প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

motorcycle-or-bike-registration-bangladesh
পড়তে লাগবে: 3 মিনিট

মোটরসাইকেল নিবন্ধনের সংশোধিত আইন

বাংলাদেশে বিশেষ করে বড় বড় নগরীতে মোটরসাইকেল যে সবচেয়ে জনপ্রিয় যান তা বললে ভুল হবে না। চলাচলের ক্ষেত্রে মোটরসাইকেলের বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে যা অন্য কোনো যানবাহনে নেই। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মোটরসাইকেলের বিকল্প নেই কারণ এখানকার রাস্তাগুলো অত্যন্ত সরু এবং বড় যান চলাচলের জন্য উপযোগী নয়। তবে, এত ভালো দিকের পাশাপাশি মোটরসাইকেলের যে কিছু খারাপ দিকও রয়েছে তাও বলার অপেক্ষা রাখে না যেমন, অন্যান্য যানবাহনের তুলনায় মোটরসাইকেলে সড়ক দুর্ঘটনা বেশি সংঘটিত হয়।

জরিপে দেখা গিয়েছে যে, বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪০ শতাংশই ঘটে মোটরসাইকেল থেকে। গত আগস্ট মাসেই বাংলাদেশে ৪৫৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫১৯ জন। এসকল সড়ক দুর্ঘটনাগুলো সংঘটিত হয় মূলত বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চালানোর ফলে তাছাড়া, অন্যান্য যানবাহনের তুলনায় মোটরসাইকেল অনেকটাই অনিয়ন্ত্রিতভাবে চলাচল করে সড়ক-মহাসড়কে।

দুর্ঘটনা এড়াতে এবং মোটরসাইকেলের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে লাগাম টানতে মোটরসাইকেল ক্রয়ের ক্ষেত্রে সরকার কিছু বিধিমালা ঠিক করে দিয়েছে বহু আগেই, তবে ২০১৮-১৯ সাল থেকে কার্যকর নতুন সড়ক পরিবহন আইনে মোটরসাইকেল ক্রয়ে কিছু সংশোধিত আইন প্রণয়ন করা হয়। মোটরসাইকেল ক্রয় এবং রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে সরকারকর্তৃক যে নতুন আইন করা হয়েছে তা নিয়েই আমরা আজকে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আপনি যদি নতুন মোটরসাইকেল কিনতে আগ্রহী হোন, তাহলে পুরোটা সময় জুড়ে আমাদের সাথেই থাকুন।

মোটরসাইকেল নিবন্ধন/রেজিস্ট্রেশন

মোটরসাইকেল ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রথমেই যে জিনিসটা মাথায় আসে তা হলো মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি মোটরবাইক থেকে শুরু করে সকল মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন করে থাকে। রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটরসাইকেল রাস্তায় চলাচল যে বেআইনি তা বলাই বাহুল্য। মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন বিষয়ক সংশোধিত কিছু আইনগুলো নিচে তুলে ধরা হলো,

১) রেজিস্ট্রেশন সনদ ব্যতীত কোনো ব্যক্তি সড়ক, মহাসড়ক বা পাবলিক প্লেসে মোটরসাইকেল চালাতে পারবে না কিংবা রেজিস্ট্রেশন নম্বরপ্লেট সংযোজন ও প্রদর্শন ছাড়া কোনো ব্যক্তি মোটরসাইকেল চালাতে কিংবা চালানোর অনুমতি প্রদান করতে পারবে না।

মোটরসাইকেল ক্রয়ের পর তার মালিককে কর্তৃপক্ষের নিকট হতে নির্ধারিত ফরম ফিলআপ করে, নির্ধারিত ফিস এবং ধারা ৫৩ এর অধীন গঠিত আর্থিক সহায়তা তহবিলের জন্য নির্ধারিত চাঁদা প্রদান সাপেক্ষে, মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের জন্য লিখিতভাবে আবেদন করতে হবে। মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের আবেদন পদ্ধতি, ফি, আবেদন মঞ্জুর, প্রত্যাখ্যান, মেয়াদ, নবায়নসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি বিধি মোতাবেক নির্ধারিত হবে।

উল্লেখ্য, ১০০ সিসির মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে মালিককে গুনতে হবে ৮১৬৩ টাকা এর পাশাপাশি সড়ক কর হিসেবে দিতে হবে প্রতি কিস্তিতে ১১৫০ টাকা। (মোট চারটি কিস্তি) অন্যদিকে, ১০০ সিসির উর্দ্ধে মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে মোটরসাইকেলের মালিককে দিতে হবে রেজিস্ট্রেশনবাবদ ৯৭৭৩ টাকা এবং সড়ক করবাবদ প্রতি কিস্তিতে ২৩০০ টাকা করে।

২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে, কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোনো এলাকার জন্য মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা বা সীমা নির্ধারণ করতে পারবে। এই আইন বা বিধি দ্বারা নির্ধারিত মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত শর্তাবলির কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে বা এই আইনের পরিপন্থি কোনো কার্য সম্পাদন করলে, কর্তৃপক্ষ, শুনানি গ্রহণ ও কারণ লিপিবদ্ধ করে সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন স্থগিত বা ক্ষেত্রবিশেষে বাতিল করতে পারবে।

তবে, উপ-ধারা (১) এর অধীনে কোনো মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন স্থগিত বা বাতিল করা হলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে অনধিক ৩০ দিনের মধ্যে নির্ধারিত ফরমে ও পদ্ধতিতে সরকারের নিকট আপিল করতে পারবে। উপ-ধারা (২) এর অধীনে আপিল দায়ের করা হলে সরকার নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে তা নিষ্পত্তি করবে এবং সরকার কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

৩) মোটরযানের ফিটনেস সনদ ব্যতীত বা মেয়াদ উত্তীর্ণ ফিটনেস সনদ ব্যবহার করে, বা ইকোনোমিক লাইফ অতিক্রান্ত বা ফিটনেসের অনুপযোগী, ঝুঁকিপূর্ণ বা ক্ষতিগ্রস্ত, রংচটা, কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত নির্ধারিত রং পরির্বতন করে জরাজীর্ণ, বিবর্ণ বা পরিবেশ দূষণকারী কোনো মোটরযান চালনা বা চালনার অনুমতি প্রদান করা যাবে না।। উপ-ধারা (২) এর বিধান অনুযায়ী ফিটনেসের অনুপযোগী কোনো মোটরযানের ক্ষেত্রে ফিটনেস সনদ প্রদান করা হলে, সনদ প্রদানকারী কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

৪) লীজ বা কিস্তিতে মূল্য পরিশোধের শর্ত সম্বলিত চুক্তির মাধ্যমে ক্রয়কৃত কোনো মোটরযান রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে, কর্তৃপক্ষ রেজিস্ট্রেশন সনদে উক্তরূপ চুক্তি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি লিপিবদ্ধ করবে।

৫) ট্যাক্স টোকেন আইন (Motor Vehicles Tax Act, 1932 (Act No. I of 1932) -এ প্রণীত বিধান অনুযায়ী অব্যাহতিপ্রাপ্ত মোটরসাইকেল ব্যতীত অন্য কোনো মোটরসাইকেল ট্যাক্স টোকেন ছাড়া বা মেয়াদোত্তীর্ণ ট্যাক্স টোকেন ব্যবহার করে চালানো যাবে না। ট্যাক্স টোকেন সংগ্রহের জন্য মোটরসাইকেলের মালিককে সরকার কর্তৃক ধার্যকৃত সড়ক কর নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিয়মিত পরিশোধ করা বাধ্যতামূলক।।

৬) কোনো ব্যক্তি তার অনুকূলে প্রদত্ত রেজিস্ট্রেশন সনদ বিকৃতি বা পরিবর্তন করতে পারবে না, কিংবা কোনোরূপ নকল, ভুয়া বা জাল রেজিস্ট্রেশন সনদ ব্যবহার প্রদর্শন করতে পারবে না। মোটরসাইকেলের মালিক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অস্থায়ী রেজিস্ট্রেশনের জন্য ফি প্রদান সাপেক্ষে আবেদন করতে পারবে। অস্থায়ী রেজিস্ট্রেশনের আবেদন পদ্ধতি, ফরম, ফি, আবেদন মঞ্জুর, প্রত্যাখ্যান, মেয়াদ ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হবে। রেজিস্ট্রেশন অবশ্যই মালিকের স্থায়ী বা বর্তমান ঠিকানার সন্নিকটে অবস্থিত কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে করতে হবে।

৭) বিদেশি দূতাবাস কিংবা আন্তর্জাতিক সংস্থার কোনো মোটরসাইকেল বাংলাদেশে বিক্রয় বা হস্তান্তর করা হলে তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অনুমতি সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ক্রেতার অনুকূলে পুনঃরেজিস্ট্র্রেশন করতে হবে। আমদানিকৃত মোটরসাইকেল ক্রয়ে কাস্টমসের ছাড়পত্র থাকা বাধ্যতামূলক। এক্ষেত্রে, বাইক রেজিস্ট্রেশনের সময় কাস্টমস অফিসারের সাক্ষরকৃত ছাড়পত্র, বাইকটির ক্যাশমেমো বা ইনভয়েস প্রদর্শন করতে হবে।

উপরিউক্ত আইনসমূহ সম্বন্ধে সতর্ক না থাকায় নতুন মোটরসাইকেল মালিকগণের নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলেই কিন্তু অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। তাই নতুন মোটরসাইকেল ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিআরটিএ প্রণীত সংশোধিত আইনগুলো মাথায় রাখা অত্যাবশ্যক।

শখের গাড়ির সকল তথ্য অ্যাপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করতে এবং গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী ব্যবহার করতে পারেন। এটি একটি ভেহিক্যাল ট্র্যাকার সার্ভিস (VTS) ডিভাইস যা সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করেছে পাই ল্যাবস বাংলাদেশ লিমিটেড। প্রহরী – ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং সিস্টেমে রয়েছে অ্যাপের মাধ্যমে ইঞ্জিন লক/আনলক করার সুবিধা, গাড়ির লাইভ ট্র্যাকিং আপডেট দেখা, এবং ট্রাভেল হিস্টোরি চেক করা সহ আরও অনেক সুবিধা বিস্তারিত জানতে দেখুন প্রহরী প্যাকেজ সমূহ।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top