প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার

পড়তে লাগবে: 4 মিনিট

সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরনো গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে যে ১১টি তথ্য না জানলেই নয়!

অনেকেই সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরনো গাড়ি ক্রয় করে থাকেন। সেক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খেয়াল করা উচিত। আর তা না করলে লাভের চেয়ে লোকসানই বেশি হবে! আপনারা যারা স্বল্প বাজেটের মধ্যে একটি সেকেন্ড হ্যান্ড কার কিনতে চান। এবং সেক্ষেত্রে যাতে ভাল গাড়িটিই কিনতে পারেন, তাদের জন্যই মূলত আজকের লেখা। আসুন জেনে নিই পুরাতন গাড়ি কেনার সময় কোন কোন বিষয়গুলো অবশ্যই পরীক্ষা করে দেখতে হবে।

গাড়ির ফিটনেস ঠিক আছে কিনা 

যে গাড়িটি কিনবেন বলে ঠিক করেছেন, সেটার ফিটনেস ঠিক আছে কিনা তা ভালভাবে পরখ করা দরকার। ভালভাবে গাড়ি পর্যবেক্ষণ করার সাথে সাথে তা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখুন। এবং পারলে মালিকের কাছ থেকে ফিটনেস সার্টিফিকেট চেয়ে দেখে নিন। গাড়ির  আকার চেক করতে গাড়িটির গ্রাউন্ডে অবস্থান ভালভাবে লক্ষ্য করে দেখুন। গাড়ির পেইন্ট ভালোভাবে পরীক্ষা করুন। দেখুন কোথাও কোনরূপ ধুলা-ময়লা, মরিচা অথবা দাগ আছে কিনা। এছাড়াও গাড়ির ট্রাঙ্ক ভাল অবস্থায় আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা উচিত। এতে কোন ধরণের ছিদ্র কিংবা মরিচা থাকলে তা দিয়ে পানি পড়তে পারে।

গাড়ির টায়ার চেক করুন

গাড়ির টায়ার ভালভাবে পরীক্ষা করে দেখুন যে, কোন সমস্যা আছে কিনা। টায়ারগুলো সব একই রকম ভাবে ব্যবহার হওয়ার কথা। ব্যাড এলাইনমেন্ট কিংবা কোন রকম ড্যামেজ হয়ে আছে কিনা তা দেখা দরকার। এছাড়াও টাইমিং বেল্ট চেক করাটা জরুরী। এটা ইঞ্জিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বেল্ট। এবং এটা পরিবর্তন করতে গেলে অনেক বেশি খরচ হয়। সুতরাং সবদিক ভেবে মনোযোগের সাথে এই দিকগুলো খেয়াল করা উচিত।

ফ্রেম ড্যামেজ আছে কিনা পরীক্ষা করুন  

কখনোই কোন ফ্রেম ড্যামেজ কার কিনবেন না। গাড়ির  নীচ-দিকটা পরীক্ষা করে দেখুন যে, কোথাও কোন মরিচা ধরেছে কিনা। কোনরূপ ছিদ্র আছে কিনা তাও খেয়াল করুন। এছাড়া গাড়ির নিষ্কাশন ব্যবস্থাও পরীক্ষা করা উচিত। এক্ষেত্রে গাড়ি চালিয়ে দেখুন  সাদা বাষ্প বের হয় কিনা। শীতকাল বাদে এই বাষ্প বের হলে তা খারাপ লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়। আর এর ফলে গাড়ি ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনাটাও কিন্তু বেড়ে যায়!

গাড়ির হুডের নিচে পরীক্ষা করে দেখুন  

যে সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়িটি কিনতে যাচ্ছেন সেটার সবকিছু পর্যবেক্ষণ করেই কেনা উচিত। সেক্ষেত্রে কারের হুডের নিচে সতর্কতার সাথে চেক করুন। ভাল করে দেখুন সেখানে কোনকিছু নষ্ট হয়ে কিংবা জং ধরে পড়ে আছে কিনা। এছাড়াও পাইপ এবং বেল্টগুলো চেক করে  দেখা দরকার। এগুলোতে ক্র্যাক থাকা মানে সেগুলো ত্রুটিপূর্ণ। আর রেডিয়েটর হোস কোনভাবেই নরম হওয়া উচিত নয়। মূলত এগুলো দেখেই বোঝা যাবে, গাড়িটি সঠিকভাবে পরিচর্যা করা হয়েছিল কিনা।

মিরর, হেডলাইট, উইপার ঠিকঠাক আছে কিনা

গাড়ির মিরর, হেডলাইট, উইপার ইত্যাদি ঠিকঠাক আছে কিনা তা দেখা দরকার। অস্বচ্ছ মিরর, ভাঙ্গা হেডলাইট, অকেজো উইপার আপনার কোন কাজে আসবে না। কার কেনার সময় এগুলো ভালভাবে দেখে নেওয়া প্রয়োজন। অন্যান্য বিষয়গুলো যেগুলো গাড়ি স্থির অবস্থায় ব্যবহার করা হয় তাও পরীক্ষা করুন। যেমন-সেন্সরস যেগুলো  গাড়ি পার্কিংয়ে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও ব্যাক পার্কিং  ক্যামেরা, সিডি, রেডিও ইত্যাদিও পরীক্ষা করে দেখুন।

গাড়ির ইন্টেরিয়র ঠিক আছে তো

পুরাতন গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে ছোটখাটো বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করাটা জরুরী। মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করুন গাড়ির ইন্টেরিয়র ঠিকঠাক আছে কিনা। ভালভাবে ভিতরের সবকিছু খেয়াল করে দেখুন। ভিতরকার সিটগুলোর অবস্থা পরীক্ষা করুন। দেখুন কোথাও  কোনও কাটা-ছেঁড়া কিংবা দাগ আছে কিনা। এছাড়াও এয়ারকন্ডিশনও অন করে চেক করে দেখুন। সবকিছু  ঠিকভাবে চলে কিনা তা জানা দরকার।

কোনরূপ যান্ত্রিক সমস্যা আছে কিনা

যে গাড়িটি কিনতে যাচ্ছেন সেটার কোন ধরণের যান্ত্রিক গোলযোগ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। গাড়ির ইঞ্জিন সঠিকভাবে কাজ করে কিনা, এতে কোন রকম ক্ষয় বা লিক আছে কিনা ইত্যাদি দেখুন। যদি ইঞ্জিন ব্লকে বাদামি তেলের দাগ দেখেন তাহলে বুঝবেন যে, গাস্কেটে  লিক  আছে। আর তা ভবিষ্যতে  রিপেয়ার  করতে গেলে অনেক বেশি খরচ পড়বে।

গাড়ি চালানো অবস্থায় পরীক্ষা করা

সেকেন্ড হ্যান্ড কার পরীক্ষা করার সবচেয়ে ভাল অপশন হচ্ছে সেটা চালিয়ে দেখা। কেনার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগেই গাড়িটি চালিয়ে দেখুন। হার্ড ব্রেক করে ব্রেকগুলো পরীক্ষা করুন। ভালভাবে ব্রেকের কন্ট্রোল চেক করাটা অনেক জরুরি। সেক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখুন গাড়িটি ৯০ ডিগ্রী  টার্ন  নেবার সময় কোনরূপ ধাতব বস্তুর ঝাকাঝাকি, কাঁপাকাঁপি কিংবা কোন ধরণের শব্দ করে কিনা। তবে এটা অবশ্য লো স্পিডে পরীক্ষা করে দেখতে পারলে ভাল হয়।

ডিপস্টিক টেনে চেক করুন

ইঞ্জিনের অয়েল ফিলার ক্যাপ সরিয়ে ভেতরটা দেখতে চেষ্টা করুন। ভিতরে যদি ফোম জাতীয় কোন কিছু দেখা যায়। তাহলে সেই  গাড়ি কেনাই ঠিক হবে না। এছাড়াও ডিপস্টিক টেনে চেক করে দেখুন। ভেতরের ফ্লুয়িড দেখতে অনেকটা পিংক বা লাল কালারের হওয়ার কথা। কিংবা পুরনো হলে তা হয়তো কালো হতে পারে। কিন্তু এটা যদি পোড়া বা পোড়া  ঘ্রাণ যুক্ত হয়ে থাকে। তাহলে বুঝবেন এটাতে কোন ধরণের সমস্যা আছে।

গাড়ির সার্ভিসিং হিস্টোরি জানুন

মালিকের কাছে থেকে গাড়ির সার্ভিসিং হিস্টোরি সম্পর্কে তথ্য জানুন। বিশেষ করে এটার পারফরমেন্স, রিপেয়ার ইত্যাদি সম্পর্কে অবগত হোন। আর কারের যেসব পার্টে সমস্যা আছে কিংবা যা রিপ্লেস করতে হতে পারে। তা একটি নোটবুকে লিস্ট করে লিখে রাখুন। এবং এই পার্টসগুলো ঠিক বা পরিবর্তন করতে কতটা খরচ হবে, তার একটা অনুমান থাকলে ভাল হয়। সেক্ষেত্রে কোন পরিচিত অটোপার্টসের দোকানে ফোন করে তা জেনে নিতে পারেন। পরবর্তীতে খুব সহজেই সেই অনুযায়ী গাড়ির দাম নির্ধারণ করতে পারবেন।

অভিজ্ঞ কাউকে সাথে রাখুন

সবকিছু জেনে বুঝে-শুনে পুরনো গাড়ি কেনা উচিত। এক্ষেত্রে পারলে গাড়ি সম্পর্কে ভালো আইডিয়া আছে, এমন কোন অভিজ্ঞ ব্যক্তির সাহায্য নিন। গাড়ি কেনার সময় তাকে সাথে রাখুন। আরেকটা বিষয় খেয়াল করুন তা হলো, গাড়ির দামের ক্ষেত্রে স্টিকার প্রাইস দিবেন না। মূলত একটা পুরাতন গাড়ি বুঝেশুনে সমঝোতা করে কেনাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। আপনার বাজেটের মধ্যেই দামাদামি করে গাড়িটি কিনে ফেলতে চেষ্টা করুন।

আপনার উপস্থিত বুদ্ধিমত্তা আর বিচক্ষণতার মাধ্যমে পুরাতন গাড়ি কিনেও যথেষ্ট লাভবান হতে পারেন। আর বাজেট করে গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের খরচ আগে থেকে হিসেব করে নিলে অনেকটাই সুবিধা হবে। এছাড়াও আপনার গাড়িটির নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার কথা ভেবে ভিটিএস প্রযুক্তির সাহায্য নিন। এবং সদ্য কেনা গাড়িটি নিয়ে নিরাপদ হোক আপনার আগামীর পথচলা।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top