প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

পড়তে লাগবে: 4 মিনিট

বৃষ্টির দিনে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো অবশ্যই খেয়াল রাখবেন (পর্ব-২)

বিরূপ আবহাওয়ায় গাড়ি চালানোর সময় অধিক মনোযোগী হওয়া উচিত। সব বিষয়ে লক্ষ্য রেখে সতর্কতার সাথে গাড়ি চালালে অনেকটাই নিরাপদে থাকা যায়। আপনার নিজের এবং চারপাশের সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছু বিষয় অবশ্যই খেয়াল করা দরকার। সেক্ষেত্রে গাড়ির যত্ন থেকে শুরু করে রাস্তার চারপাশটা ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করে চলাটা জরুরী। আসুন দেখে নিই বৃষ্টির দিনে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখা আবশ্যক।

গাড়ির  জানালা পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন রাখা      

গাড়ি নিরাপদে চালানোর ক্ষেত্রে ঠিকভাবে দেখতে পারা খুবই জরুরি। বিশেষ করে যখন বৃষ্টির কারণে দৃষ্টিসীমা কমে যায়। এক্ষেত্রে  জানালা পরিষ্কার রাখা গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত জানালার ভিতরে এবং বাহিরে পরিষ্কার করতে হবে। যদি কুয়াশা জমে যায় তাহলে এয়ার  কন্ডিশনার ছেড়ে দিতে হবে। এবং এটার দিক দিয়ে দিতে হবে জানালার ভেন্টসের দিকে। আর গাড়ির ভিতর বাতাস চলাচলের ব্যবস্থাও করতে হবে।

এয়ারকন্ডিশন অন করে রাখা 

বৃষ্টির সময় গাড়ির জানালা খোলা রাখলে গাড়ির ভিতরটা এবং আপনিও ভিজে যাবেন। তখন বাইরের তাপমাত্রা কম থাকলেও গাড়ির ভেতরের তাপমাত্রা তেমন কমে যায় না। এতে গাড়ির ভেতরে গুমোট আবহাওয়ার সৃষ্টি হয়। এবং কাচে বিন্দু বিন্দু ঘামের সৃষ্টি হয়। ফলে ঘাম জমে কাচ ঘোলা হয়ে যায়। যা দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়। আর এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে গাড়ির এয়ারকন্ডিশন অন করে রাখুন।

গাড়ির উইন্ড শিল্ডের  উইপার কার্যকরী কি না     

সবসময় গাড়ির উইন্ড শিল্ড পরিষ্কার করে রাখুন। খেয়াল করে দেখুন গাড়ির উইপারগুলো কার্যকর আছে কি না। এগুলো আর্দ্র  আবহাওয়ায় আপনার দৃষ্টিসীমা বাড়িয়ে দেবে। প্রতি বছর  উইপার চেঞ্জ করা উচিত। যাতে তা ভেঙে যাওয়া এবং ক্র্যাক হওয়া থেকে রক্ষা পায়।

হেডলাইট সঠিক দিকে আলো দিচ্ছে কি না

গাড়ির হেডলাইট ঠিক আছে কি না খেয়াল রাখাটা অনেক জরুরী। নষ্ট হয়ে গেলে তা অতি দ্রুত বদলে ফেলা উচিত। আর ত্রুটিপূর্ণ হেডলাইট মেকানিকের কাছে নিয়ে গিয়ে ঠিক করে ফেলা দরকার। আর এটা নিশ্চিত করা জরুরী যে আপনার হেডলাইট সঠিক দিকে  আলো দিচ্ছে। যা আপনাকে ঠিক পথ দেখতে সাহায্য করবে। এবং অন্য ড্রাইভারের চোখেও আলো ফেলা থেকে রক্ষা করবে।

টায়ারের দিকে খেয়াল রাখা

বৃষ্টির দিনে টায়ারের উপর দিয়ে অনেকটা ধকল যায়। ফলে টায়ার ক্ষয় হয়ে ভেজা সড়কে পিছলে যেতে পারে। কিংবা চাপহীন হয়ে সড়ক আঁকড়ে থাকার ক্ষমতা হারায়। সেক্ষেত্রে টায়ার নষ্ট  হয়ে  গেলে  বা  পুরাতন  হয়ে  গেলে  দ্রুত  চেঞ্জ  করা দরকার। টায়ারের  ট্রেড যখন ৪/৩২ ইঞ্চি হয়ে যাবে। তখনি তা রিপ্লেস করে ফেললে ভাল হয়। আর যেসব টায়ারের ট্রেড ২/৩২ ইঞ্চি হয়ে গেছে তা ব্যবহার করা অনেক বেশি বিপদজনক। সুতরাং রাস্তায় গাড়ি বের করার আগে এই দিকে লক্ষ্য  রাখা দরকার।

ফুয়েলের পরিমাণ চেক করা

বৃষ্টির মাঝে মাঝ রাস্তায় গাড়ি ফুয়েলের অভাবে থেমে গেলে বিপদে পড়তে পারেন। সেক্ষেত্রে গাড়ি নিয়ে বের হওয়ার আগেই তা চেক করে নিন। দেখে নিন আপনার গাড়িতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফুয়েল আছে কি না। আর এক্ষেত্রে আপনি যদি প্রহরী ভিটিএস ব্যবহারকারী হন তাহলে ফুয়েল মনিটরিং সিস্টেমের মাধ্যমেই সবকিছু নিশ্চিত হতে পারবেন। শুধুমাত্র প্রহরী ভিটিএসে পাওয়া এই সার্ভিসের মাধ্যমেই আপনি  গাড়িতে কতটুকু ফুয়েল আছে কিংবা কতটুকু খরচ হয়েছে প্রভৃতি জানতে পারবেন।

জলাবদ্ধ রাস্তা এড়িয়ে চলা

বর্ষাকালে টানা বৃষ্টিতে পথঘাটে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। অনেকসময় অতিরিক্ত জলাবদ্ধ সড়কে গাড়ি ড্রাইভ করলে গাড়ির ক্ষতি হতে পারে। অনেকসময় গাড়ির ইঞ্জিনে পানি ঢুকে তা বিকল হয়ে যেতে পারে। আর সেক্ষেত্রে একটু খোঁজ খবর নিয়ে যেসব সড়ক উঁচু বা বৃষ্টিতে পানি জমে থাকে না। সেসব রাস্তায় যাতায়াত করতে চেষ্টা করুন। যদিওবা তাতে অনেকটা সময় লাগতে পারে। কিংবা অনেকটা পথ ঘুরেও যেতে হতে পারে। তথাপিও নিরাপত্তা আর গাড়ির সুরক্ষার জন্য বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করাটা ভাল। তবে এক্ষেত্রে হাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে বাসা থেকে বের হতে হবে।

নিচু সড়কে চলার সময় অধিক সতর্ক থাকা  

বিভিন্ন নিচু সড়ক খানাখন্দ, গর্ত বা ভাঙ্গাচোরা অবস্থায় থাকে। সেক্ষেত্রে দেখা যায় ঝড় বৃষ্টিতে এই সব রাস্তায় পানি জমে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। কিন্তু গাড়ি থেকে অনেক সময় জমে থাকা পানির গভীরতা বা গর্তের ব্যাপারটা অনুমান করা যায় না। আর এইসব পানি পূর্ণ গর্তে চাকা আঁটকে যেতে পারে কিংবা গাড়ির ব্রেক ভিজে গিয়েও সমস্যা করতে পারে। এছাড়াও সাইলেন্সার দিয়ে ইঞ্জিনেও পানি ঢুকে যাওয়ার রিস্ক তো আছেই। তাই এইসব সমস্যা এড়াতে অতিরিক্ত জলাবদ্ধতা দেখলে গাড়ি নিয়ে আগাবেন না। কিংবা ভিন্ন পথে যেতে চেষ্টা করবেন। আর যদিওবা সামনে যেতেই হয়, তবে লক্ষ্য রাখুন সামনের গাড়ি পানিতে নিরাপদে পার হয়ে যেতে পারছে কিনা। সেটা দেখে তারপর সতর্কতার সাথে মাঝ রাস্তা বরাবর এগিয়ে যান।

খারাপ আবহাওয়ায় গাড়ি  থামিয়ে রাখা     

বর্ষাকালে টানা বৃষ্টিতে যখন রাস্তাঘাটের অবস্থা অতিরিক্ত খারাপ হয়ে যায়। তখন যদি  রাস্তায়  গাড়ি  চালানো  নিরাপদ  মনে  না  হয়।  তাহলে তখনই  গাড়ি  চালানো  বন্ধ  করে  দেয়া  উচিত। বিশেষ  করে  যখন বৃষ্টির সময়  সামনে বা পিছনে কিংবা  আশেপাশের কোন  কিছুই  দেখা  যায় না। কিংবা  রাস্তায় যখন  অতিরিক্ত  পানি জমে  যায়। অথবা রাস্তা যখন খুব বেশি রকম ভেজা ও পিচ্ছিল  থাকে।  তখন  গাড়ি  রাস্তার  পাশে  থামিয়ে  রাখলে ভাল হয়। কারণ অনেকসময়  অতিরিক্ত  ভেজা  রাস্তায়  গাড়ি  স্লিপ  খেয়ে  বড় ধরণের এক্সিডেন্টও হতে পারে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানা 

ঝড় বৃষ্টির সিজনে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে দেয়া পূর্বাভাস জেনে গাড়ি নিয়ে বের হোন। বিশেষ করে যাদের দুর্যোগ কবলিত এলাকায় ভ্রমণ করতে হয়। কিংবা লং জার্নিতে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। এক্ষেত্রে পরিবেশ পরিস্থিতির খোঁজ খবর জেনেই পথে বের হওয়া উচিত। তা না হলে অনেক সময় যেমন গাড়ির ক্ষতি হতে পারে। তেমনি আপনিও বিপদের মুখে পড়ে যেতে পারেন। তাইতো দূরপাল্লার ভ্রমণের সময় অবশ্যই আবহাওয়ার খোঁজ খবর রাখুন। আপনার আগাম সতর্কতা যেকোন দুর্ঘটনা ঘটার হাত থেকে রক্ষা করবে।

অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যায় পড়ার আগেই তা মোকাবেলা করার পদক্ষেপ নিয়ে ভাবা উচিত। যেকোন সময়েই পরিবেশ-পরিস্থিতির রূপ পালটে যেতে পারে। তাই সবসময় সচেতন থাকাটা অনেক বেশি জরুরী। গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হওয়ার আগে অন্তত নিরাপত্তার বিষয়গুলো মাথায় রেখে সতর্কভাবে চলুন। এতে  যেকোন দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা যেমন কমে যাবে, তেমনি অযাচিত ভোগান্তির মুখেও পড়বেন না।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top