প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

পড়তে লাগবে: 4 মিনিট

ড্রাইভিং স্কুল যে ৪ টি নিয়ম আপনাকে শেখাতে ভুলে গিয়েছিল!

একজন ড্রাইভার মনে করেন, তিনি যদি কোন দেশের সব ড্রাইভিং আইন এবং  নিয়ম জেনে থাকেন তাহলে তিনি গাড়ি চালাতে গিয়ে, যেকোনো সময় যেকোনো পরিস্থিতি সামলে উঠতে পারবেন। আর এজন্যই মানুষ গাড়ি চালনা শিখতে ড্রাইভিং স্কুল খুঁজে, সেখানে গিয়ে ভর্তি হয়ে থাকেন। একটি ভাল ড্রাইভিং স্কুল গাড়ি চালানোর নিয়ম এবং দক্ষতার শিক্ষাদানের পাশাপাশি ট্রাফিক আইন সম্পর্কেও ধারণা দিয়ে থাকে। তবে গাড়ি চালানো শুধু যে গাড়ি চালানোর দক্ষতা এবং ট্রাফিক আইন জানার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। কিছু পারিপার্শ্বিক ব্যাপারও এর সাথে জড়িত। এইসব ব্যাপারগুলো সম্পর্কে ড্রাইভিং স্কুলগুলো তেমন একটা জোর দিয়ে থাকে না। এইসব পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলো জানা না থাকলে আপনার গাড়ি চালাতে সমস্যা হতে পারে এমনকি ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে।

ড্রাইভিং সিট আরামদায়কভাবে অ্যাডজাস্ট করাঃ

গাড়ি চালানোর সময় আপনি যখন ড্রাইভিং সিটে বসেন তখন আপনার সবার আগেই যেই জিনিষটি নিয়ে ভাবা উচিৎ তা হলো আপনি ড্রাইভিং সিটে বসে কতটা আরাম পাচ্ছেন। ড্রাইভিং সিটে বসার একটি সঠিক পদ্ধতি রয়েছে। যা মেনে চললে রাস্তায় বিপদ থেকে মুক্তি পেয়ে যেতে পারেন। আপনি যখন ড্রাইভিং সিটে বসবেন, তখন আপনার হাঁটুকে সামান্য বাঁকিয়ে বসতে হবে। যদি মনে করেন আপনার পা গ্যাস প্যাডেলে পর্যন্ত নাগাল পাচ্ছে না, তাহলে সিটটিকে একটু সামনের দিকে এগিয়ে নিন। আর যদি মনেহয় পা রাখার যায়গা কমে গেছে, তাহলে সিটটিকে একটু পিছিয়ে নিন। যেন হাঁটু সামান্য বাঁকানো থাকে এবং পায়ের পাতা গ্যাস প্যাডালে থাকে। সিট এবং হাটুর পেছনের দিকের অংশ একটু ফাকা রাখতে হবে। এতে করে গাড়ি চালানোর সময় আপনার হাঁটু ব্যথা করবে না। এমন ভাবে সিটে বসবেন যেন আপনার কোমরের নিন্মাংশ এবং  হাটু একই সমতলে থাকে। এতে করে যদি আপনি সামনের দিকে দেখতে সমস্যা বোধ করেন তাহলে সিটটি সামান্য উচু করে নিন। এভাবে নিয়ম মেনে ড্রাইভিং সিটে বসলে আপনার মেরুদণ্ডের উপর চাপ কম পড়বে এবং পিঠে ব্যথা থেকেও মুক্তি পাবেন। গাড়ি চালিয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন।

ব্রেক পাইপ চেক করা:

আপনার গাড়ির একটি সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ব্রেক। আপনার গাড়ির ব্রেক পাইপে যদি কোন সমস্যা থাকে তাহলে তা আপনার এবং আপনার গাড়ির জন্য হুমকিস্বরূপ। কারণ ব্রেক পাইপের মাধ্যমে গাড়ির চাকার ব্রেক ধরা হয়ে থাকে। অনেক সময় ব্রেক করতে গিয়ে ক্যাঁচক্যাঁচ শব্দ শুনতে পাবেন, আবার কখনো গাড়ির চাকার ব্রেক প্লেটে তৈলাক্ত ব্রেক ফ্লুইড লেগে থাকতে দেখবেন। এগুলো খুব একটা অস্বাভাবিক না। তবে অস্বাভাবিক কিছু চোখেপড়ার আগেই প্রতিনিয়ত ব্রেক পাইপ পরীক্ষা করে দেখা উচিৎ। কারণ হঠাত যদি ব্রেক পাইপে সমস্যা হয় বা ব্রেক ছুটে যায় তাহলে ভীষণ দুর্গতির সম্মুখীন হতে হবে। কারণ ব্রেক পাইপ অকেজো হয়ে গেলে ব্রেক কাজ করবে না গাড়িও থামানো যাবে না। তাই প্রতিদিন গাড়ি নিয়ে বের হবার আগে একবার ব্রেক পাইপ চেক করে নিন। ব্রেক পাইপে চাপ দিয়ে দেখুন তা শক্ত হয়ে গেছে কিনা এবং বাঁকা করলে তাতে কোন ফাটল দেখা দেয় কিনা। কারণ ব্রেক পাইপ এমন ভাবে তৈরি যা স্বাভাবিক অবস্থায় কিছুটা নমনীয় থাকে এবং বাঁকা করলে শক্ত মনে হয় না। সহজেই বাঁকা হয়। তাই শক্ত মনেহলে বা বাঁকা করতে গিয়ে ফাটল দেখা দিলে দ্রুত বদলিয়ে ফেলুন। আরেকটি ব্যাপার মাথায় রাখবেন তা হল, ব্রেক পাইপ বদলাবার পর, ব্রেক পাইপ দিয়ে সঠিকভাবে ব্রেক ফ্লুইড চাকায় যাচ্ছে কিনা তা চেক করে নিতে থামানো অবস্থায় কয়েকবার ব্রেক চাপুন। ব্রেক ফ্লুইড চাকা পর্যন্ত পৌঁছালে, তারপর গাড়ির ইঞ্জিন স্টার্ট দিন।

পায়ের পাতা গাড়ির মেঝে থেকে সম্পূর্ণ তুলবেন না:

এটি গাড়ি চালানোর অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম। গাড়ি চালানোর সময় হাতের পাশাপাশি পায়ের কাজ ও অনেক অংশে গাড়িকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। দুই পায়ের মাধ্যমে গাড়ির তিন ধরণের প্যাডেলের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে হয়। এবং ডান পায়ের মাধ্যমে একত্রে দুটো প্যাডেল নিয়ন্ত্রণ করা লাগে। এক প্যাডেল থেকে অন্য প্যাডেলে পা নেয়ার সময় পায়ের পাতা পুরোপুরিভাবে ওঠাবেন না। কারণ একটি প্যাডেলে পা থাকা অবস্থায় অন্য প্যাডেলে নেয়ার দরকার হলে যদি পায়ের পাতা গাড়ির মেঝে থেকে সম্পূর্ণ তোলা হয়, তাহলে প্যাডেলে পা নেয়ার জন্য বেশি সময় লাগে। গাড়ি এমন একটি যন্ত্র যা নিয়ন্ত্রণ করতে যদি এক ন্যানো সেকেন্ডেরও পার্থক্য হয় তাহলে দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। যেমন ধরুন আপনি এক্সিলারেটর প্যাডেল থেকে পা সরিয়ে ব্রেক প্যাডেলে রাখবেন। তখন পায়ের গোড়ালি মেঝেতে যুক্ত রেখে শুধু পায়ের সামনের দিকটা ডানে বামে সরিয়ে এক প্যাডেল থেকে অন্য প্যাডেলে চাপ দিন। এতে করে তৎক্ষণাৎ প্যাডেল পরিবর্তন করতে পারবেন এবং দুর্ঘটনাও এড়াতে পারবেন।

সঠিকভাবে সিটবেল্ট বাঁধা:

ড্রাইভিং স্কুল থেকে ক্লাস করলে জেনে থাকবেন, তারা শুধু বলে থাকে, গাড়ি চালাবার সময় সিটবেল্ট বাঁধতে হবে। কিন্তু কীভাবে সঠিক উপায়ে সিটবেল্ট বাঁধতে হবে সেটি কি কোন ড্রাইভং স্কুলে জানানো হয়? তেমন একটা না। সিটবেল্ট বাঁধা একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, এর পাশাপাশি সঠিকভাবে সিটবেল্ট বাঁধতে পারাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সঠিক ভাবে সিটবেল্ট না বাঁধলে, সিটবেল্ট কাজের সময়ে কোন উপকারেই আসবে না।

সিটবেল্ট বাঁধার সময় খেয়াল করবেন, বেল্টটি যেন আপনার বোগলের নিচে দিয়ে এবং পিঠের পেছন দিয়ে না থাকে। অনেকে সিটবেল্ট শুধু বুকের উপর দিয়ে আড়াআড়ি করে বেঁধে নেন। এটি সিটবেল্ট বাঁধার সঠিক উপায় না। সিটবেল্টের একটি অংশ থাকবে বুকের সাথে আড়াআড়ি। এবং আরেকটি অংশ থাকবে কোমরের উপর দিয়ে। এর ফলে দুর্ঘটনার সময় আপনার বুক, কোমর দুটিই রক্ষা পাবার সম্ভাবনা অনেক খানি বেড়ে যাবে।

এই চারটি ব্যাপারে ড্রাইভিং স্কুল শেখাতে ভুলে যায়। কিন্তু দুর্ঘটনা এড়াতে এগুলো জানা প্রয়োজন। আরো জানা প্রয়োজন গাড়ির সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার জন্য এখন গাড়িতে ভেইকেল ট্র্যাকিং সার্ভিস ব্যবহার করা একটি পজেটিভ ট্রেন্ডে পরিণত হচ্ছে। ভেইকেল ট্র্যাকিং সার্ভিস দিয়ে সহজেই মোবাইলে গাড়ির উপর নজরদারি করা যায় দিন রাত চব্বিশ ঘন্টা।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top