প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

পড়তে লাগবে: 4 মিনিট

ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন কি ? এবং এটি কীভাবে কাজ করে?

গাড়িতে ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন নাকি অটোম্যাটিক ট্রান্সমিশন কোনটা বেশী কাজের এটা সবসময় একটি প্রশ্ন , একটি তর্কের বিষয়। গাড়িতে যখন ট্রান্সমিশন ব্যবহার করা হয় তা সঠিকভাবে নির্বাচন করাটাও একটি বড় ব্যাপার। দুই ধরনের ট্রান্সমিশনে দুই রকমের সুবিধা পাওয়া যায়। আর বেশীরভাগ ফর্মুলা কারগুলো ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন ব্যবহার করা হয়ে থাকে আর কেনই বা হয়ে থাকে সেটাও একটি প্রশ্ন। কেনই বা হাই টর্ক ও হঠাৎ স্থান পরিবর্তন করার জন্য ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন ব্যবহার করতে বলা হয় ?

একটি ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন হচ্ছে অনেকগুলো উপাদানের সমন্বয়ে যেমন –গিয়ার, শ্যাফট ইত্যাদি বিভিন্ন নকশায় সাজানো থাকে, যা যথাযথ টর্ক ও গতির অনুপাত সরবরাহ করে এবং যা বিভিন্ন ধরনের রাস্তায় চলার জন্য কাজ করে । হাই টর্ক থেকে হাই স্পিডে এবং এর উল্টা ম্যানুয়ালি করা হয়  ও ড্রাইভার  ভারসাম্যের  ঠিক রাখতে গিয়ারের লিভারটিকে ঠেলে নামায় বা ওঠায় ।

সাধারণত যেসব গাড়িতে ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন থাকে সেগুলো সাধারণত N স্পীড হয়। যেগুলো বিপরীত কনফিগারেশন সহ অথবা ছাড়া হয় । এখানে N অর্থ হচ্ছে স্পীড রেশিওর নম্বর । উদাহরণ দিয়ে বলতে গেলে বলা যায় যে- মারুতি সুজুকি সুইফট গাড়িগুলো ৫-স্পীড, ১- রিভার্স হয়।

N ট্রান্সমিশন ।

কেন গাড়িতে ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন দরকার ?

ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন অথবা ম্যনুয়াল গিয়ারবক্স সব সময় একটি মোটরগাড়ির জন্য গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যখন থেকে এই ট্রান্সমিশন ব্যবহার শুরু হয়েছে তখন থেকেই প্রায় মোট গাড়ির ৫০-৬০ শতাংশ গাড়িতে এই ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন ব্যবহার করা হয়।  ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন গাড়িতে ব্যবহারের কারণ হচ্ছে এর ব্যবহারের সুবিধা।

  • হঠাৎ করে গাড়িতে বিভিন্ন কারনে অতিরিক্ত বোঝা বহনের কাজ করা হয় তখন রাস্তার অবস্থার কারনে হাই টর্কের প্রয়োজন হয়। ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশনে হাই টর্ক অনুপাত সরবরাহ করে বলে গাড়িতে এসব কাজের জন্য ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন ব্যবহার করা হয়।
  • যখন আমরা রেসিং কার অথবা কোন বাঁকা ট্রাক হুট করে হাই টর্ক থেকে হাই স্পিডে গিয়ার চেঞ্জ করে আর এই কাজটি যদি সবসময়ই করা হয় তাহলে অবশ্যই গাড়িতে ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশনের প্রয়োজন । অর্থাৎ দ্রুত গিয়ার পাল্টানোর ক্ষেত্রে ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন খুবই গুরুতপুরন ভূমিকা পালন করে।
  • উচুনিচু রাস্তা অথবা পাহাড়ি খাড়া রাস্তায় ভারী গাড়ি বা ট্রাকের চলার জন্য ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন অথবা গিয়ারবক্স জরুরী।
  • স্বল্প খরচ এবং যানবাহনের কম পরিচর্যা করা হয় বলে ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহৃত গাড়িগুলোতে ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন বেশী ব্যবহার করা হয়।
ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশনে গিয়ার বক্স।

কি কি উপাদান নিয়ে তৈরি ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন ? 

১) শ্যাফট

সাধারণত  তিন ধরনের শ্যাফট ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশনে ব্যবহার করা হয়।

  • মেইন শ্যাফট

মেইন শাফট আউটপুট শ্যাফট নামেও পরিচিত।  এটি লে শ্যাফটের সমান জায়গায় ক্লাচ শ্যাফটের সামনে বসানো থাকে । গিয়ার, গিয়ার লিভার এগুলো  জালের মত যন্ত্র  ডগ ক্ল্যাচের মত যন্ত্রের সাথে মোটরগাড়ির গিয়ার বদলের যন্ত্রের সাথে সংযোগ করা হয় যা এই ক্ল্যাচের উপরে বসানো থাকে।

  • কাউন্টার শ্যাফট/লে শ্যাফট

এই শ্যাফটটি মেইন শ্যাফট আর ক্ল্যাচ শ্যাফটের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটি সাধারণত নিচে  ও মেইন শ্যাফটের সমান্তরালে সংযুক্ত থাকে। এবং থেকে ক্ল্যাচ শ্যাফটকে মেইন শ্যাফটে কাজ করার জন্য ইঞ্জিন আউটপুট ক্যারিয়ার হিসেবে কাজ করে এই  লে শ্যাফটটি।

  • ক্লাচ শ্যাফট

ইঞ্জিন ফ্লাইহুইল থেকে যে ঘূর্ণায়মান আউটপুট আসে তা এই ক্লাচ  ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে বহন করে যেগুলো ইঞ্জিন থেকে যে আউটপুটটি পায় তা  নিযুক্ত করে বা ছেড়ে দেয় ।

 ২) গিয়ার

ম্যনুয়াল গিয়ার বক্সে ৪ ধরনের গিয়ার ব্যবহার করা হয়।

  • স্পার গিয়ার

সাধারণত পুরান ধরনের জাল গিয়ার বক্সে এই গিয়ার ব্যবহৃত হয়। এই ধরনের গিয়ারে সোজা দাতাল খাজ থাকে।

  • হেলিক্যাল গিয়ার

এগুলো নতুন করে সাজানো আধুনিক এবং কৌণিক আকৃতিতে ছাচানো দাঁত বিশেষ।

হেলিকেল গিয়ার।
  • বেভেল

এই গিয়ারগুলো সব গিয়ার থেকে সর্বোৎকৃষ্ট। এগুলোর কৌণিক কাটাকুটি অংশতে ছাচান দাঁত থাকে।

  • ইডলার গিয়ার

এই গিয়ারটা খুবই ছোট এবং সাধারণত রিভার্স গিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং যা লে শ্যাফটের  উপর দিয়ে নেয়া হয়।

৩। মেশিং ডিভাইস  (জালের মত যন্ত্র)

ম্যনুয়াল ট্রান্সমিশনে সাধরনত দুই রকম মেশিং ডিভাইস ব্যবহৃত হয়।

  • ডগ ক্লাচেস

এই ডিভাইসের মাধ্যমে গিয়ারবক্সে অবিরত গিয়ারের মেশিং করা হয়।

  • সিনক্রোমেশ ডিভাইস

এই যন্ত্রগুলো সিনক্রোমেশ গিয়ারবক্সে মেশিং এর জন্য ব্যবহার করা হয়। এসব যন্ত্র সহজভাবে গাড়ির গিয়ারের শিফট পরিবর্তনে কাজ করে।

৪। গিয়ার লিভার

এই লিভারটি গাড়ির চালক একটি গিয়ার শিফটের জন্য ব্যবহার করে।

 ম্যানুয়াল গিয়ারবক্সের ধরণ:

১.  স্লাইডিং ম্যাশ গিয়ারবক্স

ব্যবহারের দিক থেকে এ ধরনের গিয়ারবক্স সবচেয়ে পুরানো। এগুলো ৩ শিফট ম্যনুয়াল স্পাইডার হয়।

২. কন্সট্যাট ম্যাশ গিয়ারবক্স

এটি হচ্ছে আগের ব্যবহৃত গিয়ারবক্সের আধুনিক  অংশ। এগুলো ৪/৫ শিফট ম্যনুয়াল এবং ১ রিভার্স ম্যানুয়াল  শিফটের হয়।

কন্সট্যান্ট ম্যাশ গিয়ারবক্স।
৩. সিনক্রোমেশ গিয়ারবক্স

বছর দশক ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে এই গিয়ারবক্স। এগুলো ৫ শিফট ম্যানুয়াল ও ১ রিভার্স ম্যানুয়াল শিফটের হয়।

কাজেই সব দিক থেকে বিবেচনা করে বলা যায় যে, ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন একটি গাড়ির জন্য বেশী সুবিধাজনক প্রমাণ হতে পারে। আপনার গাড়ির স্থায়িত্ব বাড়াতে অথবা ভারী যানবাহনের কার্যক্ষমতা  বৃদ্ধিতে ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন বেশী জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত ।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top