প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

পড়তে লাগবে: 4 মিনিট

গাড়ি নিয়ে মানুষের ৫ টি ভ্রান্ত ধারণা

দেশে হোক বা বিদেশ গাড়ি নিয়ে কিছু ভ্রান্ত ধারণা বা মিথ মানুষের মধ্যে সব সময়ই ছিল। গাড়ি কেনার সময় বা ব্যবহারের সময় সেসব ধারণা মানুষ মাথায় রেখেই গাড়ি কেনে। এসব ভ্রান্ত ধারণা বহুকাল ধরে চর্চা হতে হতে মানুষের মাঝে প্রচলিত হয়ে গেছে। যেমনটা মানুষ এখনো প্রাচীন মিথে বিশ্বাস রাখে। আর আজকে আমরা জানব গাড়ির এমনি ৫ টি মিথ যা সত্যি অদ্ভুত।

২৫ বছরের পুরানো গাড়িই ক্ল্যাসিক গাড়ি ।

বাইরের দেশে কোন গাড়ি যখন ২৫ বছর পূর্ণ করে তখন তাকে ক্ল্যাসিক গাড়ি বলে। মাঝে মাঝে গাড়ি বিক্রির সময় দেখতে পাওয়া যায় যে লেখা থাকে যে , এই গাড়িটি পরের বছর ক্ল্যাসিক গাড়ি হয়ে যাবে। নিয়মিত ব্যবহারের জন্য, যদিও মানুষ এসব গাড়িগুলো কিনতে এখন খুব একটা আকৃষ্ট হয় না। তবুও আমেরিকায় এই গাড়ির বিক্রেতারা খুব সুন্দর করে গাড়িগুলোর বিজ্ঞাপন দেয়। তারা ভাবে কোন বনেদি পরিবারের কেউ, বোল হ্যাট আর স্যুট কোট পড়ে এসে এসব গাড়ি কিনে নিয়ে যাবে। ব্যাপারটা হাস্যকর তাইনা? এখন ২০০৬ ফোর্ড জিটি গাড়িটিই তো ২৫ বছরের পুরানো হয়ে গিয়েছে কিন্তু তবু এই গাড়িটিকে ক্ল্যাসিক গাড়ি বলা যায় না।

একটি পারফেক্ট ক্লাসিক কার।

লাল গাড়ি পুলিশ বেশি সন্দেহ করে ।

আমেরিকায় এই ভ্রান্ত ধারনার প্রচলন সবচাইতে বেশি। পুলিশ নাকি শুধু লাল গাড়ির পেছনে ছোটে বেশী কারণ লাল গাড়ি নাকি চোখে বেশী পড়ে । অপরাধী অপরাধ করে পালিয়ে যাওয়ার সময় নাকি লাল রং বেশী নজরে পড়ে। আর সেথেকেই তৈরি হয়েছে এই ভ্রান্ত ধারণা। কিন্তু পুলিশ কালো, ধূসর, নীল, সাদা সব ধরনের গাড়ির পেছনেও ছোটে, মুলত আমেরিকা বা অন্য দেশের পুলিশ সেইসব গাড়ির পেছনেই বেশী ছোটে, যেগুলো বেশী স্পিডে চালানো হয়। ১৯৯০ সালে সেইন্ট পিটারবার্গের একটি গবেশনায় বলা হয় , লাল না বরং ধূসর বর্ণের গাড়িগুলো পুলিশের মনোযোগ বেশী আকর্ষণ করে। বোঝাই যায় যে, এটি সম্পূর্ণই মানুষের মনগড়া।

ধূসর বর্ণের গাড়িও পুলিশের নজরে পরতে পারে।

সিনথেটিক তেলে লিকেজ হয় ।

সিনথেটিক তেল ব্যবহার করলে ইঞ্জিনে তেলের লিকেজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এ ব্যাপারটি পুরোপুরি ভুল। কিন্তু মানুষ কেন এমনটা ভাবে, তাও চিন্তা করে দেখার বিষয়। যদি কোন পুরনো গাড়ির ইঞ্জিনে সিনথেটিক তেল নেওয়া হয়, তাহলে তেল সব জায়গা থেকে লিকেজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সিনথেটিক তেলের কারনে পুরানো ইঞ্জিনে এত বেশী সমস্যা দেখা যায় যে ইঞ্জিনকে একসাথে ধরে রাখতে পারেনা। সিনথেটিক তেলের প্রবাহমান মডিউকুলার স্ট্রাকচার ইঞ্জিনের খারাপ জিনিস খুব ভাল ভাবে পরিষ্কার করে ফেলে। যদি আপনার গাড়িটি নতুন হয় আর আপনার ইঞ্জিনের সিল গুলো ভালোভাবে আটকানো থাকে তাহলে আপনি চোখ বন্ধ করে সিনথেটিক অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। সিনথেটিক অয়েল আপনার গাড়ির ইঞ্জিনের স্থায়িত্ব বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কাজেই এই সিনথেটিক অয়েলের সম্পর্কে একটি ভ্রান্ত ধারণা।

সিনথেটিক অয়েল গাড়ির ইঞ্জিনের জন্য ভাল।

ফোর্ড- টি শুধু কালো রঙের হয় ।

ফোর্ডের টি মডেল গাড়ি বিংশ শতাব্দীর একটি ঐতিহাসিক গাড়ি। গাড়ির বিশ্বে বৈপ্লবিক পরিবর্তনে এই গাড়ির ভূমিকা অনবদ্য! ধারণা করা হয় যে, এই মডেলের সব গাড়িগুলো শুধুই কালো রঙের হয়। কিন্তু এই ধারণাটি একদমই সত্য নাl কালো ছাড়াও ভিন্ন কিছু রঙের ফোর্ড মডেল টি গাড়ি বাজারে এসেছিল যেমন চ্যানেল গ্রিন, উইনসোর মেরুন। গাড়িগুলো ছিল গাঁঢ় সবুজ অথবা গাঢ় নীল রঙের। গাড়ির গাঢ় রঙের বার্নিশের কারনে গাড়িগুলোকে কালো দেখাত। ফোর্ড প্রায় ১৫ মিলিয়ন মডেল টি গাড়ি বাজারে ছেড়েছিল, তার মধ্যে প্রায় ১২ মিলিয়ন ছিল সম্পূর্ণ কালো আর বাকি ৩ মিলিয়নই কিন্তু অন্য রঙের ছিল। তাই এই ভ্রান্ত ধারনার কোন ভিত্তি নেই।

ফোর্ডের মডেল টি গাড়ি গাঢ় সবুজ রঙয়েরও হয়।

প্রতি ৩০০০ মাইলে ১ বার মোটর অয়েল পাল্টাতে হয় ।

এই ভুল ধারণাটিও আমেরিকায় বেশী প্রচলিত ছিল । মনে করা হত যে, ৩০০০ মাইল যাওয়ার পর ইঞ্জিনের মোটর অয়েল না পালটালে গাড়ির ইঞ্জিন নষ্ট হয়। যদিও এই মিথটি কিছুটা হলেও সত্যি । বহু বছর ধরেই মানুষ এই মিথটি মেনে আসছে । গাড়ির মোটর অয়েল তিন মাস ব্যবহারের পর পাল্টাতে হয়। কিন্তু বর্তমানে ইঞ্জিন গুলো মেটালের তৈরি এবং এগুলো সহজে নষ্ট হয়না বা পাল্টানোর প্রয়োজন পড়ে না।  বর্তমানে মোটর অয়েল গুলোকে ৫০০০ মাইল, ৭০০০ এমনকি ১০,০০০ মাইল পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়।

প্রত্যেকেরই উচিৎ গাড়ির ইঞ্জিন আর অন্য সব পার্টসের কন্ডিশন দেখে গাড়ি কেনা। কোন ধরণের ভ্রান্ত ধারণায় বিশ্বাস না রেখে নিজের বিচার বুদ্ধি খাটিয়ে গাড়ি কেনা উচিৎ। আর এখনকার সময়ে ইন্টারনেটেই গাড়ি বিষয়ক সব তথ্য পাওয়া যায়। এমনকি গাড়ির দেখাশোনা এবং  যত্নের সাথে ব্যবহার করতেও পারবেন মোবাইলের মাধ্যমে। বাড়বে নিরাপত্তা এবং স্থায়িত্ব। গাড়ি যদি মোবাইলেই ট্র্যাক করতে চান তাহলে আপনার পাশেই থাকবে ভেহিকেল ট্র্যাকিং সার্ভিস প্রহরী

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top