আলাপ আলোচনা করে যাচ্ছে। তবে আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে কোন কথা বলেনি।

এই নিয়মনীতি সম্পর্কিত বাঁধা যে শুধুমাত্র অডি বা লেক্সাস একাই মোকাবেলা করছে তা নয়। সাইড মিরর বা লুকিং গ্লাসের বদলে ক্যামেরা ব্যবহার করার কনসেপ্টটি টেসলা মডেল এক্স গাড়িতে এর আগেও প্রয়োগ করার কথা ভেবেছিল ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি টেসলা। কিন্তু আইন এবং নিয়মনীতির কারণে তাদের প্রচেষ্টা বাস্তবে আর আলো দেখতে পারেনি। গাড়ির আধুনিকায়ন এবং প্রযুক্তিগত সমৃদ্ধি যেভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে আশা করা যায় গাড়ি নির্মাতারা এক সময় লুকিং গ্লাস সাইড মিরর বদলে ক্যামেরা ব্যবহার করার ব্যাপারটি আইনি বৈধতা অর্জন করতে পারবে। কিন্তু সেটা কবে তা এখনো নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।

লুকিং গ্লাস বদলে ক্যামেরা ব্যবহারের সুবিধা

  • লুকিং গ্লাসের বদলে গাড়িতে যেই ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে তা সহজেই যেকোনো সিচুয়েশনের সাথে মানিয়ে নিতে পারবে।
  • ড্রাইভার যখন কোন দিকে বাঁক নেয়ার জন্য টার্ন সিগন্যাল দিবে, সেই সিগনালের সাথে সাথে ক্যামেরাও অটোম্যাটিকভাবে জুম আউট হয়ে গাড়ির চারপাশের সামগ্রিক অবস্থা বড় আকারে দেখাবে।
  • অনেক সময় গাড়ি চালানোর সময় ব্লাইন্ড স্পট মনিটরিঙের মাধ্যমে এই ক্যামেরা গাড়ির চালক তার গাড়ির আশেপাশে যেসব গাড়ি দেখতে পায় না সেসব গাড়িও দেখাবে স্ক্রিনে।
স্ক্রিনে গাড়ির ব্যাক ভিউ এবং ব্লাইন্ড স্পট
  • প্রয়োজনে গাড়ি যদি পেছনের দিকে ড্রাইভ করতে হয়, তাহলে এই ক্যামেরার মাধ্যমে পেছনের সবকিছু পরিষ্কারভাবে দেখা যাবে।
  • একজন ড্রাইভার বা গাড়ির মালিক নিজের ইচ্ছেমতো ক্যামেরা এডজাস্ট করে দৃশ্যপট নির্ধারণ করে নিতে পারবেন।
  • রাতের বেলায় গাড়ি চালাতেও বিশেষভাবে সাহায্য করবে এই ক্যামেরাযুক্ত লুকিং গ্লাস। নরমাল লুকিং গ্লাসের আয়নায় রাতের বেলা অনেক কিছুই পরিষ্কার বুঝা যায় না। লুকিং গ্লাসে বদলে ক্যামেরা থাকায় রাতের বেলায় গাড়ি চারপাশের অবস্থা আরো ভালোভাবে এবং পরিষ্কারভাবে স্ক্রিনে দেখা যাবে।
বৃষ্টির দিনেও গাড়ির চারপাশে সবকিছু পরিষ্কার দেখা যাবে।
  • বৃষ্টির দিনে গাড়ি চালাতে গিয়ে অনেক সময় মিরর লুকিং গ্লাসে পানি জমে গেলে পেছনের দৃশ্য ভালোভাবে দেখা যায় না। কিন্তু এই ক্যামেরাযুক্ত ডিজিটাল ভিউয়ার দিয়ে বৃষ্টির দিনেও সবকিছু পরিষ্কার দেখা যাবে।

প্রযুক্তিগত উন্নত এবং আধুনিকায়নের ফলে জীবন এখন আরো সহজ হয়ে উঠছে। লুকিং গ্লাস বদলে যুক্ত হচ্ছে ক্যামেরা, আসছে সেলফ ড্রাইভিং কার। এছাড়াও গাড়ির সব ধরণের মনিটরিং এখন বাড়িতে বা অফিসে বসেই করা সম্ভব। ভেইকেল ট্র্যাকারের মাধ্যমে গাড়িকে চুরির কবল থেকে বাঁচানো যায়। বিদেশি গাড়িগুলোতে নতুন নতুন প্রযুক্তি যুক্ত হচ্ছে। আর বাংলাদেশেই এখন তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশি প্রযুক্তিতে তৈরি ভেইকেল ট্র্যাকার। আমাদের দেশের গাড়ি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে তৈরি ভেইকেল ট্র্যাকার প্রহরীর রয়েছে ২০টির বেশি ফিচার

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top