প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

গাড়ির সিট পরিষ্কার রাখার ৮টি উপায়
পড়তে লাগবে: 4 মিনিট

গাড়ির সিট পরিষ্কার রাখার ৮টি উপায়!

গাড়ি ব্যবহারকারীদের সিট পরিষ্কার করে নিয়ে পোহাতে হয় নানান ধরনের ঝামেলা। কোন ধরনের ক্লিনিং সিস্টেম ব্যবহার করবেন, কোন ধরণের পণ্য ব্যবহার করা গাড়ির জন্য নিরাপদ, এমন হাজারও প্রশ্ন ঘুরপাক খায় মাথায়! এই ব্লগটিতে আমরা গাড়ির সিট পরিষ্কার রাখার ৮টি উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। নিয়ম যেমনি হোক গাড়ির সিট থাকবে সুরক্ষিত।

এটা তো নিশ্চয়ই সবারই জানা যে, গাড়ির অধিকাংশ জায়গা জুড়েই থাকে গাড়ির সিট। এই সিটেই যদি আবাস গড়ে এতো অস্বাস্থ্যকর জীবাণু, তাহলে গাড়ি ব্যবহারকারীরাই বা ভালো থাকবেন কী করে? অর্থাৎ, একটি গাড়ির কারিগরি যত্নের পাশাপাশি প্রয়োজন ব্যাক্তিগত যত্নও। যার মধ্যে বিশাল অংশ দখল করে আছে গাড়ির অভ্যন্তরীণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারটি। বুঝতেই পারছেন, আজকে কথা বলবো গাড়ির সিট পরিষ্কার রাখার বিভিন্ন উপায় নিয়েই।

গাড়ির সিট রাখুন পরিচ্ছন্ন ও ঝকঝকে!

নিয়মিত ব্যবহারে যেকোন কিছুই ময়লা হওয়া খুব স্বাভাবিক। ব্যবহারের সাথে তাল মিলিয়ে পরিচ্ছন্নতার কাজটিও করা গেলে গাড়ির ভেতরের ময়লার দুশ্চিন্তাও ঝেড়ে ফেলা যায়। গাড়ির সিটকে সবসময় ঝা চকচকে রাখতে কিংবা হঠাত খাবার বা অন্য কিছু পড়ে অপরিস্কার হয়ে গেলে কী করবেন, তার দুশ্চিন্তা এড়াতে পারেন দুই সেট সিট কভার প্রস্তুত করে। এতে একটি কোন অনাকাঙ্ক্ষিত কারনে হঠাত ময়লা হলেও, সেটি পরিবর্তন করে নতুন পরিষ্কারটি লাগিয়ে ফেলতে পারবেন। পড়তে হবে না সিট কভার ছাড়া গাড়ি ব্যবহার কিংবা ময়লা সিট কভার ব্যবহারের মতো অপ্রস্তুত অবস্থায়।

এটা তো গেলো ইমারজেন্সি অবস্থার সলিউশন। দুই সেট সিট কভার প্রস্তুত রাখা ছাড়াও গাড়ির সিট নিয়মিত পরিষ্কার রাখার আছে নানান পদ্ধতি।

১. নিয়মিত ব্রাশ

গাড়িতে ও সিটে ধুলাবালি জমবে না, তা কি হয়? ব্রাশ দিয়ে সিট ও সিটের আশেপাশের চাপা জায়গাগুলোর ধুলাবালি নিয়মিত পরিষ্কার করা জরুরি। নয়তো প্রতিবার গাড়ির দরজা খোলাতেই যে উপরি ধুলা সিটে পড়ে, সেগুলো জমতে জমতে সিট কভারের ফ্যাব্রিকে বসে যাবে। গাড়ির পরিবেশ হয়ে উঠবে অস্বাস্থ্যকর।

২. ভ্যাকুয়াম করা

প্রতি দুই সপ্তাহ পর পর সাধারনত গাড়ির সিটসহ ভেতরের অংশ ভ্যাকুয়াম করার পরামর্শ দেয়া হয়। দুই সপ্তাহ যদিওবা না পারেন, মাসে অন্তত একবার গাড়ির সিট ভ্যাকুয়াম করা আসলেই জরুরি। ভ্যাকুয়ামের মাধ্যমে গাড়ির সিট একদম ধুলাবালি মুক্ত করারও রয়েছে বিশেষ পদ্ধতি।

প্রথমে একবার সিট সব ভালোভাবে ভ্যাকুয়াম করুণ, এতে উপরিভাগের সব ময়লা দূর হয়ে যাবে। এরপর লাঠি জাতীয় কিছু দিয়ে সিটগুলোয় কয়েকবার হালকা পিটিয়ে নিন। এতে সিট কভারের ফ্যাব্রিক ও ফোমের ভেতর ঢুকে পরা ময়লা ও ধুলাও বেড়িয়ে আসবে বাইরে। এখন আবার আরেকবার ভ্যাকুয়াম করুন।

৩. অনাকাঙ্ক্ষিত দাগের সমাধান

বাইরে থেকে পায়ের সাথে লেগে আসা কাঁদা, খাবার-দাবার কিংবা তেলের দাগ, হুট করে পছন্দের সিট কভারে এমন সব অনাকাঙ্ক্ষিত দাগ লেগে যেতেই পারে। একবার লেগে গেলে যত দেরী করবেন, ততই বসে যেতে থাকবে দাগ। এসব ক্ষেত্রে চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে গাড়িতে সবসময় রাখতে পারেন ক্লিনারের ছোট কোন বোতল। ঝটপট দাগ গায়েব করে ফেলে এমন বিভিন্ন কোম্পানির লিকুইড ক্লিনার বা স্প্রে বোতল পাওয়া যায় বাজারে। তবে ভিন্ন ফ্যাব্রিকের জন্য রয়েছে ক্লিনারের উপাদানেরও ভিন্নতা। কেনার সময় খেয়াল রাখতে হবে বিষয়টা। যেন কাপড়ের দাগ তোলার ক্লিনার লেদারে, কিংবা লেদারেরটা কাপড়ে ব্যবহার না করে ফেলেন।

নতুন কোন ক্লিনার ব্যবহারের আগে অবশ্যই সহজে চোখে পড়বে না এমন কোন অংশে অল্প করে ব্যবহার করে পরীক্ষা করে নিতে হবে। যে ক্লিনারটি সিটের রঙ নষ্ট করে কিনা।

৪. ঘরোয়া উপায়ে সিটের দাগ দূর

বাজার থেকে কেনা ক্লিনার ছাড়াও ঘরে থাকা কিছু উপাদান দিয়েও পরিষ্কার করতে পারেন গাড়ির সিট। অবশ্য সিট কভারের ফ্যাব্রিকের ভিন্নতায় ঘরোয়া উপাদানেও থাকবে ভিন্নতা।

  • কাপড়ের সিট কভারঃ এক কাপ কুসুম গরম পানিতে চার ভাগের এক ভাগ পরিমাণ বেকিং সোডা মিশিয়ে সলিউশন বানিয়ে নিতে পারেন। এটি পাতলা করে সিটের দাগের উপর লাগিয়ে, কিছুক্ষন রেখে, নরম ব্রাশ দিয়ে আলতো করে ঘষে দাগ তুলতে পারেন।
  • লেদারের সিট কভারঃ তুলায় নেইল পলিশ রিমুভার কিংবা রাবিং এলকোহল লাগিয়ে লেদারের সিটে লাগা দাগে আলতো করে ঘষতে হবে। দাগ উঠে আসলে নরম তোয়ালে বা কাপড়ে অল্প গরম পানি ও ডিশওয়াশারের মিশ্রণ লাগিয়ে এলকোহল মুছে ফেলতে হবে।
  • কাপড় ও লেদারের সিট দুটোই পরিষ্কার হবে ভিনেগারেঃ দুই কাপ পরিমাণ পানিতে এক কাপ ভিনেগার ও কয়েক ফোটা ডিশওয়াশার মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে স্প্রে বোতলে ভরে রাখতে পারেন। কাপড় ও লেদার দুটোর ক্ষেত্রেই দাগ পরিস্কারে বেশ কার্যকরী এই মিশ্রণটি।

৫. কোন কিছুই বেশি ব্যবহার নয়

বেশি মানেই সবসময় ভালো নয়। পানি কিংবা লিকুইড ক্লিনার, সিট পরিস্কারে যাই ব্যবহার করুন না কেন, পরিমাণ হতে হবে স্বল্প। যেহেতু সিটের অভ্যন্তরীণ অংশ ফোম জাতীয় উপাদান দিয়ে তৈরি, তাই তরল যা কিছুই এর উপরে ব্যবহার করেন না কেন, তা নিচে টেনে নিবে। তাই তরল কোন কিছু যত বেশি ব্যবহার করবেন, তা ততই বেশি গভীরে যাবে সিটের। যা শুকাবেও না সহজে। একসময় ভেতরে স্যাতস্যাতে থাকতে থাকতে ছড়াবে দুর্গন্ধ। ব্যবহার করতে পারেন ‘ড্রাই ফোম ক্লিনার’ও। এতে পানির পরিমাণ থাকে খুবই কম।

৬. বাদ যাবে না কোন অংশ

শুধু সিটের উপরের অংশ পরিষ্কার করেই কিন্তু শেষ না। সিটের পেছনের অংশ, সিট বেল্ট, সিট ব্যাক স্টোরেজ, এবং সিটের নিচের অংশ ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে নিয়মিত। নয়তো ওইসব যায়গায় ময়লা ও জীবাণু আঁটকে থাকলে, শুধুমাত্র সিট কভার পরিষ্কার করে লাভ হবে না কোনই।

৭. লেদার সিটের বিশেষ যত্ন

লেদারের সিট কভার আপনার গাড়িকে দেয় প্রিমিয়াম লুক। দামটাও হয় অন্যান্য সিট কভার থেকে একটু বেশি। এর যত্নও একটু ভিন্ন হওয়াটাই তো স্বাভাবিক, তাই না? লেদারের সিট কভার পরিস্কারের পাশাপাশি একে নরম রাখতে, ফেটে যাওয়া রোধ করতে ও রঙের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে ব্যবহার করতে পারেন ভালো কোম্পানির লেদার ক্লিনার ও কন্ডিশনার।

৮. সিট প্রটেক্টর

ধরুন এমন কোন ধুলাবালিযুক্ত যায়গায় যাবেন যেখানে গাড়ির সিট ময়লা হওয়া কোনভাবেই আটকাতে পারবেন না। অথবা ছোট বাচ্চা নিয়ে চলাচল করবেন, যেখানে বাচ্চা খাবার ফেলে ময়লা করতেই পারে। এমন অবস্থায় কীভাবে বাঁচাবেন গাড়ির সিট? উপায় হচ্ছে সিট প্রোটেক্টর। গাড়ির সিটে খুব সহজে লাগানো ও খুলে ফেলা যায়, এবং যায় ধোয়াও।

গাড়ির বডিতে কোন আঁচর বা দাগ লাগলে মালিকের কপালে ভাজ পড়ে। কারিগরি ত্রুটি হলে তো কথাই নেই, দুশ্চিন্তায়ই ঘুম হারাম। অথচ গাড়ির ভেতরের যত্নতে খুব কমই সময় দেয়া হয় সেই তুলনায়। গাড়িকে ভেতর বাইরে সব দিক দিয়ে ভালো রাখতে গাড়ির বহিরাংশ ও কারিগরি দিকের পাশাপাশি সমান গুরুত্ব দিতে হবে গাড়ির অভ্যন্তরীণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকেও। এতে গাড়ির সাথে ভালো থাকবেন গাড়ির ব্যবহারকারীরাও। তো এই ছিল গাড়ির সিট পরিষ্কার রাখার ৮টি উপায় আশাকরি আপনাদের কাজে আসবে। গাড়ির ইন্টেরিয়র পরিষ্কার করা নিয়ে সহজ ৭টি সমাধান উল্লেখ করে আমরা একটি আর্টিকেল পোস্ট করে জানতে এই লিংক ভিজিট করে পোস্টটি পড়তে পারেন।

শখের গাড়ির সকল তথ্য অ্যাপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করতে এবং গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী ব্যবহার করতে পারেন। এটি একটি ভেহিক্যাল ট্র্যাকার সার্ভিস (VTS) ডিভাইস যা সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করেছে পাই ল্যাবস বাংলাদেশ লিমিটেড। প্রহরী – ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং সিস্টেমে রয়েছে অ্যাপের মাধ্যমে ইঞ্জিন লক/আনলক করার সুবিধা, গাড়ির লাইভ ট্র্যাকিং আপডেট দেখা, এবং ট্রাভেল হিস্টোরি চেক করা সহ আরও অনেক সুবিধা বিস্তারিত জানতে দেখুন প্রহরী প্যাকেজ সমূহ।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top