প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

পড়তে লাগবে: 4 মিনিট

করোনা মহামারী থেকে বাঁচতে গাড়ির যত্ন

সারা পৃথিবীতে প্রতিটা মানুষের এখন একটাই আতংক- করোনাভাইরাস। এই ভাইরাস মানছেনা কোন জাতি ধর্ম গোত্র এমনকি ভৌগলিক সীমারেখা। উন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ, সব খানেই এই ভাইরাসের বিস্তার এবং বেড়ে চলছে মৃত্যুর মিছিল। এখন পর্যন্ত আসেনি কোন ভ্যাক্সিন বা ট্রিটমেন্ট। ওষুধ ছাড়াই এই ভাইরাসের মোকাবেলা করে যাচ্ছে কোটি কোটি মানুষ। এই মারাত্মক ভাইরাস থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার একটাউ উপায়- ঘরে থাকা এবং দৈনন্দিন ব্যবহারের সবকিছু জীবাণুমুক্ত রাখা। দৈনন্দিন ব্যবহারের একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হচ্ছে গাড়ি। ব্যক্তিগত গাড়ি বা কমার্শিয়াল- যে গাড়িই হোক না কেন এই করোনাকালেও গাড়ি নিয়ে বের হতে হচ্ছে। সীমিত পরিসরে হলেও যাদের ব্যক্তিগত গাড়ি আছে তাদেরকে  গাড়ি নিয়ে বের হতে হচ্ছে। কারণ গণপরিবহণ তো বন্ধই, এছাড়া রাইড শেয়ারিং সার্ভিসও বন্ধ আছে। আর কমার্শিয়াল গাড়িও ব্যবহার হচ্ছে জরুরী পণ্য পরিবহণের জন্য। তাই যেসব গাড়ি ব্যবহার করতে হচ্ছেই, সেসব গাড়ির জন্য এই করোনা মহামারীর সময়ে নিতে হবে বাড়তি পরিচর্যা। কেননা করোনা ভাইরাস মানুষের হাঁচি কাশির মাধ্যমে তো বহন হয়-ই, পাশাপাশি মানুষের স্পর্শে আসা নানান সারফেসেও বেঁচে থাওতে পারে ৩ দিন পর্যন্ত! তাই গাড়ি জীবাণুমুক্ত রাখা ও পরিচর্যা করা এই সময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। চলুন দেখে নেই কীভাবে গাড়িকে করোনামুক্ত রাখা যেতে পারে।

গাড়ি প্রতিনিয়ত ধুতে হবে

গাড়ি প্রতিদিন ধুলে সুবিধা দুই রকম। প্রথমত গাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে এবং করোনামুক্ত থাকবে। গাড়ি ধোয়ার সময় অবশ্যই জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে হবে। গাড়ি প্রতিদিন ধোয়া সম্ভব যদি না হয় তাহলে অন্ততপক্ষে গাড়ি জীবাণুনাশক দিয়ে প্রতিদিন মুছতে হবে। বিশেষ করে গাড়ির যেসব অংশ ঘনঘন মানুষের স্পর্শে আসে, সেসব অংশ অবশ্যই জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। গাড়ির বাইরের অংশ তো বটেই গাড়ির ভেতরের অংশও ভালভাবে পরিষ্কার করতে হবে। পাপোশ কার্পেট সিট কভারে ধুলো জমে থাকে। তাই এগুলো প্রতিনিয়ত পরিষ্কার করলে জীবাণু থাকার সম্ভাবনা কমে যাবে।

কী দিয়ে ধুতে হবে?

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে আমরা যেসব জীবাণুনাশক ব্যবহার করি তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্লিচিং পাউডার। ব্লিচিং পাউডার পানির সাথে মিশিয়ে ঘরবাড়ি জীবাণুমুক্ত করে থাকলেও, গাড়ি পরিষ্কারের বেলায় এই ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা উচিৎ নয়। এতে করে ভাইরাস দূর হলেও, ক্ষতি হয়ে যেতে পারে আপনার মূল্যবান গাড়ির। ব্লিচিং গাড়ির রঙ এর উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে, এমনকি সংবেদনশীল অংশের রঙ নষ্টও হয়ে যেতে পারে। এমনকি চাকা বা রিম ধৌত করতেও এই ব্লিচ ব্যবহার করা উচিৎ না। গাড়ি ধৌত করতে স্যাভলন পানি ও ডিটারজেন্ট ব্যবহার করুন। আর গাড়িতে যদি কোন টাচপ্যাড -টাচস্ক্রিন থাকে তাহলে অবশ্যই সেখানে এলকোহল বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন না। এতে টাচ স্ক্রিনের ক্ষতি হতে পারে।

স্যাভলনমিশ্রিত পানি ও ডিটারজেন্ট দিয়ে গাড়ি ধৌত করতে হবে।

জানালা বন্ধ রাখুন

করোনা ভাইরাস বাতাসেও ভেসে বেড়াতে পারে। তাই সার্বক্ষণিক সুরক্ষার জন্য এবং উত্তম সুরক্ষার জন্য গাড়ির জানালা বন্ধ করে তারপর গাড়ি চালান। এখনকার সময়ে বেশিরভাগ গাড়িতেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা আছে। যেহেত এখন গ্রীষ্মকাল চলে এসেছে। জানালা খোলা রাখতে না পারলে গরম যেন না লাগে তাই গাড়ির এসি ব্যবহার করুন। এসি ব্যবহারের নজরদারি করতে ভেইক্যাল ট্র্যাকিং সার্ভিস প্রহরী ব্যবহার করতে পারেন।

বিকল্প পদ্ধতিতে দরজা খুলুন

দরজা খুলতে বাইরের হ্যান্ডেল ব্যবহার করা থেকে যতটা পারুন বিরত থাকুন। চেষ্টা করুন ভেতর থেকে দরজা খুলে দিতে। কেননা বাইরের হ্যান্ডেলে বেশি মানুষের স্পর্শ থাকে বলে বাইরের হ্যান্ডেলে জীবানু বহনের সম্ভাবনা সবচাইতে বেশি। আর স্পর্শকাতর জায়গাগুলো বারবার জীবাণুমুক্ত করুন।

গাড়ির যেসব জায়গায় হাতের স্পর্শ বেশি সেসব জায়গা বার বার জীবাণুমুক্ত করুন।

করোনা রোধে হাত ধোয়া

গাড়ি চালানোর জন্য স্টিয়ারিং ধরাই লাগবে। নইলে গাড়ি চালানো যাবে না। কিন্তু গাড়ির স্টিয়ারিং ধরার আগে অবশ্যই হাত ধুয়ে নিতে হবে। কারণ গাড়ির স্টিয়ারিং একাধিক মানুষের হাতের স্পর্শে আসে। কোনভাবে যেন স্টিয়ারিং এ জীবানু না জমে সেজন্য হাত ধুয়ে তারপর গাড়ি চালাতে হবে। গ্লাভস ব্যবহার করতে পারলে আরো ভাল। গাড়ির দরজা খুলতে, গ্লাস উঠানো নামানোর সুইচে হাত দেয়ার ক্ষেত্রেও লক্ষ্য রাখতে হবে। গাড়ি যদি ড্রাইভার দিয়ে চালনা করা হয় তাকেও এইসব বিধিনিষেধ মেনে চলতে বলতে হবে।

গাড়ির স্টিয়ারিং ধরার আহে হাত জীবানুমুক্ত রাখুন ও গ্লাভস পরুন।

গাড়িতে স্যানিটাইজার রাখতে হবে।

করোনাভাইরাস থেকে মুক্তির এখন সবচাইতে কার্যকরী উপায় হচ্ছে স্যানিটাইজার ব্যবহার। তাই গাড়িতেও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা নিশ্চিত করলে, গাড়ি করোনামুক্ত থাকার সম্ভাবনা অনেক ক্ষেত্রেই বেড়ে যাবে। যাত্রি এবং ড্রাইভার গাড়িতে ওঠার আগে এবং পরে ভালকরে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও ড্রাইভার এবং যাত্রী গাড়ির যেসব জায়গায় স্পর্শ করবেন সেসব জায়গায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার স্প্রে করা গেলে সুফল পাওয়া যাবে।

হাচি কাশিতে বাড়তি সতর্কতা

শুধু যে ঘরে বা বাহিরে তা নয়। গাড়ির ভেতরেও হাচি কাশি দেয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যাত্রীকে সবসময় মাস্ক ব্যবহারে উৎসাহী করতে হবে। গাড়িতে সবসময় টিস্যু বক্স রাখতে হবে। গাড়িতে উঠে যদি হাচি বা কাশি আসে তাহলে টিস্যু ব্যবহার করতে হবে। সভতাইতে ভাল হয় গাড়িতে উঠেই যদি হাতে টিস্যু নিয়ে রাখা যায়। আর চালককে গাড়ি চালনার সময় মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

গাড়ির ভেতরে হাঁচি কাশি দেয়ার ক্ষেত্রে রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করুন।

এখন পর্যন্ত যেহেতু কোন ভ্যাক্সিন বা ঔষধ আবিষ্কৃত হয়নি, তাই এই মহামারী থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রয়োজন বাড়তি সচেতনতা। নিজেকে এবং পরিবারের সবাইকে সুরক্ষিত রাখতে হলে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ঘরে থাকতে হবে এবং ঘর থেকেই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে চলতে হবে। চারপাশ রাখতে হবে জীবাণুমুক্ত। পাশাপাশি গাড়ি ব্যবহারেও থাকতে হবে অধিক সচেতন।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top