প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

পড়তে লাগবে: 3 মিনিট

একদিকে করোনা অন্যদিকে বেপরোয়া গাড়ি চোর চক্র !

একুশ শতকে আমাদের সামনে যে এমন মহামারী এসে পড়বে তা হয়তো কেউ কল্পনাতেও আনে নি। আমাদের যাপিত জীবনকে অস্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে মহামারী করোনা। সময়ের কাজ অসময়ে, আর অসময়ের কাজ হয়ে উঠেছে বেহিসেবী। রোজকার অফিস যাওয়া,বন্ধুদের আড্ডা,ভার্সিটিতে প্রোগ্রাম,জন্মদিন কিংবা বিয়ের আয়োজনে বড় ধরনের ছন্দপতন। সর্বোপরি জীবনের সব আয়োজনেই অস্বাভাবিকতা। কিন্তু সব কিছু থেমে থাকার পরেও পৃথিবী কিন্তু থেমে নেই আসলে। তার নিজস্ব নিয়মেই চলছে। মহামারীতে ও কিন্তু থেমে নেই খুন, হত্যা, অপহরণ! তবে পরিসংখ্যান হয়তো কিছুটা কমই বলছে। সেই সাথে থেমে নেই অন্যের সম্পদ হরণ, অর্থাৎ চুরি। কত কিছু যে চুরি হয় প্রতিদিন, সেই সাথে থেমে নেই গাড়ি চোর ।  সময় আর সুযোগ বুঝে চোর তার কাজ হাসিল করে যেকোনো সময়। এই মহামারীতে মানুষের ঘরবন্দী জীবন হয়তো অনেকটাই সুযোগ করে দিয়েছে গাড়ি চোর চক্রকে। আপনি কিংবা আমি যখন করোনার সংক্রমন কমাতে ঘরে বন্দী, সেই সুযোগে গাড়ি চোর কিন্তু থেমে নেই, সুযোগ কাজে লাগানো তে উঠে পড়ে লেগেছে, সেই সাথে বেড়েছে গাড়ি চুরি।

আমাদের চলাচলে স্থবিরতা। ঘরের ছোট খাটো কাজ আর অবসর সময় কাটছে। বাহিরে বের হওয়া খুব একটা হয়না। তাই গাড়ি ও পড়ে থাকে তার নিজ অবস্থানে। অনেক সময় জানাও হয়ে উঠেনা কি অবস্থায় আছে গাড়ি। গাড়ির সাথে দীর্ঘ এই যোগাযোগ হীনতাকেই চুরির কাজ সহজ করছে চোরদের। এমন ঘটনা ঘটছে যার গাড়ি চুরি হচ্ছে, সে নিজেই জানে না, পরে পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর জানতে পারছে।

বাংলাদেশেও লকডাউন চলাকালে প্রহরী ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং সার্ভিসের মাধ্যমে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে দুটো গাড়ি! সাথে জব্দ হয়েছে গাড়ি চোর !

করোনা যেন গাড়ি চোর চক্রের জন্য সৌভাগ্য

বড় শহর গুলোতে দেখা যায়, মার্চের মাঝামাঝি থেকে গাড়ি চুরির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে উল্লেখ্য একটি বিষয় যে এ সময় অন্যান্য অপরাধ কিছুটা কমে গিয়েছিলো,তা সত্ত্বেও কমেনি গাড়ি চুরি। নিউইয়র্ক শহরের পুলিশের তথ্য এমনটাই বলে। তেমনি লস এঞ্জেলস শহরেও অপরাধের সার্বিক দিক কমলেও বেড়েছে গাড়ি চুরি।

নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের তথ্যমতে মহামারির ২৮ দিনেই গাড়ি চুরি বেড়েছে গতবছরের তুলনায় ৫৩%। ২০১৯ এ ঠিক এই সময়ে ছিলো ৩০৩ কিন্তু ২০২০ এ তা দাড়ায় ৪৬৪ তে। আরো জানা যায় অন্যান্য অপরাধ যেমন ধর্ষণ, ডাকাতি কমেছে আগের তুলনায়। চুরির হার উদ্বেগজনক ভাবে বেড়ে উঠেছে।পুলিশ বিভাগ তা কমানোর চেষ্টা করছেন। পুলিশ বলছে যে এই মহামারিতে যারা নিজেদের সফল অপরাধী বলে মনে করছে,মনে করছে যে তাদের কেউ ধরতে পারেনি কিংবা পারবেনা, তাদের উদ্দেশ্যে বার্তা থাকবে যে” আমরা তোমার কাছেই আসছি,আমরা তোমাকেই খুঁজছি,আমরা তোমার জন্যেই অপেক্ষা করছি”।

দেশে দেশে গাড়ি চোর 

লস এঞ্জেলস এ সব ধরনের অপরাধ কমলেও গাড়ি চুরি বেড়েছে কিছুটা। লস এঞ্জেলস পুলিশ বিভাগের তথ্য মতে মার্চের ১৫ তারিখ থেকে এপ্রিলের ১১ তারিখ পর্যন্ত ১৩৯০ টি গাড়ি চুরির অভিযোগ পেয়েছে। যা একমাস আগের থেকে ১১.৩% বেশি।

যখন করোনা মহামারির কারনে ঘরে থাকার নির্দেশ এলো, আসলে সবাই তখন খুব একটা চিন্তিত ছিলো না, তাদের গাড়ি নিয়ে,ভাবতেও পারা যায় নি, এই মহামারিতে গাড়ি চোরেরা থাকবে সক্রিয় আগের তুলনায়।

অন্যান্য অনেক শহরে বেড়েছে গাড়ি চুরি। সুযোগ মতোই চোর তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। পুলিশ বলছে মার্চে ৭৫% গাড়ি চুরি বেড়েছে গত বছরের তুলনায়। ফেব্রুয়ারি ১৭ থেকে মার্চের ২৯ তারিখ পর্যন্ত লিংকন শহরেও উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে চুরি। গত বছরের তুলনায় তা প্রায় বেড়েছে ৯৯%।

তবে গাড়ি চুরির ক্ষেত্রে বিপরীত ঘটনাও ঘটেছে।অর্থাৎ সব শহরে বেপরোয়া গাড়ি চুরি বাড়েনি। কিছু শহরে আগের তুলনায় কমেছে। শিকাগো শহরের পুলিশ রিপোর্ট অনুযায়ী গাড়ি চুরি কমেছে ২৪ শতাংশ। এবং একই ভাবে ডালাস পুলিশ এর রিপোর্ট অনুযায়ী মার্চ থেকে এপ্রিলে চুরি কমেছে ১৯ শতাংশ।

সব কিছু সত্ত্বেও গাড়ি চুরির হার উদ্বেগজনক। তবে একটি জিনিস অস্পষ্ট যে, মহামারিতে কিছু শহরে চোরদের সুবিধা বাড়ছে, আবার অনেক শহরে কমে গেছে। তবে বেপরোয়া গাড়ি চুরিতে পুলিশ ও নিচ্ছে বাড়তি সতর্কতা। মহামারিতে অপরাধীদের ধরতে বিলম্ব করছেন না তারা। কিছু কিছু জায়গায় মহামারীতেও কমেছে গতবছরের তুলনায় চুরি। সর্বোপরি অপরাধ কমেছে সারা বিশ্বে। নিউইয়র্ক, লস এঞ্জেলস এবং শিকাগোতে অপরাধ কমার হার ডাবল ডিজিটে পৌঁছেছে।এপি রিপোর্ট অনুযায়ী করোনার কারণে অপরাধ এতো কমেছে যে,যা গত কয়েক বছরে দেখা যায়নি।

সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সাথে, অপরাধের খুব যোক্তিক সম্পর্ক রয়েছে, অর্থাৎ অর্থনীতি নিচের দিকে নামলে অপরাধ বেড়ে উঠে, অবশ্য এ নিয়ে বিতর্ক ও আছে। করোনার সংকট বুঝিয়ে দিয়েছে, যে অবস্থায় যেখানেই থাকুন আপনার যে কোনো সম্পদকে খুব সতর্কতার সাথে রাখুন। নিজে লকডাউনে থাকলেও আপনার সম্পদের লকডাউন কতটুকু হয় আগে ভালো ভাবে দেখে নেয়া উচিত।

কী করণীয়?

সময়ের প্রয়োজনে সব কিছু পরিবর্তিত হয়। এই করোনার সংকট আমাদের পাল্টে দিয়েছে সামাজিক প্রেক্ষাপট। নিজেদের অবস্থান থেকে সতর্ক থাকা উচিত। আপনার গাড়িটি সুরক্ষিত আছে কি না নিশ্চিত হয়ে নিন। আর গাড়ি নিয়ে চিন্তিত থাকলে আপনি নিতে পারেন প্রহরীর সেবা। প্রহরী দিবে আপনার গাড়ির নিরাপত্তার নিশ্চয়তা। সব সময় নিয়ন্ত্রন থাকবে আপনার হাতে, ট্র্যাকিং সিস্টেম পাবেন প্রহরীর সেবায়, এ ছাড়াও আপনার গাড়িতে কেউ হাত লাগালেও আপনি পাবেন বার্তা, আর আপনার গাড়ি নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ থাকবেনা। সুস্থ থেকে, নিজের গাড়িকেও নিরাপদ রাখুন।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top